নয়াদিল্লি: দুরন্ত হার্ডহিটার, অ্যাথলেটিক ফিল্ডার এবং নির্ভরযোগ্য অলরাউন্ডার-২০০০ সালে এমনই এক ক্রিকেটারের ভারতীয় দলে অভিষেক হয়েছিল। দুরন্ত প্রতিভার অধিকারী যুবরাজ শুরু থেকেই ক্রিকেট অনুরাগীদের নজর কেড়ে নিয়েছিলেন। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তাঁর দাপট, ক্যারিশ্মা এক অন্য পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল তাঁকে।
২০০০ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যাট হাতে চমকপ্রদ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাত্রা শুরু হয়েছিল যুবরাজের। তারপর ২০০৭-র টি ২০ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এক ওভারে ছয়টি ছক্কা, ২০১১-র বিশ্বকাপে অবিস্মরণীয় কৃতিত্ব এবং ২০১৭-তে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একদিনের ক্রিকেট কেরিয়ারে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস; যুবি বারেবারেই প্রমাণ করছেন, ফর্ম ইজ টেম্পোরারি, ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট।
সেই যুবরাজ আজ বিদায় জানালেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে। মুম্বইয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকে অবসরের সিদ্ধান্তের ঘোষণা করলেন তিনি। আর এই অবসর ঘোষণার পর তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছে ক্রিকেট বিশ্ব ও অনুরাগীরা।



আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেরিয়ারের যবনিকা টেনে যুবি এখন বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় টি ২০ লিগে ফ্রিল্যান্স কেরিয়ার গড়তে চান। এজন্য অবশ্য বোর্ডের অনুমোদন প্রয়োজন। তাঁকে আর আইপিএলেও দেখা যাবে না।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বুট জোড়া চিরতরে তুলে রাখার এই ক্ষণে যুবিকে ঘিরে আপ্লুত একদা তাঁর সহ খেলোয়াড় থেকে শুরু করে বিশ্ব ক্রিকেটের তারকারা।

সচিন তেন্ডুলকর শুভেচ্ছা জানিয়ে ট্যুইট করেছেন। তিনি বলেছেন, কী দুরন্ত কেরিয়ার তোমার যুবি। দলের যখনই প্রয়োজন হয়েছে, তখন প্রত্যেকবারই প্রকৃত চ্যাম্পিয়নের মতো নিজেকে মেলে ধরেছ। মাঠ ও মাঠের বাইরে নানা ধরনের ওঠা-পড়ায় যেভাবে লড়াই করেছ, তা চমকপ্রদ। দ্বিতীয় ইনিংসের জন্য শুভেচ্ছা এবং ক্রিকেটের জন্য যা করেছে, সেজন্য ধন্যবাদ।



যুবরাজের সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেট দলের একদা ব্যাটিং স্তম্ভের সুমধুর সম্পর্ক নতুন নয়। ২০১১-র বিশ্বকাপ জয়ের পর যুবরাজ সচিনকে নিজের কাঁধে তুলে দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নপূরণের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন।
এই গৌরবজনক অধ্যায়ের পরই ক্যানসার ধরা পড়েছিল যুবরাজের। ওই মারণ রোগের সঙ্গে লড়াই করে মাঠে ফিরে আসেন যুবি।
ইংল্যান্ডে যুবির রোগের চিকিত্সার সময়কার একটি ঘটনা জানিয়েছিলেন সচিন। লন্ডনে যুবরাজের সঙ্গে দেখা করার সময় তিনি ভেঙে পড়তে পারেন বলে ভয় পাচ্ছিলেন সচিন।
ভারতীয় দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলির টুইট- দেশের হয়ে এই অসাধারণ কেরিয়ারের জন্য অভিনন্দন। অনেক স্মৃতি ও জয় তুমি আমাদের দিয়েছ এবং আগামী দিনের জন্য শুভেচ্ছা। তুমি সার্বিক চ্যাম্পিয়ন।



স্টুয়ার্ড ব্রডের ট্যুইট- অবসর জীবন উপভোগ কর।



কেভিন পিটারসেন লিখেছেন, দুর্দান্ত কেরিয়ার। নীল জার্সিতে অসাধারণ দৃঢ়তা, সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তা তুলে ধরেছ তুমি। অবসরোত্তর জীবনের জন্য শুভেচ্ছা।



বীরেন্দ্র সহবাগের আবেগাপ্লুত বার্তা-খেলোয়াড়রা আসেন, চলে যান, কিন্তু তোমার মতো কাউতে খুঁজে পাওয়া ভার। প্রচুর কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে চলতে হয়েছে, কিন্তু সেই রোগ ও বোলারদের চূর্ণবিচূর্ণ করেছে এবং মন জিতে নিয়েছ। ওর লড়াই ও ইচ্ছাশক্তিতে বহু লোক অনুপ্রেরণা খুঁজে পেয়েছেন। বাকি জীবনের জন্য শুভেচ্ছা যুবি।



গৌতম গম্ভীরের ট্যুইট- অসাধারণ একটা কেরিয়ারের জন্য অভিনন্দন প্রিন্স। ভারতে সাদা বলে তুমিই সেরা ক্রিকেটার। তোমার কেরিয়ারের প্রতি শ্রদ্ধা হিসেবে বিসিসিআই-এর উচিত ১২ নম্বর জার্সিটা তুলে রাখা। চ্যাম্পিয়ন, তোমার মতো যদি ব্যাটিংটা করতে পারতাম!

<code


>
সাইনা নেওহাল, বিজেন্দ্র সিংহও যুবরাজকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ঋষভ পন্তের ট্যুইট-একজন বড় ভাই, একজন মেন্টর, একজন লড়াকু, ক্রিকেটের এক কিংবদন্তী। শুধু তাই নয়, একজন বড় মনের মানুষ যুবরাজ। আগামী দিনের জন্য শুভেচ্ছা।



ভিভিএস লক্ষ্মণ বলেছেন, তোমার সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা সুখকর। ক্রিকেটের ইতিহাসে তুমি অন্যতম মহান খেলোয়াড় হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তুমি আমাদের সবার কাছে অনুপ্রেরণা।



মহম্মদ কাইফের ট্যুইট-খেলার ইতিহাসে অন্যতম সেরা ম্যাচ উইনার। বিভিন্ন কঠিন প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে, কিন্তু প্রতিবারই জয়ী হয়েছে। তোমার জন্য গর্বিত।