কলকাতা: প্রয়োজন ১৫ লক্ষ। আর হাতে রয়েছে মাত্র দেড় লক্ষ!


রাজ্যে ৫জি পরিষেবা (5G Service) চালু করার পথে সবচেয়ে বড় অন্তরায় কি মোবাইল টাওয়ারের সংখ্যা? সোমবার রাজারহাটে বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে কেন্দ্রীয় টেলিকমিউনিকেশন মন্ত্রক (Department Of Telecommunications) ও রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি ও বৈদ্যুতিন দফতর (Department Of Information Technology and Electronis) আয়োজিত ওয়ার্কশপে আলোচনার ফাঁকে মোবাইল টাওয়ারের সংখ্যা নিয়েই উদ্বেগ ঘোরাফেরা করল। মঞ্চে ৫জি পরিষেবার সুযোগ সুবিধা ব্যাখ্যা করলেন সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তারা। কিন্তু ঘনিষ্ঠমহলে তাঁরাও কি কিছুটা সংশয় প্রকাশ করছেন?


রাজ্যে ৫জি পরিষেবা চালু করতে প্রয়োজন ১৫ লক্ষ মোবাইল টাওয়ার। কিন্তু তথ্য বলছে, রাজ্যে রয়েছে মাত্র দেড় লক্ষ টাওয়ার। যা চাহিদার তুলনায় কিছুই নয়। ফলে, ৫জি পরিষেবা চালু করার ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। কবে বাকি প্রায় সাড়ে ১৩ লক্ষ টাওয়ার বসানো হবে, তা নিয়ে নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে চলতি বছরে ৫জি পরিষেবা চালু করা যাবে কি না, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে ধন্দ।


গোটা ঘটনার সঙ্গে জড়িত এক কর্তা, সোমবার ওয়ার্কশপেও যিনি হাজির ছিলেন, এবিপি লাইভকে বলছিলেন, 'এমনি মোবাইল টাওয়ারের সঙ্গে ৫জি টাওয়ারের আসমান জমিন ফারাক। সাধারণ যে টাওয়ারে ৪জি পর্যন্ত পরিষেবা পাওয়া যায়, তা ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় নেটওয়ার্ক জোগান দেয়। কিন্তু ৫জির জন্য যে মোবাইল টাওয়ার দরকার, তা গড়ে দুশো থেকে তিনশো মিটার জায়গায় কাজ করে। এমনকী, স্থানবিশেষে দেড়শো মিটার অন্তরও টাওয়ারও দরকার হতে পারে নিরবিচ্ছিন্ন পরিষেবা নিশ্চিত করার জন্য। রাজ্যে এত টাওয়ার নেই। ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণে টাওয়ারের ব্যবস্থা করাই এখন আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।'


তবে ৫জি মোবাইল টাওয়ার সাধারণ টাওয়ারের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। কীরকম? ৪জি টাওয়ার যেখানে সুউচ্চ হয়, সেখানে ৫জি টাওয়ারের উচ্চতা খুবই কম। এমনকী, বৈদ্যুতিক খুঁটি বা ল্যাম্পপোস্টকেও ৫জি টাওয়ার হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। যাকে বলা হচ্ছে স্ট্রিট ফার্নিচার টাওয়ার। সোমবার ওয়ার্কশপে বক্তব্য রাখার সময় যা বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্তা নীরজ কুমার। 


জানা গেল, বৈদ্যুতিক খুঁটি বা ল্যাম্পপোস্টকে যাতে ৫জি টাওয়ার হিসাবে ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করা হয়েছে। এবং এ বিষয়ে শীঘ্রই এসইডিসিএল ও সিইএসসি-র কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসা হবে। এ ব্যাপারে কেরলের উদাহরণ দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, কেরলে ৫জি পরিষেবা চালু করার পথে ৫ লক্ষ ইলেকট্রিক পোস্টকে টাওয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।


টাওয়ার সমস্যা দূর করতে অন্যান্য চিন্তাভাবনাও চলছে। সূত্রের খবর, সরকারি নির্মাণে নিখরচায় মোবাইল টাওয়ার বসানোর অনুমতি দেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি বাড়ি তৈরির ছাড়পত্র নেওয়ার সময় ভবিষ্যতে ৫জি টাওয়ার বসানোর শর্তও জুড়ে দেওয়া হতে পারে। কোন নির্মাণে কতটা ভাল টাওয়ার হতে পারে, সেই অনুযায়ী বাড়ির রেটিংও চালু করা হতে পারে বলে কোনও কোনও মহল থেকে দাবি করা হচ্ছে।