পোর্ট এলিজাবেথ: পঞ্চম একদিনের ম্যাচ জিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের পর পোস্ট ম্যাচ প্রেজেন্টেশনে যখন বিরাট কোহলি এলেন, তাঁর মুখে চওড়া হাসি। ভারত প্রথমবার দক্ষিণ আফ্রিকায় কোনও সিরিজ জিতল। প্রথম ভারতীয় অধিনায়ক হিসেহে এই কৃতিত্বের অধিকারী হলেন কোহলি। মহম্মদ আজহারউদ্দিন থেকে শুরু করে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রাহুল দ্রাবিড়, মহেন্দ্র সিংহ ধোনি- কোনও অধিনায়কই এই নজির গড়তে পারেননি।
পোর্ট এলিজাবেথে জয়ের সঙ্গে সঙ্গে একদিনের ক্রিকেটে আইসিসি-র ক্রম তালিকায় এক নম্বরে উঠে এসেছে ভারত। এই নিয়ে টানা নয়টি একদিনের সিরিজ জিতল ভারত। এক্ষেত্রে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কোহলির ভারত। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৯৮০ থেকে ৮৮-র মধ্যে টানা ১৬ টি একদিনের সিরিজ জিতেছে।
দলের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে তিনি খুশি বলে জানিয়েছে কোহলি। তিনি বলেছেন, আমি খুশি। আরও একটা দুরন্ত জয় পেল দল। বোলিং, ফিল্ডিং ও ব্যাটিংয়ে দলের সদস্যদের পারফরম্যান্স বেশ ভালো হয়েছে। গত ম্যাচে হারের পর আজকে দল যে সার্বিক পারফর্ম করেছে, তার খুবই প্রয়োজন ছিল।
কোহলি সাফ বলেছেন, ম্যাচ শুরুর পর থেকেই সিরিজ খোয়ানোর চাপ একটা দলের ওপরই ছিল এবং ওই দল দক্ষিণ আফ্রিকা। আমরা জানতাম, ওরা কিছু ভুল করলেই আমরা ম্যাচে ফিরে আসব।
গতকালের ম্যাচে টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিং করতে পাঠায় দক্ষিণ আফ্রিকা। রোহিত শর্মার ১১৫ রানের সৌজন্যে ভারত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৭৪ রান করে। কোহলি ৩৬ এবং শিখর ধবন ৩৪ রান করেন। প্রোটিয়া পেসার লুঙ্গি এনগিডি ৫১ রানে চার উইকেট নেন।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা দারুণ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। অধিনায়ক অ্যাডেন মার্করাম ও হাসিম আমলা দলের ইনিংসের ভিত মজবুত করার চেষ্টা করেন।কিন্তু ৩২ রানে অধিনায়ক আউট হওয়ার পর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান এবি ডিভিলিয়ার্স মাত্র ৬ রান করে আউট হন। আমলা হার্দিক পান্ড্যর দুরন্ত থ্রো-তে ৭১ রান করে আউট হন। শেষপর্যন্ত ৪২.২ ওভারে ২০১ রানে অল আউট হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।


কুলদীপ যাদব ৫৭ রানে ৪ এবং হার্দিক ও যজুবেন্দ্র চাহল দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।

কোহলি বলেছেন, জোহানেসবার্গে সিরিজের তৃতীয় টেস্ট থেকে দল ভালো খেলতে শুরু করেছে। দলগত প্রচেষ্টাটা সবচেয়ে বড় ব্যাপার। সেই প্রচেষ্টার ফলই দলের ভালো পারফরম্যান্স। এতে অবদান রয়েছে দলের খেলোয়াড়, সাপোর্ট স্টাফ সহ প্রত্যেকেরই। সিরিজে ৪-১ এগিয়ে যেতে পেরে খুব ভালো লাগছে।
দলের মিডল অর্ডারের পারফরম্যান্স নিয়ে কিছুটা হলেও চিন্তিত কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে কোহলি বলেছেন, সিরিজ জিতলেও তাঁরা ময়নাতদন্তে বসবেন। বলেছেন, আমাদের এই গ্রুপ বিশ্বাস করে জিতলেও বিশ্লেষণ দরকার, কোথায় আমরা আরও উন্নতি করতে পারি। বিশেষ করে ২০১৯ বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আমরা নিশ্চয়ই বসব ভবিষ্যতের রাস্তা ঠিক করার জন্য। আপাতত এটা বলতেই হবে যে, ৪-১ স্কোরলাইনটা দারুণ এবং আমরা সবাই এটা উপভোগ করছি।’
সিরিজের শেষ ম্যাচ নিয়মরক্ষার হলেও তা হালকা ভাবে নেওয়ার প্রশ্ন নেই বলেও জানিয়ে দিয়েছেন কোহলি। বলেছেন, প্রত্যেকটা দলই ২০১৯-র বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করছে। আমাদেরও করার প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি বলেছেন, ৫-১ সিরিজ জিততে চান তাঁরা। তবে শেষম্যাচে দলের রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তি ঝালিয়ে নেওয়ার একটা সুযোগ রয়েছে বলেও কোহলি জানিয়েছেন। তবে জেতাটাই যে অগ্রাধিকার, তা জানিয়ে দিতে ভোলেননি কোহলি।
আগামী শুক্রবার সেঞ্চুরিয়নে একদিনের সিরিজের শেষ ম্যাচ।