সিডনি: ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ও কোচ অনিল কুম্বলের প্রশংসা করলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক স্টিভ ওয়া। তিনি এই প্রাক্তন লেগ-স্পিনারকে কিংবদন্তী হিসেবে উল্লেখ করার পাশাপাশি তাঁর খেলার ধরনও ব্যাখ্যা করেছেন।


কুম্বলের বিরুদ্ধে অনেক ম্যাচ খেলেছেন স্টিভ। সেই অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেছেন, ‘কুম্বলে যেভাবে দেশের হয়ে খেলা উপভোগ করত, আমি বিপক্ষের অন্য ক্রিকেটারকে সেভাবে খেলতে দেখিনি। আমরা ওর বোলিং লেগ-স্পিন হিসেবে খেলতাম না। ওর বোলিংকে স্লো ইনস্যুইং হিসেবেই দেখতাম আমরা। ও দুর্দান্তভাবে বলের গতিতে বদল আনতে পারত। বৈচিত্র্য, ক্রিজের ব্যবহারই ওর বোলিংয়ের আসল গুণ ছিল। ওর বোলিংয়ের নানা দিক ছিল। উইকেটে যদি অসমান ভাব থাকত বা উইকেট কিছুটা ভাঙা থাকত, তাহলে ওর বোলিং দারুণ কার্যকর হয়ে উঠত।’

টেস্টে ৬১৯ উইকেট নিয়েছেন কুম্বলে। ভারতীয়দের মধ্যে টেস্টে তাঁরই উইকেট সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন অফ-স্পিনার মুথাইয়া মুরলীধরন ও অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তী লেগ-স্পিনার শেন ওয়ার্নের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী কুম্বলে। তিনি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২০টি টেস্ট ম্যাচ খেলে ১১১টি উইকেট নিয়েছেন। গড় ২১.৩৩। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্টে ১০ বার পাঁচ উইকেট নিয়েছেন এই লেগ-স্পিনার। ২০০৩-০৪ মরসুমে ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফরে তিন টেস্টে ২৪টি উইকেট নেন তিনি। সেই সিরিজ ড্র করে ভারত।

কুম্বলের সতীর্থ রাহুল দ্রাবিড় ব্যাট হাতে যে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন, এই লেগ-স্পিনার বোলিংয়ে সেরকম প্রভাবই বিস্তার করেছিলেন বলে মনে করেন স্টিভ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘কুম্বলে দুর্দান্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। ও কোনওসময়ই বিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের এক ইঞ্চি জায়গা দিত না। ও কোনওদিন আমাদের বিরুদ্ধে খারাপ বোলিং করেছে বলে মনে পড়ছে না। ও ভারতের বোলিং লাইনআপে দ্রাবিড়ের মতো ছিল। ভারতের অধিনায়করা জানত, ওরা কুম্বলের কাছ থেকে কী ধরনের পারফরম্যান্স পেতে পারে। দলের জন্য ও সবসময় তৈরি ছিল।’

অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা অধিনায়ক স্টিভ। তিনি ৫৭টি টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দেন। তাঁর নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট জয়ের সংখ্যা ৪১টি। তাঁর সাফল্য ৭২ শতাংশ ম্যাচে। ১৯৯৭ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ছিলেন তিনি। ২০০১-এর মার্চে ইডেন টেস্টে হারের আগে পর্যন্ত টানা ১৬টি টেস্ট ম্যাচ জিতেছিল স্টিভের অস্ট্রেলিয়া। ইডেনে দ্রাবিড় ও ভিভিএস লক্ষ্মণের অবিশ্বাস্য ব্যাটিং এবং হরভজন সিংহের অসাধারণ বোলিংয়ের সুবাদে ফলো-অন করেও জয় পায় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন ভারত। সৌরভরাই সেই সিরিজ জেতেন।