কলকাতা: বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াকে ৬ উইকেটে হারিয়ে অভিযান শুরু ভারতীয় দলের (Ind vs Aus)। সোমবার হায়দরাবাদে মুখোমুখি নিউজ়িল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস (NZ vs Neth)। খেলার দুনিয়ার সারাদিন।


ভারতের জয়


সামনে লক্ষ্য মাত্র ২০০ রানের। আর সেই রান তুলতে গিয়েই কিনা ভারতের স্কোর হয়ে গেল ২ রানে ৩ উইকেট! ড্রেসিংরুমে ফিরে গিয়েছেন ঈশান কিষাণ (০), রোহিত (০), শ্রেয়স আইয়ার (০)। কেউ কেউ বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না যে, এটা ক্রিকেট ম্যাচ চলছে। মনে হচ্ছিল যেন ফুটবল ম্যাচের স্কোরলাইন। দুশোও তখন যেন কয়েক নটিক্যাল মাইল দূরে।


সেখান থেকে পাল্টা লড়াই বিরাট কোহলি ও কে এল রাহুলের ব্যাটে। ১১৬ বলে ৮৫ রান করলেন কোহলি। আর রাহুল ১১৫ বলে ৯৭ রানে অপরাজিত রইলেন। রাহুলের ওয়ান ডে কেরিয়ারের সেরা ইনিংস বললেও অত্যুক্তি হবে না। মাত্র ৩ রানের জন্য সেঞ্চুরির সুযোগ হাতছাড়া হল। একটা সময় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে, সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে একটি চার ও একটি ছয় মারতে হতো। কিন্তু ছয় মেরে বসেন রাহুল। সেঞ্চুরি অপূর্ণ থেকে যায়। ৪১.২ ওভারে ম্য়াচ জিতে নেয় ভারত।


অশ্বিনে আস্থা দাদার


আর অশ্বিনের (R Ashwin) শেষ মুহূর্তের অন্তর্ভুক্তি ভারতীয় দলের স্পিন আক্রমণকে আরও শক্তিশালী করবে বলেই মত সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly)। শুরু হয়ে গিয়েছে দাদাগিরির নতুন সিজন। জোরকদমে শ্যুটিং চলছে। সঙ্গে একাধিক সংস্থার বিজ্ঞাপনের কাজ। বায়োপিক নিয়েও বৈঠক চলছে মাঝে মধ্যে। তুমুল ব্যস্ততার মধ্যেই বেহালার বীরেন রায় রোডের বাড়িতে বসে এবিপি লাইভের সঙ্গে আড্ডা দিলেন সৌরভ।


অশ্বিনের অন্তর্ভুক্তি কি ভারতীয় বোলিং আক্রমণে বৈচিত্র বাড়াল? সৌরভ বলছেন, 'অবশ্যই। ভারতের বোলিংকে শক্তিশালী করে তুলবে ও। অশ্বিন বিশ্বমানের বোলার। সর্বকালের অন্যতম সেরা। ২০১১ সালে যখন ভারত বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়, ও দলে ছিল। ২০১৩ সালে যখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতে ভারত, সেই দলেও ছিল অশ্বিন। চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে অনেক আইপিএল জিতেছে। বিজয়ী দলের সদস্য থেকেছে। সে জন্য আমি মনে করি ওকে দলে নেওয়াটা দারুণ ব্যাপার।'


রেকর্ড জেকের


গতকালই ওয়ান ডে বিশ্বকাপের (ICC ODI World Cup 2023) ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক হয়েছিলেন এইডেন মারক্রাম। এবার লিস্ট এ ক্রিকেটে সাদা বলের ফর্ম্য়াটে দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক হলেন জেক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক (Jake Fraser-McGurk)। অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ওয়ানডে টুর্নামেন্ট মার্শ কাপে তাসমানিয়া ও দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ম্যাচেই এই নজির গড়লেন দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার এই ২১ বছরের ব্যাটার। 


২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৩১ বলে শতরান করেছিলেন এবিডি। এখনও পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ওয়ান ডে ফর্ম্যাটের ম্যাচে দ্রুততম শতরান করার নজির দখলে রয়েছে ডিভিলিয়ার্সেরই। আইপিএলে ৩০ বলে শতরান হাঁকিয়েছিলেন ক্রিস গেল। তবে লিস্ট এ ক্রিকেটে এতদিন পর্যন্ত এবিডির ৩১ বলে সেঞ্চুরিটিই দ্রুততম ছিল। এদিন সেই রেকর্ডই ভেঙে দিলেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান জেক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক। তাঁর ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে মাত্র ৩.২ ওভারে ৫০ রান বোর্ডে তুলে নেয় দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া। আর মাত্র ৭ ওভারে ১০০ রানের গণ্ডি পেরিয়ে যায় দল। জেক মাত্র ১৮ বলে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেছিলেন। যা করার পথে তিনি পাঁচটি বাউন্ডারি ও ৫টি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। শতরান করার পক্ষে ৬টি বাউন্ডারি ও ১২টি ছক্কা হাঁকান।


কিউয়ি ঝড় আজও?


দলের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন (Kane Williamson) পুরোপুরি সুস্থ নন। চোট রয়েছে অন্যতম প্রধান পেসার টিম সাউদিরও। দুজনের কেউই প্রথম ম্যাচে খেলেননিয। তাঁদের ছাড়াই প্রথম ম্যাচে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে কার্যত একপেশেভাবে হারিয়েছে নিউজ়িল্যান্ড। বিশ্বকাপের অভিযান শুরু করেছে দুরন্ত গতিতে। সোমবার হায়দরাবাদে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজ়িল্যান্ডের সামনে নেদারল্যান্ডস (New Zealand vs Netherlands)। নিজামের শহর কি ফেভারিটদের জয়ের সাক্ষী থাকবে? নাকি ক্রিকেট সমর্থকদের জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে কোনও অঘটন?


টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ৮১ রানে হারলেও ডাচদের লড়াই প্রশংসিত হয়েছিল সর্বত্র। বিশেষ করে বাস দি লিদের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স সকলের নজর কেড়ে নিয়েছিল। প্রথমে বল হাতে ৪ উইকেট। তারপর ব্যাটে লড়াকু হাফসেঞ্চুরি। নেদারল্যান্ডস দলের সেরা অস্ত্র তিনিই। সোমবার কিউয়িদের বিরুদ্ধেও তাঁর পারফরম্যান্সের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে নেদারল্যান্ডসের ভাগ্য।


তবে এই ম্যাচেও খেলতে পারবেন না উইলিয়ামসন। ম্যাচের আগের দিনই জানিয়ে দিলেন দলের কোচ গ্যারি স্টিড (Gary Stead)।কিউয়ি অধিনায়কের চোটের আপডেট দিয়ে স্টিড বলেন, 'আমার মতে ও (কেন উইলিয়ামসন) খুব দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠছে। খালি ফিল্ডিংয়ের বিভাগটায় ওকে এখনও আরেকটু উন্নতি করতে হবে। ওর ফিল্ডিং উন্নত করার জন্য আরেকটু ফিট হওয়ার প্রয়োজন।' তবে ডাচদের বিরুদ্ধে না খেললেও, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১৩ অক্টোবর, কিউয়িদের তৃতীয় ম্যাচে দল উইলিয়ামসনকে পাবে বলেই আশা করছেন ব্ল্যাক ক্যাপস কোচ।


আত্মবিশ্বাসী ফেরান্দো


দাপুটে ফুটবল খেলে এ দিন দু’বারের আইএসএল চ্যাম্পিয়ন চেন্নাইন এফসি-কে ৩-১-এ হারায় গতবারের কাপ চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান এসজি। চলতি লিগে টানা তৃতীয় জয় পায় তারা। গতকাল ২২ মিনিটের মাথায় দিমিত্রিয়স পেট্রাটস প্রথম গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। প্রথমার্ধের বাড়তি সময়ের তৃতীয় মিনিটে ব্যবধান বাড়ান জেসন কামিংস। দ্বিতীয়ার্ধের দশ মিনিটের মাথায় ফ্রি কিক থেকে গোল করে ব্যবধান কমান রাফায়েল ক্রিভেলারো। কিন্তু পরবর্তী মিনিটেই গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন মনবীর সিং।  রীতিমতো আধিপত্য দেখিয়ে জয়ের পর ফেরান্দো সাংবাদিকদের বলেন, “দলের ছেলেদের খেলায় আমি খুশি। এ পর্যন্ত অনেকগুলো ম্যাচ আমরা খেলেছি। একসঙ্গে এএফসি কাপ, ডুরান্ড কাপ, কলকাতা লিগ, আইএসএল সবই খেলছি। সবেতেই আমরা ভাল খেলার যথেষ্ট চেষ্টা করছি। সেজন্যই আমি খুশি। অনুশীলন, ম্যাচ সবেতেই ছেলেরা যথেষ্ট ভাল কাজ করছে। তবু বলব আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে। অনেক সুযোগ নষ্ট করেছি। আজ প্রথমার্ধে আমাদের একাধিক সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে। ওঠা-নামার ক্ষেত্রেও সমস্যা ছিল। এক্ষেত্রে আমি পুরোপুরি খুশি নই ঠিকই। তবে এ জন্য খেলোয়াড়দের সম্পুর্ণ দোষ দেব না। ওদের নিয়ে এখনও কাজ করতে হবে”।


মাঠ বিতর্ক


বিশ্বকাপে (ODI World Cup) এক ম্যাচের পরই প্রশ্ন উঠে গেল ধর্মশালায় (Dharmasala) হিমাচল ক্রিকেট সংস্থার (HPCA) স্টেডিয়ামের মাঠের মান নিয়ে। নরম, বালির ভাগ বেশি থাকা মাঠে ক্রিকেটারদের চোট লেগে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন সকলে। ফিল্ডিং করার সময় আফগানিস্তানের মুজিব উর রহমান ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়্যার লেগে ডাইভ দিতেই তাঁর হাঁটু নরম মাটিতে গেঁথে যায়। বেকায়দায় পড়ে যান তিনি। বড়সড় চোট লেগে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল আফগান তারকার। আর তারপর থেকেই ধর্মশালার মাঠ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।


বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচের পর আফগানিস্তান দলের এক সদস্য এ-ও অভিযোগ করেছেন যে, ধর্মশালার মাঠ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য তৈরি নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আফগানিস্তান দলের ওই সদস্য বলেছেন, 'দেখে খুব খারাপ লেগেছে। ক্রিকেট খেলার জন্য এত সুন্দর একটা জায়গা। কিন্তু মাঠ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য তৈরি নয়। একদমই ঠিক মাঠ নয়। হতে পারে বৃষ্টির জন্য এই পরিস্থিতি, কিন্তু মাঠ এখনও তৈরি নয়।' তিনি যোগ করেছেন, 'কিউরেটর বলেছেন প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে কেউ না কেউ চোট পেয়ে যাবে।'