দুর্গাপুর: পৌষ সংক্রান্তির আগেই বঙ্গে স্বমহিমায় ফিরেছে শীত। আর সেই শীতের সকালে কনকনে গঙ্গাজলে বিবেক স্নান! গতকাল স্বামী বিবেকানন্দের ১৫৯-তম জন্মজয়ন্তীতে বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রাজ্য সড়কের শ্যামপুর মোড়ে এই মূর্তি উন্মোচন করেন মন্ত্রী মলয় ঘটক। সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গঙ্গাজলে ধুয়ে বিবেকমূর্তি শোধন করল স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। পুরনো মালা ফেলে দিয়ে পরানো হল নতুন মালা।

শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী বলে পরিচিত এলাকার স্থানীয় কাউন্সিলর চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, তাঁর সুপারিশেই এই মূর্তি তৈরি হল। অথচ মূর্তি উন্মোচনে সবাইকে ডাকা হলেও স্থানীয় কাউন্সিলর হওয়া সত্ত্বেও তাঁকেই ডাকা হয়নি। সেই কারণেই তাঁরা স্বামীজির মূর্তিটি শোধন করলেন।

চন্দ্রশেখরের বক্তব্য, ‘আমি ৪৩ নম্বরের কাউন্সিলর। আমিই চিঠি দিয়ে প্রয়াত তমোনাশ ঘোষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম। আমার আবেদনেই মূর্তি হয়েছে, অথচ আমাকে ডাকা হয়নি। সবাইকে ডাকা হল কিন্তু আমি কাউন্সিলর থাকা সত্ত্বেও আমাকে ডাকা হল না। তৃণমূলের সৌজন্য নেই। কালকেই করতে পারতাম, কিন্তু করিনি। আজ মূর্তি শুদ্ধ করে মালা পরালাম।’

পাল্টা পশ্চিম বর্ধমানের তৃণমূল কংগ্রেস সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘এটাই ওদের সংস্কৃতি। গঙ্গাজল দিয়ে ধুলেই পবিত্র হবে না, আগে নিজের মন পবিত্র করুক, স্বামীজীর আদর্শ জানুক।’

দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার ১৯ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তায় তৈরি হয় বিবেকানন্দের এই মূর্তি। মঙ্গলবারের সরকারি অনুষ্ঠানে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যয় সহ এসবিএসটিসি দফতরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।  কিন্তু সেই মূর্তি নিয়েই শুরু হল টানাপোড়েন।

তৃণমূল-বিজেপির রাজনীতির হাত থেকে স্বামিজিরও রেহাই নেই! গতকাল স্বামীজির সিমলা স্ট্রিটের বাড়িতে মুখোমুখি হন রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’জনে সৌজন্য বিনিময় করেন। এরপরই সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, এইবারই শেষ আর তো থাকবেন না। সর্দার প্যাটেলের ৩০০ কোটির মূর্তি হয়েছে। এবার কলকাতাতেও একটা মূর্তি হোক।

যুব তৃণমূলের তরফে যুব দিবস উপলক্ষে মিছিলের আয়োজন করা হয়। দক্ষিণ কলকাতার গোলপার্ক থেকে শুরু হয়ে গড়িয়াহাট, ট্র্যাঙ্গুলার পার্ক, রাসবিহারী হয়ে মিছিল শেষ হয় হাজরা মোড়। এই মিছিলের নেতৃত্ব দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বামীজির সিমলা স্ট্রিটের বাড়িতেও যান তিনি।