মুম্বই: দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর ভারতের ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ করা হল রবি শাস্ত্রীকে। গত সোমবার কোচ পদে নিয়োগের জন্য আবেদনকারীদের ইন্টারভিউ নেয় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সচিন তেন্ডুলকর ও ভিভিএস লক্ষ্মণকে নিয়ে গঠিত বোর্ডের তিন সদস্যের ক্রিকেট পরামর্শদাতা কমিটি (সিএসি)। ইন্টারভিউ নেওয়ার পর সৌরভ জানান, অধিনায়ক কোহলির সঙ্গে আলোচনা করার পরই কোচের নাম ঘোষণা করা হবে। কিন্তু এর পর থেকেই দ্রুত পটবদল ঘটতে থাকে। মঙ্গলবার সকালে বোর্ডের প্রশাসকদের কমিটি সন্ধের মধ্যেই কোচের নাম ঘোষণার নির্দেশ দেয়। সেই মতো সিএসি কোহলির সঙ্গে টেলি কনফারেন্সে কথা বলেন এবং রাতে নতুন কোচ হিসেবে শাস্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হয়। শাস্ত্রীকে হেড কোচ করা হলেও তাঁর সঙ্গে বোলিং কোচ হিসেবে জাহির খান এবং বিদেশে ব্যাটিং কোচ হিসেবে রাহুল দ্রাবিড়কে আনা হয়েছে।
ঘটনাক্রম থেকেই স্পষ্ট, হেড কোচের নাম ঘোষণা সিএসি-র পক্ষে খুব একটা সহজ সিদ্ধান্ত ছিল না। জানা গেছে, কোচ পদের জন্য শাস্ত্রীর সঙ্গে বীরেন্দ্র সহবাগের কড়া টক্কর চলছিল। কিন্তু কোহলি জোরালভাবে শাস্ত্রীর পক্ষেই সওয়াল করেন। টিম ডিরেক্টর হিসেবে শাস্ত্রীর সাফল্যের কথা তুলে ধরেন কোহলি। অধিনায়কের সমর্থনেই বাজিমাত্ করেন শাস্ত্রী।
সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্র উল্লেখ করে জানিয়েছে, ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভের শাস্ত্রী সম্পর্কে আপত্তি ছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত তাঁকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাজি করান সচিন। সচিন যুক্তি দেন যে, এক্ষেত্রে দলের ইচ্ছেকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
তবে জানা গেছে, শাস্ত্রী তাঁর পছন্দের বোলিং কোচ ভরত অরুণকে পাননি। সৌরভ এক্ষেত্রে জাহির খানকে বোলিং কোচ করার পক্ষে সওয়াল করেন। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিসিআইয়ের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, জাহিরকে বোলিং কোচ করার ব্যাপারে সহমত তৈরির পরই সৌরভ শাস্ত্রীকে মেনে নিতে রাজি হন।
আসলে জাহির খান এমন একটা নাম, যাঁর বিরোধিতা করাটা খুবই কঠিন। খেলোয়াড় হিসেবে তাঁর সাফল্য, খেলা সম্পর্কে ধারণা এবং দলের বর্তমান খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্কের কারণে জাহিরের নামে আপত্তি তোলাটা খুবই কঠিন ছিল বলে ওই সূত্র জানিয়েছে।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের সময় বোর্ডের জিএম (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) এমভি শ্রীধর এবং সিইও রাহুল জোহরি জাহিরের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। ধারাভাষ্যকার হিসেবে সেখানে গিয়েছিলেন জাহির।
শাস্ত্রী ড্রেসিংরুমে ফিরলেও অনেকেই সংশয়ী যে, হয়ত আগের মতো সেই অপ্রতিহত ক্ষমতা তাঁর থাকবে না।
হর্ষ ভোগলের মতো বিশেষজ্ঞ তো ইতিমধ্যেই ট্যুইটের মাধ্যমে বলেছেন, সিএসি কার্যত শাস্ত্রীর ডানা ছেঁটে দিয়েছে।