কলকাতা: বেশিদিন কোচ হিসেবে পাননি সুভাষ ভৌমিককে। কিন্তু তাঁর কোচিংয়ের দর্শনে মুগ্ধ হয়েছেন জাতীয় দলের প্রাক্তন ফুটবলার ও ইস্টবেঙ্গলে সুভাষ ভৌমিকের অধীনে খেলা অর্ণব মণ্ডল। ময়দানের ভোম্বলদার মৃত্যুর খবর নাড়িয়ে দিয়েছে তাঁকেও। কোনওভাবেই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। এবিপি লাইভকে ফোনে অর্ণব বলেন, ''আমি কোচ হিসেবে ওঁনাকে খুব বেশিদিন পাইনি। খালিদ জামিল যখন এসেছিল, ওই সময়টাই। হয়ত খুব বেশি হলে ৪-৫ মাস। কিন্তু ওঁনার কোচিং করার পদ্ধতি ও প্লেয়ারদের যেভাবে সামলাতেন তা সত্যিই অতুলনীয়। একজন প্লেয়ারের থেকে তাঁর সেরাটা কীভাবে বের করে আনতে হয়, তা খুব ভালভাবে জানতেন সুভাষ স্যার। সবসময় ফিল করেছি যে ওঁনার কোচিংয়ে নতুনত্ব ছিল। বিদেশি ফুটবল দেখতেন। ফলে ভীষণভাবে আপডেটেড ছিলেন। ফুটবলারদের খুব সুন্দর পর্যবেক্ষণ করতে পারতেন। কে কেমন, তা বিচার ক্ষমতা ছিল অসাধারণ। ওঁনার মৃত্যুর খবর শুনে সত্যিই মর্মাহত আমি।''


২০১৮ সাল নাগাদ অর্ণব সুভাষ ভৌমিকের অধীনে খেলেছিলেন। এর আগে ২০০৮ সালে কেরিয়ারের শুরুতে যখন মহমেডানের জুনিয়র দলে ছিলেন, তখন সুভাষ ভৌমিক ছিলেন সিনিয়র দলের কোচ। সেই সময়ের এক অভিজ্ঞতা ভাগ করে এই তারকা ডিফেন্ডার বলেন, ''একজন কোচ কত ভাল তা শুধু মাঠে হার-জিতের ওপর নির্ভর করে মাপা যায় না। ওঁনাকে আমি দেখেছি প্লেয়ারদের খাওয়ার, ডায়েট নিয়েও সবসময় সজাগ থাকতেন। এমনকী এই বিষয় এতটাই সিরিয়াস ছিলেন যে ধমকও দিতেন। নিজে বাড়ি থেকে প্লেয়ারদের জন্য খাওয়ার নিয়ে আসতেন। আমাকে বলেছিলেন ম্যাচে নামার আগে বাটার খেতে। তাতে পেশির শক্তি বাড়ে। এভাবে অন্য কোনও কোচ ভাবতে কি না আমার জানা নেই।''


শেষ দেখা হয়েছিল কবে? অর্ণব বলছেন, ''ক্লাবের একটি মিটিংয়ে দেখা হয়েছিল মাস ছয়েক আগে। আমি প্রশ্ন করেছিলাম যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেলা দেখছেন কি না। উনি জানিয়েছিলেন যে রাতে দেখতে পারেন না। খেলা রেকর্ড করা থাকে, পরের দিন উঠে দেখতেন। বিদেশি ফুটবলের স্টাইল খুব পছন্দের ছিল।''


জাতীয় দলের একসময়ের সেরা ডিফেন্ডার আরো বলছেন, ''আমি তো বলব যে ভারতীয় ফুটবল সঠিকভাবে ব্যবহারই করতে পারল না সুভাষ ভৌমিককে। ওঁনার মতো ব্যক্তিত্বের আরও কিছু প্রাপ্য ছিল। কোচ হিসেব জাতীয় দলে, বা কোনাে মেম্বার হিসেবেও যদি থাকতেন দীর্ঘদিন ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে জড়িয়ে তবে লাভ হত। ওঁনার অভাব কোনোওদিনই পূরণ হওয়ার নয়।''