নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর (Anurag Thakur) ট্যুইট করে জানিয়েছিলেন, প্রতিবাদী কুস্তিগীরদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত সরকার। তারপর বুধবারই তাঁর সঙ্গে দেখা করলেন বজরং পুনিয়া (Bajrang Punia), সাক্ষী মালিক (Sakshi Malik)-সহ দেশের প্রথম সারির কুস্তিগীররা। ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছে পাঁচ দফা দাবি জানালেন তাঁরা।


কয়েকদিন আগে দেশের প্রথম সারির কুস্তিগীরদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। এবার সমস্যার সমাধান করতে উদ্যোগী হলেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর (Anurag Thakur)। প্রতিবাদী কুস্তিগীরদের সঙ্গে আলোচনার জন্য ট্যুইট করে খোলা আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী।


তারপরেই তাঁর সঙ্গে দেখা করে যৌন হেনস্থায় (Wrestlers Protest) অভিযুক্ত সর্বভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিংহকে (Brij Bhushan Sharan Singh) গ্রেফতার-সহ মোট ৫টি দাবি নিয়ে সরব হন সাক্ষী মালিক (Sakshi Malik), বিনেশ ফোগত (Vinesh Phogat), বজরং পুনিয়ারা (Bajrang Punia)। 


এদিন সকালে অনুরাগ ঠাকুরের বাড়িতে পৌঁছে যান কুস্তিগীররা। সঙ্গে গিয়েছিলেন কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েতও। কুস্তিগীররা যে ৫ দাবি জানিয়েছেন, সেগুলি হল -


১) অভিযুক্ত ব্রিজভূষণকে গ্রেফতার করা এবং কুস্তি সংস্থায় নির্বাচন করা।


২) ব্রিজভূষণ ও তাঁর পরিবারকে কুস্তি সংস্থা থেকে আজীবন দূরে রাখা।


৩) প্রতিবাদরত কুস্তিগীরদের বিরুদ্ধে থানায় দায়ের হওয়া FIR প্রত্যাহার।


৪)  জাতীয় কুস্তি সংস্থায় অবাধ নির্বাচন।


৫) কুস্তি সংস্থার প্রেসিডেন্ট পদে কোনও মহিলাকে বসানো।


দীর্ঘদিন ধরেই ভারতীয় কুস্তি সংস্থার প্রধান ব্রিজভূষণ সিংহের (Brij Bhusan Singh) বিরুদ্ধে কুস্তিগীররা বিক্ষোভ (Wrestlers Protest) করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু এই বিক্ষোভ সম্প্রতি এক সম্পূর্ণ নতুন মোড় নিয়েছে। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো সাত মহিলা কুস্তিগীরদের মধ্যে একজন নাবালিকাও রয়েছে। খবর অনুযায়ী সে নাকি নিজের বয়ান বদলে দিয়েছে।


এর আগে দু'দফায়, একবার পুলিশের সামনে ও একবার ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে নিজের বয়ানে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা ও স্টকিংয়ের অভিযোগ এনেছিল সেই নাবালিকা। সেই ভিত্তিতেই কুস্তি সংস্থার প্রধানের বিরুদ্ধে পকসো আইনের পাশাপাশি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪, ৩৫৪ এ, ৩৫৪ ডি এবং ৩৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল। কিন্তু ১৭ বছর বয়সি নাবালিকা বর্তমানে নিজের বয়ান বদলে নিয়েছে। সে ১৬৪ ধারার অধীনে এক নতুুন বয়ান দিয়েছে যেখানে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে এই অভিযোগগুলি তুলে নেওয়া হয়েছে। এবার কোর্টের তরফে নির্ধারিত করা হবে ১৬৪ ধারায় রুজু কোন মামলাকে অধিক প্রাধান্য দেওয়া হবে।


এই ঘটনায় নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিশিষ্ট আইনজীবি রেবেকা জন বলেন, 'আমি একেবারেই অবাক নই। এইসব ঘটনায় অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে, অভিযোগকারীদের উপর বাড়তি চাপ তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েই থাকে। এই ধরনের ঘটনাগুলি খুবই হতাশাজনক। মহিলারা এমন ক্ষেত্রে কিন্তু নিজেদের জীবন, জীবিকা, কেরিয়ার বাজি রেখেই অভিযোগটা জানান।'



আরও পড়ুন: ওভালের পিচে কীসের জুজু? শামিদের সতর্কবার্তা আক্রমের