মুম্বই: টেস্টে তাঁর ব্যাটিং দেখার পর অস্ট্রেলিয়ান প্রাক্তন অধিনায়ক স্টিভ ওয়া একবার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে, "প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যেই আপনি তাঁর উইকেট নেওয়ার চেষ্টা করুন যদি তা না পারেন তাহলে বাকিদের উইকেট নেওয়ার চেষ্টা করুন।'' বিশ্বজয়ী অধিনায়ক যে ভুল বলেননি তার প্রমাণ পরের এক দশকে প্রতি মুহূর্তে টের পেয়েছে গোটা বিশ্ব। কিন্তু টেস্ট স্পেশালিস্ট এই স্টিরিওটাইপটাই ভাঙার ছিল। ১৯৯৯ বিশ্বকাপের মঞ্চ ছিল রাহুল দ্রাবিড়ের (rahul dravid) কাছে সেরা মঞ্চ। সেবারের বিশ্বকাপে ব্যাটারদের মধ্য়ে সর্বাধিক রানের মালিক ছিলেন দ্রাবিড়। হাঁকিয়েছিলেন ৪৬১ রান। তবে টনটনে তাঁর ১৪৫ রানের ইনিংস ওয়ান ডে ক্রিকেটের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসগুলোর মধ্যে ওপরের দিকেই থাকবে। সৌরভের ১৮৩ রানের পাশে দ্রাবিড়ের ইনিংস সেদিন ছায়া হয়ে থাকলেও, তার গুরুত্ব কোনো অংশেই কম নয়। আজকের ওস্তাদের মার সিরিজে আমাদের প্রতিবেদন ১৯৯৯ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে রাহুল দ্রাবিড়ের ১৪৫ রানের সেই ইনিংস নিয়েই --


১৯৯৬ সালে টেস্টে অভিষেকের পর থেকে এই ফর্ম্য়াটে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন খুব অল্প দিনেই। কিন্তু ওয়ান ডে ফর্ম্যাটে সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারছিলেন না। ১৯৯৭ সালে ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম শতরান করেছিলেন ৫০ ওভারের ম্যাচে। কিন্তু এরপর মাঝের ২ বছরে সেভাবে রান পাননি। তবে ১৯৯৯ বিশ্বকাপের মঞ্চেই খুঁজে পাওয়া গেল একেবারে অন্য রাহুলকে। কিনিয়ার বিরুদ্ধে সচিনের সঙ্গে ২৩৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েছিলেন। তার পর টনটনে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সেই ম্যাচ উইনিং নক। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (১৮৩) সঙ্গে জুটি বেঁধে বোর্ডে সেদিন ৩১৮ রান যোগ করেন রাহুল। যা বিশ্বকাপের মঞ্চে সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ এখনও। ১২০ বলে ১৪৫ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন দ্রাবিড়। একটি বিশাল ছক্কার সঙ্গে ১৭টি চোখ ধাঁধানো বাউন্ডারি আছড়ে পড়েছিল সেদিন কর্ণাটকের এই ব্য়াটারের ব্যাট থেকে মাঠের চারধারে। 


সেদিন টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন লঙ্কা অধিনায়ক অর্জুন রণতুঙ্গা। কিন্তু ভোরের ভেজা পিচকে কাজে লাগাতে পারেননি দলের বোলাররা। সদগোপন রমেশ মাত্র ৫ রান করে ফিরে গেলেও সৌরভকে যোগ্য সঙ্গ দেন সেদিন রাহুল। ২ জনে ৪৪.৫ ওভারে ৩১৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন সেদিন টনটনে। ১ রানের প্রথম উইকেট হারিয়েছিল ভারত। দ্বিতীয় উইকেটের পতন হিসেবে দ্রাবিড় যখন মাঠ ছাড়েন তখন ভারতের স্কোর ৩২৪। সেই ম্যাচে প্রথমে ব্য়াট করে ৩৭৩ রান বোর্ডে তুলে নেয় ভারত। জবাবে শ্রীলঙ্কা মাত্র ২১৬ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল। 


সৌরভ-দ্রাবিড়ের সেদিনের শতরানের ইনিংস