কলকাতা: নিত্যনতুন হাচব্যাক, এসইউভি যতই আসুক। কোনওভাবেই কমে না সেডানের চাহিদা। সেই কথা মাথায় রেখেই ভারতের বাজারে নতুন সেডান লঞ্চ করল স্কোডা। ২৮ ফেব্রুয়ারি বাজারে এল স্কোডার নতুন সেডান মডেল স্লাভিয়া। দুটি আলাদা মডেল আনছে স্কোডা। ২৮ ফেব্রুয়ারি বাজারে এল তারই টার্বো পেট্রোল ইঞ্জিনের মডেল  1.0l TSI. কলকাতায় স্কোডা স্লাভিয়ার এক্স শোরুম প্রাইস (ex-showroom price) প্রায় এগারো লক্ষ থেকে সাড়ে পনেরো লক্ষের মধ্যে রয়েছে।


স্কোডা স্লাভিয়া মাঝারি আকারের সেডান। স্কোডারই আরেকটি মডেল RAPID-এর জায়গায় আনা হয়েছে স্লাভিয়া। এই মডেলটির জন্য একটি বিশেষ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেছে স্কোডা। বিশেষ করে ভারতের জন্য তৈরি MQB-A0-IN নামের ওই প্ল্যাটফর্মের উপরেই তৈরি হয়েছে স্লাভিয়া। এর আগে স্কোডার আরেকটি মডেল কুশাকের জন্য একই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেছিল স্কোডা।


Rapid-এর চেয়েও আরও বেশি সুবিধে নিয়ে আসা হয়েছে স্লাভিয়ার মডেলে। গাড়ির চেহারা (looks) নিয়ে ভাবনাচিন্তা করেছে প্রস্তুতকারক সংস্থা। নজরকাড়া ডিজাইন করা হয়েছে স্লাভিয়াতে। নজর কাড়বে গাড়ির হেডল্যাম্প এবং গ্রিল। ক্রোম ডিজাইনের মাধ্যমে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে। স্লাভিয়ার মডেলের পিছন দিকটি দেখলে অনেকের স্কোডা অক্টাভিয়ার ডিজাইন মনে পড়তে পারে। গাড়ির টেল ল্যাম্প সি-শেপড করা হয়েছে। গাড়িটির নির্মাণের মান (build quality) নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। স্কোডা তার ট্রেন্ড বজায় রেখেছে এক্ষেত্রে। যথেষ্ট পোক্ত গাড়িটির বডি কোয়ালিটি। তার সঙ্গেই যোগ্য সঙ্গত দিয়েছে রঙের মান (paint finish)। 




গাড়িটির অন্দরসজ্জাতেও নজর দিয়েছে সংস্থা। স্লাভিয়ার ড্যাশবোর্ড দুর্দান্ত। Rapid-এর তুলনায় বেশি ফিচার জুড়েছে স্লাভিয়ার ড্য়াশবোর্ডে। স্লাভিয়ায় রয়েছে two-spoke স্টিয়ারিং হুইল। এছাড়াও স্লাভিয়ায় রয়েছে digital instrument cluster, এই সুবিধে স্কোডার কুশাক মডেলে নেই। সাধারণত গাড়ির ভিতরের সজ্জা সাধারণ রাখা রয়েছে, যা প্রয়োজন মোটামুটি সবই রাখা হয়েছ। স্লাভিয়ার সেন্ট্রাল টাচস্ক্রিন ১০ ইঞ্চির। টাচ রেসপন্স যথেষ্ট ভাল। তার ঠিক নীচেই রয়েছে ক্লাইমেট কন্ট্রোলের প্যানেল, যার পুরোটাই টাচবেসড (touch based)। এসির ভেন্ট গোলাকৃতি, তার সঙ্গে গ্লস প্যানেল যথেষ্ট নজরকাড়া। 


স্কোডা স্লাভিয়াতে একাধিক ফিচার এনেছে প্রস্তুতকারক সংস্থা। গাড়িতে রয়েছে সানরুফ (sunroof)। যাত্রীদের সুবিধের কথা ভেবে আসন ভেন্টিলেটেড করা হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ক্লাইমেট কন্ট্রোল, USB-C ports। স্লাভিয়াতে রয়েছে ওয়ারলেস স্মার্টফোন কানেক্টিভিটি যা যাত্রীদের বাড়তি সুবিধে দেবে। রয়েছে ওয়ারলেস চার্জিংয়ের ব্যবস্থা। গোটা অন্দরসজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে লেদার আপহোলস্টারি। যাত্রীদের সুবিধের জন্য স্লাভিয়াতে রাখা হয়েছে রিয়ার এসি ভেন্ট। রয়েছে এলইডি ল্যাম্প। 


সুরক্ষার জন্য নানা দিকে খেয়াল রেখেছ স্কোডা স্লাভিয়া। গাড়িটিতে রয়েছে ৬টি এয়ারব্যাগের ব্যবস্থা। টায়ার প্রেসারের দিকে খেয়াল রাখতে গাড়িটিতে রয়েছে মনিটারিং সিস্টেম এবং রয়েছে ESC.


ইঞ্জিনের প্রসঙ্গে আসা যাক। এই মডেলের ইঞ্জিন মসৃণ ড্রাইভিংয়ের জন্য আদর্শ। ইঞ্জিনটি ১১৫bhp এবং 175Nm। পাওয়ার যথেষ্ট ভাল। অটোমেটিক এবং ম্যানুয়াল দুইরকম গিয়ার ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে স্কোডা স্লাভিয়ায়। শহরে যানজট এবং হাইওয়ে দুজায়গাতেই যথেষ্ট ভাল ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা দেবে স্কোডা স্লাভিয়া।  সাসপেনশনের মানের দিক থেকে এই বিভাগের গাড়িগুলির মধ্যে  প্রথম দিকে থাকবে স্লাভিয়া। 179mm গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স রয়েছে স্লাভিয়ায়, ফলে এটি SUV-এর ফিলও দেবে চালককে। স্লাভিয়ার তেল খরচা নিয়েও বিশেষ ভাবতে হবে না চালককে। 
অনেকরকম সুবিধে থাকলেও ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা, পাওয়ারড ড্রাইভার সিট নেই স্লাভিয়াতে। যা থাকলে আরও ভাল হত।

আরও পড়ুন: বদলে গেল অনেককিছু ! মারুতি ওয়াগনারে আছে এই নতুন বৈশিষ্ট্য