কলকাতা: মহিলাদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে ভারতের বিদায়। ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজ চলাকালীনই প্রয়াত উমেশ যাদবের বাবা। খেলার দুনিয়ার সারাদিনের সব খবরের ঝলক।


ভারতের বিদায়


টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারতের লড়াইটা সহজ ছিল না। হেভিওয়েট প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে শুরু থেকে চাপে থাকার কথা ছিল। টিম ইন্ডিয়ার সেই চাপ বাড়িয়ে দেন বেথ মুনি ও মেগ ল্যানিং। দুই অজি তারকার ঝোড়ো ব্যাটিং ভারতীয় বোলিংকে ছারখার করে দিয়েছিল। প্রথমে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া তুলেছিল ১৭২/৪।


তবু পাল্টা লড়াই করে ভারত। ১৭৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি টিম ইন্ডিয়ার। মাত্র ২৮ রানে ৩ উইকেট চলে যায়। সেখান থেকে পাল্টা লড়াই শুরু করেন জেমাইমা রড্রিগেজ ও হরমনপ্রীত কৌর। ২৪ বলে ৪৩ রান করে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জেমাইমা। তবে হাল ছাড়েননি হরমনপ্রীত। ৩২ বলে হাফসেঞ্চুরি সম্পূর্ণ করেন হরমনপ্রীত।


তবে ৩২ বলে যখন ৪০ রান বাকি, তখন রান আউট হয়ে যান হরমনপ্রীত। তারপরই ফিরে যান রিচা ঘোষও (১৭ বলে ১৪ রান)। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ১৬৭/৮ স্কোরে আটকে গেল ভারত। অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৫ রানে হেরে স্বপ্নভঙ্গ ভারতের।


রান আউট বিতর্ক


একটা রান আউট গোটা ম্যাচের রং পাল্টে দিয়ে গিয়েছে। ৩২ বলে তখন ম্যাচ জিততে ৪০ রান চাই ভারতের। দু রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে যান হরমনপ্রীত কৌর (Harmanpreet Kaur)। রিপ্লেতে দেখা যায়, তিনি ,ব্যাট ক্রিজে ঢোকানোর চেষ্টাই করেননি।


আর সেই দৃশ্য দেখে বিরক্ত নাসের হুসেন। ধারাভাষ্য দেওয়ার ফাঁকে ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেন, এ তো পুরো স্কুলের ছাত্রীদের মতো ভুল!


ম্যাচের পর হরমনপ্রীতকে নাসের হুসেনের মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয়। হরমনপ্রীত বলেন, 'উনি বলেছেন এ কথা! হতে পারে, হয়তো ওঁর ওটা মনে হয়েছে। তবে ক্রিকেটে এরকম হয়। আমিও এ জিনিস দেখেছি, যখন দুরান নিতে গিয়ে ব্যাটারের ব্যাট আটকে যায়। তবে আমি বলব এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। তবে আমরা ফাইনালে যেতে পারিনি কারণ আমরা ফিল্ডিং, ব্যাটিং, বোলিং কিছুই ভাল করিনি।' যোগ করেন, 'আমি বলব এটা ভুল। তবে স্কুল ছাত্রীদের মতো নয়। কারণ আমরা সকলেই পরিণত। যেটা উনি বলেছেন, সেটা ওঁর ব্যক্তিগত মত। তবে আমি এভাবে দেখি না।'


ডার্বির উত্তাপ


শনিবার ভারতীয় ফুটবলের মহারণ। আইএসএলে (ISL) মুখোমুখি দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এটিকে মোহনবাগান (ATK MB) ও ইস্টবেঙ্গল এফসি (East Bengal FC)। যত এগিয়ে আসছে কলকাতা ডার্বি, তত শহরের তাপমাত্রাও যেন বাড়ছে।


ম্যাচের অনলাইন টিকিট আগেই বিক্রি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে কাউন্টারের টিকিটও বিক্রি শুরু হয়ে গেল। টিকিটের চাহিদা তুঙ্গে। চলতি ইন্ডিয়ান সুপার লিগের প্রথম ডার্বিতে গ্যালারিতে সাড়ে বাষট্টি হাজার দর্শক উপস্থিত ছিলেন। এ বার সেই রেকর্ডও ছাড়িয়ে যেতে পারে। 


ডার্বিতে নামার আগের ম্যাচে দুই দলই দুর্দান্ত জয় পেয়েছে। ইস্টবেঙ্গল এফসি হারিয়েছে লিগ শিল্ড চ্যাম্পিয়ন মুম্বই সিটি এফসি-কে এবং এটিকে মোহনবাগান হারিয়েছে কেরল ব্লাস্টার্স এফসি-কে। ফলে দুই দলই এখন ছন্দে রয়েছে। ফিরতি ডার্বিতে একে অপরের বিরুদ্ধে জয় পাওয়ার জন্য মরিয়া। ইস্টবেঙ্গলের কাছে এটা বরাবরের মতোই মর্যাদার লড়াই।


টানা সাতটি মুখোমুখি লড়াইয়ে তারা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে হেরেছে। অন্যদিকে এটিকে মোহনবাগানের কাছে শুধু চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর আধিপত্য বজায় রাখার লড়াই নয়, তিন নম্বরে থেকে প্লে অফের প্রথম ম্যাচ ঘরের মাঠে খেলার চ্যালেঞ্জও। এই ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট পেলে তবেই তা সম্ভব হবে। তাই এই ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।


বিতর্কে বঙ্গ ক্রিকেট


রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy) ফাইনালে একপেশেভাবে হেরেছে বাংলা। সৌরাষ্ট্রের কাছে নিজেদের ঘরের মাঠে ৯ উইকেটে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে মনোজ তিওয়ারিদের। লজ্জার যে পরাজয়ের পর বঙ্গ ক্রিকেটে শ্মশানের নিস্তব্ধতা থাকার কথা। এমনকী, কোচ ও অধিনায়কের সঙ্গে পারফরম্যান্স কাটাছেঁড়া শুরু করে দেওয়ার কথা বাংলার ক্রিকেট প্রশাসকদের।


কোথায় কী! সিএবি কর্তারা নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্যে ব্যস্ত। এমনই সেই দ্বন্দ্বের আঁচ যে, ময়দান রীতিমতো সরগরম। ঝামেলা মেটাতে আসরে নামতে হয় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে (Sourav Ganguly)।


লড়াইয়ের একদিকে স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। অন্যদিকে অভিষেক ডালমিয়া। স্নেহাশিস বর্তমান সিএবি প্রেসিডেন্ট। অভিষেক প্রাক্তন। অভিষেকের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন স্নেহাশিস। দুজনের আরও একটি পরিচয় হল, স্নেহাশিস জাতীয় দলের কিংবদন্তি অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাদা। আর অভিষেক প্রবাদপ্রতিম ক্রিকেট প্রশাসক জগমোহন ডালমিয়ার পুত্র।


ঘটনার সূত্রপাত রঞ্জি চ্যাম্পিয়নদের হাতে ট্রফি তুলে দেওয়া নিয়ে। রবিবার বাংলাকে ৯ উইকেটে হারিয়ে দিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন হয় সৌরাষ্ট্র। বিজয়ী অধিনায়ক জয়দেব উনাদকটের হাতে ট্রফি কে তুলে দেবেন, তা নিয়েই বিতর্ক। প্রথমে ঠিক ছিল বিজয়ী দলের হাতে ট্রফি তুলে দেবেন বোর্ডের যুগ্ম-সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া। কিন্তু খেলা নির্ধারিত সময়ের আগে শেষ হয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যে, সাইকিয়া কলকাতায় পৌঁছতে পারবেন না। তখন তিনি বোর্ডের সচিব জয় শাহকে ফোন করেন। জয় জানতে চান, সৌরভ শহরে আছেন কি না। সেক্ষেত্রে সৌরভের হাত দিয়ে ট্রফি তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু সৌরভ না থাকায় বোর্ডের প্রতিনিধি হিসাবে ট্রফি তুলে দেওয়ার কথা বলা হয় আইপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য অভিষেককে।


অন্য দিকে, একটি মহল থেকে স্নেহাশিসকে বিজয়ী দলের হাতে ট্রফি তুলে দেওয়ার জন্য তৈরি থাকার কথা বলা হয়। ম্যাচ শেষ হতেই স্নেহাশিস মাঠে যান। কিন্তু অভিষেক ট্রফি তুলে দেওয়ায় আর তিনি থাকতে চাননি। পরে যদিও রানার্স দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন স্নেহাশিস। কিন্তু সিএবি সূত্রে খবর, ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। ঘনিষ্ঠ মহলে জানান, এভাবে অপমানিত হতে হবে ভাবেননি তিনি।


প্রয়াত উমেশের বাবা


বাবাকে হারালেন উমেশ যাদব (Umesh Yadav)। ভারতীয় ক্রিকেট দলের (Indian Cricket Team) তারকা পেসার উমেশ যাদবের (Umesh Yadav) বাবা তিলক যাদব (Tilak Yadav) প্রয়াত হলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। উত্তর প্রদেশের একটি কয়লা খাদানে কাজ করতেন উমেশ যাদবের বাবা। বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তারকা পেসারের বাবা। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি উমেশের (Umesh Yadav) বাবাকে। উল্লেখ্য, বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির ভারতীয় স্কোয়াডে রয়েছেন উমেশ। যদিও এখনও পর্যন্ত প্রথম ২ টেস্টে সুযোগ পাননি উমেশ।