লন্ডন : ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাস। অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড অ্যাশেজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। পঞ্চম তথা শেষ দিনের খেলা চলছে। ম্যাচ ড্রয়ের দিকে এগোচ্ছে। কিন্তু, এইসব সময়েই একধিকবার ভেল্কি দেখিয়েছেন ওয়ার্ন। অবাস্তবকে বাস্তব করে তুলেছেন। সেবারও তাই হয়েছে।


প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকার পর হাতে নয় উইকেট নিয়ে লড়াই চালাচ্ছে ব্রিটিশরা। কিন্তু, সেই সময়ই ওয়ার্নের একটা স্পেল ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভাবনীয় জয় ছিনিয়ে আনেন কিংবদন্তি স্পিনার। ইংল্যান্ডকে ১২৯ রানে গুটিয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়া। শেষ দিনে চারটি উইকেট তুলে নেন ওয়ার্ন এবং ছয় উইকেটে ম্যাচে জয়ী হয় অজিরা।


অ্যাশেজের দ্বৈরথ হোক বা অন্য কোনও টুর্নামেন্টে প্রতিযোগিতা। বারবার ইংল্যান্ডকে চাপে ফেলেছে তাঁর জাদুকরি স্পেল। এহেন কিংবদন্তির প্রয়াণে ট্যুইটারে শোকপ্রকাশ ইংল্যান্ড ক্রিকেটের। ট্যুইটারের তারা লিখল, সর্বকালীন সেরাদের অন্যতম। একজন কিংবদন্তি ও প্রতিভাবান। তুমি ক্রিকেটকে বদলে দিয়েছিলে। শান্তিতে থাক। 


এহেন শেন ওয়ার্ন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বলে সূত্রের খবর। ওয়ার্নের ব্যবসায়িক দিক দেখাশোনা করত যে সংস্থা, তাদের তরফে ছোট্ট বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে, তাইল্যান্ডের সামুইয়ের কো-তে ছিলেন কিংবদন্তি। সেখানেই তিনি মারা গিয়েছেন।


অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৪৫ টেস্টে ৭০৮ উইকেট নিয়েছেন ওয়ার্ন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। শ্রীলঙ্কার মুথাইয়া মুরলীধরনের পরেই। মুরলীধরন টেস্টে ৮০০ উইকেট নিয়েছেন। সেরা বোলিং ৭১ রানের বিনিময়ে ৮ উইকেট। একটা সময় বিশ্বকে শাসন করেছেন তিন স্পিনার। মুরলী, ওয়ার্ন ও ভারতের অনিল কুম্বলে। তিনজনের মধ্যে কে বিশ্বের সেরা, তা নিয়ে তর্কের ঝড়ও উঠেছে।


অনেকেই মনে করেন, শতাব্দীর সেরা বলটি বেরিয়েছিল ওয়ার্নের হাত থেকে। যে ডেলিভারিতে তিনি মাইক গ্যাটিংকে বোল্ড করেছিলেন। টেস্টের পাশাপাশি ওয়ান ডে-তেও একইরকম সাফল্য। ১৯৪টি ওয়ান ডে ম্যাচ খেলে ২৯৩ উইকেট নিয়েছিলেন ওয়ার্ন। ওয়ান ডে-তে তাঁর সেরা বোলিং ৩৩ রানে ৫ উইকেট। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০১টি উইকেট নিয়েছেন লেগস্পিনার।