কলকাতা: সেঞ্চুরিয়নে বক্সিং ডে টেস্টে মঙ্গলবার মুখোমুখি ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। রেফারিংয়ের মানোন্নয়নে বৈঠক এআইএফএফ প্রেসিডেন্ট কল্যাণ চৌবের। খেলার দুনিয়ার সারাদিন।
৩১ বছরের অপেক্ষা
এক-আধ নয়, দীর্ঘ ৩১ বছর। দক্ষিণ আফ্রিকার (IND vs SA) মাটিতে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে টেস্ট ম্যাচ খেলছে ভারতীয় দল। কিন্তু কোনওবার সিরিজ জয়ের মুখ দেখেনি টিম ইন্ডিয়া। অধিনায়ক বদলেছে, দল বদলেছে, বদলে গিয়েছে কোচিং স্টাফ। ফলাফল সেই একই থেকে গিয়েছে।
শুরুটা সেই ১৯৯২ সালে। এবার নবমবারের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েছে ভারতীয় দল। এবার কি টেস্ট সিরিজের কোহিনূর ছিনিয়ে আনতে পারবেন রোহিত শর্মারা (Rohit Sharma)? দেশের মাটিতে বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের ক্ষত এখনও দগদগে ভারতীয় শিবিরের মনে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেই ম্যাচের পর এই প্রথম মাঠে নামবেন রোহিত। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ভারতের সিরিজ জয়ের অভিযানকে অনেকে 'ফাইনাল ফ্রন্টিয়ার' বলে দেগে দিয়েছেন। সেই যুদ্ধে কি শেষ হাসি হাসতে পারবেন হিটম্যান?
ফাইনালের ক্ষত
বিশ্বকাপে ফেভারিট হিসাবে শুরু করেছিল টিম ইন্ডিয়া (Team India)। আর ১৩০ কোটি দেশবাসীর প্রত্যাশা মতো খেলে টানা দশ ম্য়াচ জিতে ফাইনালে পৌঁছেছিল। প্রতিপক্ষকে কার্যত দাঁড়াতেই দেয়নি কোনও ম্যাচে। ১৯ নভেম্বর আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ফাইনালে যখন প্যাট কামিন্সের অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল ভারত, সকলে ধরেই নিয়েছিলেন, ট্রফি উঠছে রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) হাতে। গ্রুপ পর্বে এই অস্ট্রেলিয়াকে ভারত যে একপেশেভাবে হারিয়েছিল।
কিন্তু ক্রিকেট ঈশ্বর হয়তো অন্যরকম কিছু ছকে রেখেছিলেন। তাই ফাইনালে পরাস্ত হতে হয় ভারতকে। যে হারের ধাক্কায় শোকের ছায়া নামে গোটা দেশে। হতাশায় ডুবে যান ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীরা।
বিশ্বকাপ ফাইনালের হার যে কতটা ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছিল, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে তা জানিয়েছেন রোহিত শর্মা। বিশ্বকাপের পর যিনি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ও দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সীমিত ওভারের দুই সিরিজে খেলেননি। ভারত অধিনায়ক ফিরছেন সেঞ্চুরিয়নে, প্রথম টেস্ট ম্যাচ দিয়ে। তার আগে রোহিত বলেছেন, 'যেভাবে বিশ্বকাপে খেলেছিলাম, তাতে যে কেউ ভাববে চ্যাম্পিয়ন হব। ট্রফির জন্য আমরা প্রচুর পরিশ্রম করেছিলাম। ফাইনালে কয়েকটা জিনিস ভাল করতে পারিনি। এরকম একটা হারের পর কঠিন সময় হয়। তবে এগিয়ে যাওয়ার এবং ভবিষ্যতের দিকে তাকানোর রাস্তা বার করতে হয়। বহির্বিশ্ব থেকে প্রচুর উৎসাহ পেয়েছি। আমাকে ব্যক্তিগতভাবে তা অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। ব্যাটার হিসাবে যতটা ভাল সম্ভব ব্যাট করছি। সামনে যে চ্যালেঞ্জই আসুক না কেন, আমি মুখিয়ে রয়েছি।'
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রোহিত?
আমদাবাদের পর সেঞ্চুরিয়ন (Centurion)। ১৮ নভেম্বরের পর ২৫ ডিসেম্বর। এক মাস এক সপ্তাহে তাঁর জগতটা বদলে গিয়েছে আমূল।
১৮ নভেম্বর আমদাবাদে তিনি যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিল, তাঁর দল টানা ১০ ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপের ফাইনালে। এবং ফাইনালেও তাঁরাই ফেভারিট। আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছিলেন অধিনায়ক।
তারপর ফের তাঁকে সাংবাদিকদের সামনে দেখা গেল ২৫ ডিসেম্বর সেঞ্চুরিয়নে। রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) মনে এখনও গেঁথে রয়েছে বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের যন্ত্রণা। কথা বলার ফাঁকে যা ছাইচাপা আগুনের মতো বেরিয়েও এল।
সেই সঙ্গে রোহিতের দিকে ধেয়ে এল টি-টোয়েন্টি কেরিয়ার নিয়ে বাউন্সারও। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কি তাঁকে ফের দেখা যাবে? আগামী বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, সেই টুর্নামেন্টে কি খেলবেন রোহিত? খেললে কি অধিনায়ক হিসাবেস নাকি শুধু ব্যাটার হিসাবে?
মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে বক্সিং ডে টেস্ট। প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। যাদের ডেরায় গিয়ে কোনওদিনও টেস্ট সিরিজ জেতেনি ভারত। আর সেই অগ্নিপরীক্ষা দিতে নেমে রোহিতকে সামলাতে হল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে গোলাগুলি। রোহিত শান্ত গলায় বললেন, 'আমি খেলা উপভোগ করতে চাই। আমার সামনে যে ধরনের ক্রিকেটই আসুক না কেন, খেলতে চাই।'
৩১ ডিসেম্বরের বৈঠক
চলতি আইএসএলে বারবার রেফারিংয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট বনাম মুম্বই সিটি এফসি ম্যাচে ৭টি লাল কার্ড ও ৭টি হলুদ কার্ড দেখিয়ে রেকর্ড গড়েছিলেন রেফারি। আইএসএলের ইতিহাসে এর আগে কোনও ম্যাচে ১৪ কার্ড দেখানো হয়নি। তারপর ইস্টবেঙ্গল এফসি বনাম ওড়িশা এফসি ম্যাচেও রেফারিংয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। বিশেষ করে ইস্টবেঙ্গল নিশ্চিত দুটি পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত হয়। যার জেরে কাঠগড়ায় তোলা হয় বিতর্কিত রেফারিংকে।
রেফারিংয়ের মান ফেরাতে এবার সক্রিয় হয়ে উঠল সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থা এআইএফএফ (All India Football Federation)। সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার প্রেসিডেন্ট কল্যাণ চৌবে (Kalyan Chaubey) একটি বৈঠকের আয়োজন করেছেন। ফেডারেশনের রেফারি কমিটির সদস্য, রেফারিদের প্রধান অফিসার ট্রেভর কেটল এবং রেফারিদের জরিপ করার জন্য নিযুক্ত সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন কল্য়াণ। রেফারিংয়ের মান নিয়ে আলোচনা হবে সেই বৈঠকে। কীভাবে রেফারিংয়ের মানের উন্নতি ঘটানো যাবে, সেই দিকনির্দেশও খোঁজা হবে বৈঠকে। ৩১ ডিসেম্বর হবে বৈঠক।