নয়াদিল্লি: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর প্রথমদিকে ব্যাটিং করার সময় একেবারে সচিন তেন্ডুলকরের মতো দেখতে লাগত বীরেন্দ্র সহবাগকে। সেই সময় একটি ম্যাচে তাঁকে দেখে চমকে গিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক রশিদ লতিফ। তিনি বলেছিলেন, ‘সচিনের মতো ব্যাটিং করছে। ছেলেটা কে?’


একটি ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লতিফ জানিয়েছেন, ‘ভারত-শ্রীলঙ্কার একটা ম্যাচের কথা আমার মনে আছে। সেই ম্যাচে সচিন খেলেনি। আমি টিভিতে খেলা দেখছিলাম। আমি ভাবলাম, কে সচিনের মতো ব্যাটিং করছে? সেই সময় সহবাগ ব্যাটিং করছিল। ও সচিনের মতো একইরকম প্যাড, হেলমেট পরেছিল। তবে সচিনের তুলনায় ও একটু মোটা ছিল।’

সচিনের সঙ্গে অনেক ক্রিকেটারেরই তুলনা করা হয়। বিরাট কোহলির সঙ্গে সচিনের তুলনা নতুন নয়। পৃথ্বী শ-কে ‘পরবর্তী সচিন’ বলে চিহ্নিত করেছেন অনেকেই। কিন্তু একমাত্র সহবাগেরই ব্যাটিং সচিনের মতো ছিল। ভারতের সর্বকালের সেরা এই দুই ব্যাটসম্যান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বহু রেকর্ড গড়েছেন। তাঁদের জুটিতে অনেক সাফল্য পেয়েছে ভারতীয় দল।

শুরুতে সহবাগকে চিনতে না পারলেও, পরবর্তীকালে তাঁর গুণমুগ্ধ হয়ে ওঠেন লতিফ। এ বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমার সহবাগের বিষয়ে বর্ণনা দেওয়ার দরকার নেই। ও অত্যন্ত প্রভাবশালী ক্রিকেটার ছিল। ও ম্যাচ উইনার ছিল। ও সবসময় আধিপত্য বিস্তার করত। আমরা দেখে অভ্যস্ত ছিলাম, ওপেনাররা শুরুতে কিছুটা সতর্ক হয়ে ব্যাটিং করত, পিচের অবস্থা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করত। সেই সময় গ্লেন ম্যাকগ্রা, ব্রেট লি, ওয়াসিম আক্রম, শোয়েব আখতারের মতো বোলার ছিল। কিন্তু সহবাগ কাউকে ভয় পেত না। দলের উপর ওর প্রচণ্ড প্রভাব ছিল। ও বিশ্ব ক্রিকেটে সাফল্য পেয়েছিল। ওর ব্যাটিংয়ে দুর্দান্ত ভারসাম্য ছিল। অনেকেই বলত, ওর পায়ের নড়াচড়া সীমিত ছিল। কিন্তু সেই কারণেই হয়তো ও এত সাফল্য পেয়েছিল। এখন কোচেরা তরুণ খেলোয়াড়দের শেখান, ন্যূনতম পায়ের নড়াচড়ার সঙ্গে ভারসাম্য ঠিক রাখতে হবে।’

১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক হয় সহবাগের। তবে একটি ম্যাচ খেলার পরেই তিনি বাদ পড়েন। পরের বছর তিনি দলে ফেরেন। এরপর আর তাঁকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ব্লুমফনটনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে অভিষেক টেস্টেই দুরন্ত শতরান করে তিনি নিজের জাত চেনান। সেই সময় তিনি মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করতেন। ভারতীয় দলের তৎকালীন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে ওপেন করতে বলেন। এরপর সহবাগ সাফল্যের তুঙ্গে পৌঁছে যান। তিনিই একমাত্র ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে দু’টি দ্বিশতরান করেন। টেস্ট হোক বা একদিনের আন্তর্জাতিক, ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হয়ে উঠেছেন তিনি।