কলকাতা: নতুন চাকরি পেলেন সৌরভ-কন্যা সানা গঙ্গোপাধ্যায় (Sana Ganguly)। এক ম্যাচ বাকি থাকতে ওয়ান ডে সিরিজ হেরে গেল ভারতের মহিলা দল (IND W vs AUS W)। খেলার দুনিয়ার সারাদিন।


সানার নতুন ইনিংস


বড়দিনের (Christmas) রেশ এখনও মিলিয়ে যায়নি। সঙ্গে রয়েছে বর্ষবরণের আবহ। নববর্ষকে (New Year 2024) স্বাগত জানাতে তৈরি গোটা বিশ্ব। শহর কলকাতাও সেজেছে আলোর মালায়। রাস্তায় রাস্তায় রঙিন আলোর রোশনাই। জমিয়ে খাওয়া দাওয়া, ঘুরতে যাওয়া চলছে।


আর উৎসবের আবহেই সুখবর দিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly)। জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক জানালেন, নতুন চাকরি পেয়েছেন কন্যা সানা (Sana Ganguly)। যা নিয়ে গর্বের শেষ নেই কিংবদন্তি ক্রিকেটারের।


তিন রানে হার


অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট জয়ের তৃপ্তি ধাক্কা খেল ভারতীয় মহিলা দলের (Indian Womens Cricket Team)। ওয়ান ডে সিরিজে পরপর দুই ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া (IND W vs AUS W)। সেই সঙ্গে সিরিজ জয়ও নিশ্চিত করে ফেলল। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই। শনিবার ভারতকে ৩ রানে হারিয়ে ওয়ান ডে সিরিজে ২-০ এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। শেষ ম্যাচ কার্যত নিয়মরক্ষার হয়ে দাঁড়াল।


শনিবার ভারতের হয়ে লড়াই করলেন এক বঙ্গকন্যা। শিলিগুড়ির রিচা ঘোষ (Richa Ghosh)। পায়ের পেশির টান সামলে ব্যাট হাতে লড়াই করলেন। এদিন নায়ক হয়ে উঠতে পারতেন রিচা। পারলেন না। ফিরলেন ৯৬ রানে। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৪ রান দূরে। অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি বঙ্গতনয়ার সাফল্যের মুকুটে রঙিন পালক হয়ে থাকতে পারত। কিন্তু পারলেন না রিচা। ওয়ান ডে ক্রিকেটে প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরির দোরগোড়া থেকে ফিরলেন। তিনি তিন অঙ্কে পৌঁছলে সেটা হতো অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে ক্রিকেটে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটারদের পঞ্চম সেঞ্চুরি। কিন্তু পারলেন না রিচা।


পারল না ভারতও। অস্ট্রেলিয়ার ২৫৮/৮ তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৫৫/৮ স্কোরে আটকে গেল। মাত্র ৩ রানে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে হার মানতে হল টিম ইন্ডিয়াকে।


স্বপ্ন দেখাচ্ছে ষোড়শী


যে রাঁধে, চুলও বাঁধে। ফুটবল মাঠে গোলও করে কি?


সুলঞ্জনা রাউল (Sulanjana Raul) অন্তত করে। আর শুধু গোল করেই না, ছিনিয়ে নেয় টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার! ১৭ গোল করে কন্যাশ্রী কাপে (Kanyashri Cup) সর্বোচ্চ স্কোরার হয়েছে ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) ষোড়শী। ১৫ গোল করে দ্বিতীয় স্থানে রিম্পা হালদার। যার দল শ্রীভূমি স্পোর্টিং টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।


কে এই সুলঞ্জনা? আলাপ করিয়ে দেওয়া যাক। পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের মেয়ে। দেখলে আর পাঁচটা স্কুল পড়ুয়ার সঙ্গে তফাত করতে পারবেন না। ছিপছিপে চেহারা। বয়েজ কাট চুল। মুখে লাজুক হাসি। মিতভাষী।


পায়ে একটা বল দিয়ে দিন। এই মেয়েই বাঘা বাঘা ডিফেন্ডারকে ঘোল খাইয়ে দেবে। পায়ে গোলার মতো শট। ক্ষিপ্র গতি। চোখের পলক ফেলার আগেই গোল করে বেরিয়ে যাবে।


কন্যাশ্রী কাপে ইস্টবেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। শেষ ম্যাচে শ্রীভূমি স্পোর্টিংয়ের কাছে হেরে গিয়েছে। কিন্তু সর্বোচ্চ স্কোরারের স্বীকৃতি ছিনিয়ে নিয়েছে ১৬ বছরের সুলঞ্জনা।


যার ফুটবলার হয়ে ওঠার কাহিনি কোনও সিনেমার চিত্রনাট্য হতে পারে। বাবার স্বপ্ন ছিল ফুটবলার হওয়ার। অভাবের সঙ্গে লড়াইয়ে পেরে ওঠেননি। সংসারের হাল সামলাতে মাঠে লাঙ্গল ধরতে হয়েছে। চাষবাস করে জীবনযাপন করেন। নিজের অপূর্ণ স্বপ্ন মেয়ের মধ্যে দিয়ে পূরণ করার অঙ্গীকার নিয়েছেন। কৃষক পরিবারের মেয়েই এখন বাংলা তথা ভারতীয় মহিলা ফুটবলকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে।


সেই গল্প শোনাল সুলঞ্জনা নিজেই। এবিপি লাইভ বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ষোড়শী স্ট্রাইকার বলছিল, 'আমার বাবা গণেশ রাউল ফুটবল খেলতেন। পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে নিয়মিত ফুটবল প্র্যাক্টিস করতেন। তবে ফুটবলকে পেশা হিসাবে বেছে নিতে পারেননি। চাষবাষের কাজ শুরু করেন। বাবার কাছেই আমার ফুটবলের হাতেখড়ি। আমি আজ ফুটবল মাঠে যা হয়েছি, সবই বাবার জন্য।'


ঋণে জর্জরিত পিয়ালি


তিনি বাংলা তো বটেই, গোটা দেশকে গর্ব করার মতো মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন বারবার। মাউন্ট এভারেস্টে চড়েছেন সামান্যতম অক্সিজেনের সাহায্য়ে। অন্নপূর্ণা, মাকালু-র মতো ছ'টি আট হাজার মিটার উচ্চতার শৃঙ্গ জয় করেছেন। সেই পিয়ালি বসাক চরম অর্থ সংকটে। মাথার ওপর বিরাট দেনার দায়।


পরিস্থিতি সামাল দিতে চন্দননগর বইমেলায় স্টল দিলেন এভারেস্ট জয়ী কন্যা। সেই স্টলেও রয়েছে পাহাড়ের ছোঁয়া। পাহাড়ি পথে যেতে যেতে সেখানকার জ‌্যাকেট বা জুতো সংগ্রহ করতেন। সেগুলো বিক্রি করেই কিছু লাভের আশায় স্টলে বসছেন পিয়ালি নিজেই। সঙ্গে থাকছেন বোন তমালি বসাকও।


মাথায় ওপর প্রায় ৮০ লক্ষ টাকার ঋণ। তার ওপর আরও শৃঙ্গ জয় করার অদম্য ইচ্ছে। স্টল থেকে সরঞ্জাম বেচে কিছুটা বাড়তি রোজগারের চেষ্টা করছেন পিয়ালি। সঙ্গে উৎসাহীদের দিচ্ছেন পাহাড়কে, প্রকৃতিকে ভালবাসার পাঠ।


ভারতীয় দল ঘোষণা


কাতারে আসন্ন এএফসি এশিয়ান কাপের (Asian Cup) জন্য ভারতীয় দল (Indian Football Team) ঘোষণা করলেন ভারতীয় দলের হেড কোচ ইগর স্তিমাচ (Igor Stimac)। শনিবারই ভারতীয় দল পৌঁছে যাবে দোহায়। সেখানেই এশিয়ার সেরা আন্তর্জাতিক ফুটবলের আসরে নামার চূড়ান্ত প্রস্তুতি শিবির শুরু করবে তারা। তার আগে ২৬ জনের স্কোয়াড ঘোষণা করে দিলেন ক্রোয়েশিয়ান কোচ, যে দলের মধ্যে থেকেই চূড়ান্ত এগারো নিয়ে এশিয়ান কাপের ম্যাচগুলিতে দল নামাবেন তিনি। 


২৬ জনের এই দলে কলকাতার দুই প্রধানের ন’জন খেলোয়াড় রয়েছেন। সাতজন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের ও দু’জন ইস্টবেঙ্গল এফসি-র। বাংলার দুই ফুটবলারকে রেখেই দল গড়েছেন স্তিমাচ। এই নিয়ে পঞ্চমবার এশিয়ান কাপে অংংশ নিতে চলেছে ভারত। এ বার তাদের প্রথম ম্যাচ ১৩ জানুয়ারি, ভারতীয় সময় অনুযায়ী বিকেল পাঁচটায়। ১৮ জানুয়ারি ভারতীয় দল তাদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে উজবেকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৮ জানুয়ারি, রাত আটটায়। এই দুটি ম্যাচই হবে আল রায়ানের আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে। লিগ পর্বে তাদের শেষ ম্যাচ ২৩ জানুয়ারি, বিকেল পাঁচটায়, আসস খোরের আল বায়েত স্টেডিয়ামে।