কলকাতা: বাংলার দুর্গাপুজোয় ইউনেস্কোর (UNESCO) হেরিটেজ মুকুট। তারই ধন্যবাদজ্ঞাপনে বৃহস্পতিবার সরকারিভাবে পদযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে, কলকাতায় বর্ণাঢ্য পদযাত্রায় অংশ নেন ইউনেস্কোর প্রতিনিধিরাও। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly)।
আর সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে সৌরভের প্রশংসা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সৌরভকে নিজের ভাই বলেও বর্ণনা করলেন তিনি। মমতা বলেন, 'সৌরভ আমার ছোট ভাই। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের কর্মব্যস্ততার মধ্যেও ও সময় বার করে এসেছে।' ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড, সিএবি, ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান-সহ উপস্থিত অন্যান্য ক্লাবগুলিকেও ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মঞ্চে মমতার পাশে বসেই অনুষ্ঠানের শেষ ভাগ দেখেন সৌরভ। পরে মঞ্চে বক্তব্যও রাখেন সৌরভ। তিনি বলেন, 'আমি শুধু সম্ভাষণটা বাংলায় করলাম। আজকে যাঁরা আমাদের অতিথি তাঁরা বাইরের মানুষ। বাংলায় কথা বললে তাঁরা বুঝবেন না। আমি ইংরেজিতেই বক্তব্য রাখব আজ।'
সৌরভ যোগ করেন, 'আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। আমাদের কাছে দুর্গাপুজো কী, ভাষায় বলে বোঝানো কঠিন। আমি গোটা বিশ্ব ঘুরে বেড়াই। বিভিন্ন দেশে দেখেছি বড়দিনে কত বড় উৎসব হয়। বিশেষ করে ইউরোপীয় দেশগুলিতে। ব্রাজিলের উৎসব বা মহারাষ্ট্রের গণেশ আরাধনা, যা কালকেই পালিত হল, সবগুলিই বড় করে হয়।'
যদিও সৌরভের মতে, সেরার সেরা দুর্গাপুজোই। বলেন, 'সকলের দুর্গাপুজো দেখা উচিত এটা বিশ্বাস করার জন্য যে, দুর্গাপুজো কত বড় হয়। পুজোর ওই ৫-৭ দিন শহর পুরো পাল্টে যায়। সকলেই এটা দেখে বড় হয়েছি। উৎসবের দিনগুলিতে ধনী, গরীব, ক্ষমতাশালী বা ক্ষমতাহীন, সকলেই আনন্দ করেন। এটা শুধু নতুন পোশাক কেনা বা টাকা খরচ করে আনন্দ করার উৎসব নয়। ৭ বছরের শিশু হোক বা ৭০ বছরের প্রবীণ, মা দুর্গা সকলকেই আনন্দ দেন। সকলের মুখে হাসি ফোটান।'
ইউনেস্কোকে ধন্যবাদও জানান সৌরভ। বলেন, 'এই পুজোকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ। প্রাপ্য সম্মান পেয়েছে দুর্গোৎসব।' ইউনেস্কোর দুই প্রতিনিধি ফ্রান্স থেকে এসেছেন। সৌরভ বলেন, 'ফ্রান্স ফুটবলের দেশ। এই শহরও ফুটবলের শহর। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলও ফুটবলের ক্লাব। আমি যখন বড় হয়েছি, ফুটবল খেলা দেখেই। পরে ক্রিকেট খেলি। এখন ক্রিকেট খুব জনপ্রিয়। ফ্রান্স থেকে আসার জন্য ধন্যবাদ। আমাদের আতিথেয়তা উপভোগ করুন। আপনাদের দুর্গাপুজো ভাল কাটুক। সারা বছর ভাল কাটুক।'
দুর্গাপুজোকে হেরিটেজ তকমা দেওয়ায় ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানিয়ে আজ পদযাত্রা। মিছিল শুরুর আগে প্রথা মেনে ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী। রাস্তায় নামলেন বিশিষ্টরা। ক্লাবগুলোর সঙ্গে সঙ্গে রাজপথে দেখা গেল মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জার্সিধারীদের। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির কাছে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ থেকে শুরু হয়ে কলুটোলা, বউবাজার, চাঁদনি চক, ডোরিনা ক্রসিং, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ হয়ে পদযাত্রা পৌঁছল রেড রোডে। ঢাকের বোলে, শঙ্খধ্বনিতে, ছৌ ও মুখোশ নাচে মেতে উঠলেন সবাই।
আরও পড়ুন: বিশ্বের যে কোনও দলকে ধ্বংস করতে পারে, সতীর্থকে মাঠেই কুর্নিশ কোহলির