কলকাতা: বছর শুরু হওয়ার পর থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কারণ, ২০২২ সালেই ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (T20 World Cup)। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বসেছিল অষ্টম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর।


মোট ১৬টি দল নিয়ে আয়োজিত হয়েছিল বিশ্বকাপ। এবার ছিল সুপার টুয়েলভ ফর্ম্যাটে খেলা। তার মধ্যে আইসিসি টি-টোয়েন্টি ব়্যাঙ্কিংয়ের সেরা আট দল সরাসরি টুর্নামেন্ট খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল। বাকি চার দলের জন্য আটটি দল যোগ্যতা অর্জনকারী পর্বে খেলে। সেই আটটি দলকে আবার দুটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছিল। প্রথম গ্রুপে ছিল শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস, নামিবিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। সেই গ্রুপ থেকে দুটি দল সুপার টুয়েলভে ওঠে। শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্য়ান্ডস। দ্বিতীয় গ্রুপে ছিল জিম্বাবোয়ে আয়ার্ল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই গ্রুপ থেকে জিম্বাবোয়ে ও আয়ার্ল্যান্ড সুপার টুয়েলভে ওঠে।


সুপার টুয়েলভে গ্রুপ ওয়ানে ছিল নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা, আয়ার্ল্যান্ড ও আফগানিস্তান। গ্রুপ টু-এ ছিল ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, নেদারল্যান্ডস, বাংলাদেশ ও জিম্বাবোয়ে। ফর্ম্যাট অনুযায়ী গ্রুপে প্রত্যেক দল বাকিদের সঙ্গে একটি করে ম্যাচ খেলে। তারপর পয়েন্টের ভিত্তিতে দুই গ্রুপ থেকে প্রথম দুটি করে দল সেমিফাইনালের যোগ্যতা অর্জন করে। গ্রুপ ওয়ান থেকে শেষ চারে ওঠে নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড। গ্রুপ টু থেকে ওঠে ভারত ও পাকিস্তান।


ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের মূল আকর্ষণ ছিল টিম ইন্ডিয়ার প্রথম ম্য়াচ। যে ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। ২৩ অক্টোবর সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৪ উইকেটে হারিয়ে দেয় ভারত। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান তুলেছিল ১৫৯/৮। শান মাসুদ ৪২ বলে ৫২ রানে অপরাজিত ছিলেন। ইফতিকার আমেদ ৩৪ বলে ৫১ রান করেন। অর্শদীপ সিংহ ও হার্দিক পাণ্ড্য তিনটি করে উইকেট পান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে নায়ক বিরাট কোহলি। ৫৩ বলে অপরাজিত ৮২ রান করেন কিংগ কোহলি। ৩৭ বলে ৪০ রান করেন হার্দিক পাণ্ড্য। ৪ উইকেটে ম্যাচ জেতে ভারত।


তবে গ্রুপে ধাক্কাও খেতে হয় রোহিত শর্মাদের। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৫ উইকেটে হারতে হয় ভারতকে। যদিও তাতে ভারতের গ্রুপ শীর্ষে থেকে সেমিফাইনালে যাওয়া আটকায়নি।


গ্রুপ শীর্ষে থাকা ভারত ২০০৭ সালের পর ফের টি-টোয়েন্টি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হবে, আশায় ছিলেন ভক্ত-সমর্থকেরা। কিন্তু শেষ চার থেকেই বিদায় নিতে হয় ভারতকে। অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের কাছে লজ্জার হার হজম করে ভারত। রোহিত শর্মাদের ১০ উইকেটে হারিয়ে দেয় ইংল্যান্ড। তার আগে প্রথম সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছয় পাকিস্তান।


মেলবোর্নে ফাইনালে প্রথম ব্যাট করে পাকিস্তান তোলে ১৩৭/৮। শান মাসুদ (৩৮) ও বাবর আজম (৩২) ছাড়া আর কেউই রান পাননি। জবাবে ব্যাট করতে নেমে এক ওভার বাকি থাকতেই লক্ষ্যপূরণ করে ইংল্যান্ড। চাপের মুখে ৪৯ বলে ৫২ রান করে অপরাজিত ছিলেন বেন স্টোকস। ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে টি-টোয়েন্টির নতুন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। দ্বিতীয়বারের জন্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড।


টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ পাঁচ স্কোরার:


বিরাট কোহলি (ভারত) - ২৯৬ রান


ম্যাক্স ও'ডাউড (নেদারল্যান্ডস) - ২৪২ রান


সূর্যকুমার যাদব (ভারত) - ২৩৯ রান


জস বাটলার (ইংল্যান্ড) - ২২৫ রান


কুশল মেন্ডিস (শ্রীলঙ্কা) - ২২৩ রান


টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ পাঁচ উইকেটশিকারি:


ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (শ্রীলঙ্কা) - ১৫ উইকেট


স্যাম কারান (ইংল্যান্ড) - ১৩ উইকেট


বাস ডি লিড (নেদারল্যান্ডস) - ১৩ উইকেট


ব্লেসিং মুজারাবানি (জিম্বাবোয়ে) - ১২ উইকেট


এনরিক নোখিয়া (দক্ষিণ আফ্রিকা) - ১১ উইকেট


মোট বাউন্ডারির সংখ্যা: ৯১০


মোট ওভার বাউন্ডারির সংখ্যা: ৩৩১