ইসলামাবাদ: মঙ্গলবার পাকিস্তানের ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের ফেডেরাল বাজেট পেশ। তার প্রাক্কালে ইমরান খানের হুঁশিয়ারি, যারা ৩০ জুনের মধ্যে হিসাববহির্ভূত আয়, সম্পত্তির ঘোষণা করবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশের বেহাল অর্থনীতির স্বাস্থ্য ফেরাতে জোরকদমে তত্পরতা চালাচ্ছেন ইমরান। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণে তিনি বলেছেন, উন্নত দেশ হয়ে উঠতে গেলে নিজেদের বদলাতে হবে আমাদের। আপনাদের সবাইকে সম্পত্তি ঘোষণা স্কিমে সামিল হতে আবেদন করছি। কারণ কর জমা না হলে দেশকে উপরে তুলে নিয়ে যেতে পারব না আমরা। বেনামি সম্পত্তি, বেনামি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও বিদেশে গচ্ছিত অর্থ ঘোষণার জন্য ৩০ জুন পর্যন্ত সময় মিলবে বলে জানান ইমরান। বলেন, তারপর কিন্তু এই সুযোগ আর পাওয়া যাবে না। কাদের বেনামি অ্যাকাউন্ট, সম্পত্তি আছে, সে খবর আমাদের এজেন্সিগুলির কাছে খবর আছে।
ইমরান বলেন, আগে কখনও এমন সুযোগ আসেনি আমাদের সামনে। তাই এই স্কিমের ফায়দা তুলুন। পাকিস্তানকে তার সুফল দিন। নিজেদের সন্তানদের ভবিষ্যত্ সুনিশ্চিত করুন। দেশকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর মতো শক্তিশালী করে তোলা, দেশবাসীকে গরিবি থেকে মুক্ত করার সুযোগ দিন আমাদের। আমার পাকিস্তানবাসীকে বলছি, গত ১০ বছরে পাকিস্তানের ঋণের পরিমাণ ৬ হাজার বিলিয়ন থেকে বেড়ে ৩০০০০ বিলিয়ন টাকা হয়েছে। এতে দেশের ক্ষতি এটাই হয়েছে যে, আনুমানিক যে ৪০০০ বিলিয়ন টাকার বার্ষিক কর আদায় হয়েছে, তার অর্ধেকটাই খরচ হয়ে গিয়েছে ‘ওদের’ নেওয়া ঋণ পরিশোধের পিছনে। পড়ে থাকা টাকায় দেশের খরচ মেটানো চলতে পারে না।
তবে ‘ওদের’ বলতে কাদের বোঝাচ্ছেন, তা স্পষ্ট করেননি তিনি।
আর্থিক সঙ্কট নিরসনে আইএমএফের সঙ্গে সাম্প্রতিক প্রাথমিক চুক্তি অনুসারে পাকিস্তান ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাবে। ইমরান বলেছেন, দুর্ভাগ্যজনক ভাবে গোটা দুনিয়ায় সবচেয়ে কম কর জমা পড়ে পাকিস্তানে, কিন্তু পাকিস্তানই হাতেগোনা কয়েকটি দেশের অন্যতম যারা দানধ্যান করে সবচেয়ে বেশি। পাকিস্তান সেই দেশ যার ক্ষমতা আছে এবং সদিচ্ছা থাকলে আমরা বছরে কমপক্ষে ১০ হাজার বিলিয়ন টাকা জমাতে পারি।
গত মে মাসে ইমরানের তেহরিক-ই-ইনসাফ সরকার তাদের প্রথম রেহাই স্কিম অর্থাত্ সম্পত্তি ঘোষণার প্রকল্প ঘোষণা করে, যার লক্ষ্য ছিল অঘোষিত খরচ, বিক্রি ও বিদেশি সম্পত্তি সহ যাবতীয় সম্পত্তি সামান্য কর দিয়ে সাদা মানে বৈধ করে ফেলা।
প্রেসিডেন্টের অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে চালু হয় ফেডেরাল ক্যাবিনেট বৈঠকে অনুমোদিত ওই স্কিম, যাতে ৩০ জুন পর্যন্ত ৪৫ দিন কর জমা করার সময় দেওয়া হবে অঘোষিত সম্পত্তি, বিক্রি, খরচের ঘোষণার জন্য ।
পাক সরকার সরকারি ব্যয় ছেঁটে বাজেট পেশের ভাবনাচিন্তা করছে। উচ্চপদস্থ সেনাকর্তাদের বেতন বাড়ছে না বাজেটে।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ৩০ জুনের মধ্যে সরকারি সম্পত্তি ঘোষণা স্কিমের আওতায় বেনামি সম্পত্তি ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য ঘোষণার আবেদন জানালেন পাক প্রধানমন্ত্রী।