কলকাতা: টোকিও অলিম্পিক্সে আশা জাগিয়েও স্বপ্নপূরণ করতে পারেননি প্রণতি নায়েক (Pranati Nayek)। এবার বাংলার জিমন্যাস্টিক্সে নতুন আশার সঞ্চার করলেন সৌম্যশ্রী দাস (Soumyashree Das)। আন্তর্জাতিক মঞ্চে পদক জিতলেন হুগলির উত্তরপাড়ার জিমন্যাস্ট। সৌম্যশ্রী এখন থেকেই পাখির চোখ করতে শুরু করেছেন প্যারিস অলিম্পিক্সকে। আরও কঠোর পরিশ্রম করার জন্য কোমর বাঁধছেন।
আর সেই লড়াইয়ে বাংলার জিমন্যাস্টের সবচেয়ে বড় প্রেরণা এক বাঙালি তারকাই। দীপা কর্মকার (Dipa Karmakar)। বড় দিদির মতো যিনি সৌম্যশ্রীকে পরামর্শ দেন। আগলে রাখেন।
সেন্ট্রাল সাউথ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ব্যালান্সিং বিমে ব্রোঞ্জ জিতে ফিরেছেন সৌম্যশ্রী। বাংলাদেশের মীরপুরে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় দলগতভাবে ভারত দ্বিতীয় হয়ে রুপো জিতেছে। ভারতীয় দলে চারজন ছিলেন। করিশ্মা রাজপুত, পাপিয়া দাস ও সুরভির সঙ্গে ছিলেন বাংলার সৌম্যশ্রী। মীরপুর থেকে উত্তরপাড়ায় ফিরে এবিপি লাইভকে ২১ বছর বয়সী জিমন্যাস্ট বললেন, 'বিশ্ব জিমন্যাস্টিক্সে আমার প্রিয় ছিলেন রাশিয়ার আলিয়া মুস্তাফিনা। পরে সিমোন বাইলসের ভক্ত হয়ে পড়ি। আর ভারতীয় জিমন্যাস্টদের মধ্যে আমার আদর্শ দীপা কর্মকার। সময় পেলেই সিমোন বাইলস-সহ বিভিন্ন জিমন্যাস্টের পারফরম্যান্স দেখি।'
দীপার সঙ্গে কথা হয়? সৌম্যশ্রী বলছেন, 'জাতীয় শিবিরে একসঙ্গে ছিলাম। একসঙ্গে অনুশীলন করি। দীপাদি প্রচুর পরামর্শ দেয়। বলে কঠিন পরিশ্রমের বিকল্প হয় না। দীপাদি সব সময় বলে, পরিশ্রম করে গেলে ফল পাবেই। প্র্যাক্টিসে জোর দেয় খুব। আমিও দিদির কথায় খুব উদ্বুদ্ধ হই। মীরপুরে পদক জেতার পর দীপাদি অভিনন্দন জানিয়েছে।' তবে দীপার মতো ভল্ট নয়, সৌম্যশ্রীর শক্তি ব্যালান্সিং বিম। সৌম্যশ্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রণতি নায়েকও।
উত্তরপাড়ার দোলতলায় বাড়ি। সৌম্যশ্রীর বাবা সৌরভ ও মা মৌপিয়া দুজনই জিমন্যাস্টিক্স কোচিং করাতেন। 'উত্তরপাড়ায় পাতকুয়োতলায় অ্যাকাডেমিতে প্রথম জিমন্যাস্টিক্স দেখে ভাল লেগে যায়। তারপরই ভর্তি হই উত্তরপাড়া জিমন্যাসিয়ামে। সেখানেই জিমন্যাস্টিক্স শুরু,' বলছিলেন সৌম্যশ্রী। যোগ করলেন, 'বাবা হাওড়ায় জিমন্যাস্টিক্স শেখান। বাবার কাছেই হাতেখড়ি। তারপর সাই (স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া)-তে ভর্তি হই। শেফালি মল্লিকের কাছে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করি। তারপর রঞ্জিৎ দাসের কাছে প্রশিক্ষণ নিই। উনি বদলি হয়ে যাওয়ার পর এখন অভিষেক শর্মা আমার কোচ।'
সৌম্যশ্রী চিত্তরঞ্জন কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতক। এছাড়া নাচে আগ্রহ রয়েছে। ভারতনাট্যম ও রবীন্দ্র নৃত্যতে সপ্তম বর্ষ সম্পূর্ণ করেছেন। তবে ২১ বছরের তরুণীর লক্ষ্য জিমন্যাস্টিক্সে দেশের প্রতিনিধিত্ব করে আরও পদক জেতা। বলছেন, 'পরের বছর কমনওয়েলথ গেমস, এশিয়ান গেমস, এশীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ আছে। তার আগে সিনিয়রদের জাতীয় শিবির। ছোট থেকে স্বপ্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা। অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করতে চাই।'