আগরতলা: বাংলার বাইরে শিকড় বিস্তারে ত্রিপুরাকে বেছে নিয়েছিলেন দলীয় নেতৃত্ব (Tripura Bypolls Result)। তার জন্য জমি জরিপ করতে গিয়েছিলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor) টিমও। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) নিজেও দফায় দফায় ঢুঁ মেরেছেন সেখানে। তার পরেও বিধানসভা উপনির্বাচনে ত্রিপুরায় খাতা খুলতে পারল না তৃণমূল (TMC)।
ত্রিপুরার চার কেন্দ্রেই জামানত বাজেয়াপ্ত তৃণমূলের
রবিবার চার উপনির্বাচন কেন্দ্র আগরতলা, বড়দোয়ালি, যুবরাজনগর এবং সুরমার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি। আগরতলা কেন্দ্রটি গিয়েছে কংগ্রেসের সুদীপ রায় বর্মনের দখলে। এই চারটি কেন্দ্রেই চার নম্বরে শেষ করেছে তৃণমূল (TMC In Tripura)।
ত্রিপুরা উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ১ হাজার ৩৩৩ বলে জানা গিয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি কেন্দ্রেই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে তাদের। তা নিয়ে জোড়াফুল শিবির বিশেষ করে দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে তীব্র কটাক্ষ উড়ে এসেছে। কংগ্রেস নেতা পবন খেরা বলেন, “নরেন্দ্র মোদি এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস মুক্ত ভারতের স্বপ্ন দেখছেন। একসঙ্গে স্বপ্ন দেখছেন, নাকি মোদির থেকে শিখে দেখছেন, তা জানি না। তবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও নতুন। রাজনীতিতে অনেক কিছু শেখা বাকি ওঁর। না কংগ্রেস মুক্ত ত্রিপুরার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে, না কংগ্রেস মুক্ত বাংলা, না কংগ্রেস মুক্ত ভারত।”
বঙ্গ বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দেন। তাঁর বক্তব্য, “ বাংলায় ভোট লুঠ, ত্রিপুরায় হেরে ভূত।” বাংলায় তৃণমূল ছাপ্পাভোটে জেতে, তাই ত্রিপুরায় গিয়ে সুবিধা করতে পারেননি বলে মন্তব্য করেন বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।
তাঁদের যদিও পাল্টা জবাব দেন বাংলায় তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। বিজেপি, বাম এবং কংগ্রেস হাতে হাত মিলিয়ে তৃণমূলকে রোখার চেষ্টা করেছে বলে দাবি করেন তিনি। তবে এই ফলাফলে যায় আসে না, আগামী দিনেও ত্রিপুরায় জয় পেতে তৃণমূল বদ্ধপরিকর থাকবেন বলে জানান অভিষেক খোদ। এ দিনের ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন করলে অভিষেক বলেন, “যাঁরা জিতেছেন, সকলকে অভিনন্দন জানাই। তৃণমূল কর্মীরা মার খেয়ে ময়দানে পড়ে থেকেছেন। এক ইঞ্চিও জমি ছাড়েননি। সাংবাদমাধ্যম মারফত ত্রিপুরাবাসীকে হাতজড় করে বলব, যাঁরা ভোট দিয়েছেন তাঁদের ধন্যবাদ, যাঁরা দেননি, তাঁদেরকেও। আগামী দিনেও আপনাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে একই ভাবে কাজ করে যাব আমরা। ছ’মাস লাগুক বা ছ’বছর, অথবা ১০ বছর, ত্রিপুরায় গণতন্ত্র পুনরায় প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত জমি ছাড়বে না তৃণমূল। যাঁরা সমর্থন করেছেন, যাঁরা করেননি, সকলের স্বার্থেই আগামী দিনেও লড়াই চালিয়ে যাব।”
ত্রিপুরায় জমি ছাড়ার প্রশ্ন নেই, জানালেন অভিষেক
ত্রিপুরায় পুরসভা নির্বাচনের পর বিধানসভা উপনির্বাচনেও সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়েছিল তৃণমূল। ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে নিজে গিয়ে প্রচার করেন অভিষেক। কিন্তু, উপনির্বাচনে চার বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে আগরতলায় ২ শতাংশ, টাউন বড়দোয়ালিতে ৩ শতাংশ, সুরমায় প্রায় সাড়ে ৩ শতাংশ এবং যুবরাজনগরে প্রায় ৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে তৃণমূল।