ত্রিপুরা: সন্ত্রাস কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে  সিপাহীজলা জেলার নেহাল চন্দ্র নগরে পাল্টা আক্রমণের শিকার হলেন সাংসদদের এক প্রতিনিধিদল (Delegation)। সেই দলে ছিলেন সাংসদ আব্দুল খালেক, কংগ্রেসের ইনচার্জ অজয় কুমার, কংগ্রেস বিধায়ক গোপাল রায়, বিরজিৎ সিনহা, সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী। 


মূলত ত্রিপুরায় ফের ক্ষমতায় ফিরেছে বিজেপি (BJP)। ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence) যাতে না হয়, সেকারণে আবেদন জানিয়েছিলেন মানিক সাহা (Manik Saha)। কিন্তু সেগুড়ে বালি। আবেদনে যবনিকা পড়েনি ভোট পরবর্তী হিংসায়। পরিবর্তে ভোটের ফলাফল প্রকাশ্যের পরেই ফের হিংসা শুরু হয় এলাকায়। আর সেই ইস্যুতেই ভোট পরবর্তী হিংসায় (Post Poll Violence) ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করতে যাওয়ার কথা ছিল আজ বিরোধী ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের (Opposition Delegation)।


প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরেই অগ্নিগর্ভ ত্রিপুরা (Tripura)।  রাত থেকেই আক্রান্ত সিপিএম-বিজেপির সমর্থকরা। সিপাহিজলার বিশালগড়ে বাড়িতে ঢুকে বিজেপি কর্মীকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাতের অভিযোগ সিপিএমের বিরুদ্ধে। পাল্টা বিশালগড়েক অরবিন্দ নগরে সিপিএম সমর্থকের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে। রাতভর সন্ত্রাস, বিরোধীদলের মিছিলে যাওয়ায় বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে, পাল্টা বিজেপি কর্মীদের হামলার অভিযোগ। মান্দাইয়ে বিজেপি কর্মীদের বাড়ি-বাইক ভাঙচুরের অভিযোগ। খয়েরপুরে মেখলিপাড়ায় বাম কর্মীদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে। 


বস্তুত ত্রিপুরায় অশান্তি চলে বিধানসভায় ভোটগণনার দিক থেকেই। দক্ষিণ ত্রিপুরার শান্তিরবাজার  বিধানসভা কেন্দ্রে গণনা চলাকালীনই তিপ্রা মথা সমর্থকদের সঙ্গে বিজেপি সমর্থকদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। ওই কেন্দ্রে বিজেপি সমর্থক এগিয়ে ছিল। তিপ্রা মথা কর্মী-সমর্থকরা জানাচ্ছেন, একদিকে তাঁদের জন্য জায়গা বরাদ্দ ছিল। অন্য দিকে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের জন্য জায়গা রাখা থাকে। কিন্তু অভিযোগ, যেখানে তাঁদের দাড়ানোর জায়গা ছিল সেখানে গিয়েই পিছন থেকে ইট-পাটকেল মারতে শুরু করেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। তার পরই সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। যেখানে গণনা চলছিল, তার ভিতরেই ঢুকে পড়ে অশান্তি। কেন্দ্রীয় বাহিনী লাঠিচার্জ করে তাঁদের বের করে দেয়। ফলে সব মিলিয়ে গণনাকেন্দ্রের ভিতরে খুব বেশি উত্তাপ ছড়াতে পারেনি।


উত্তেজনার ওঠাপড়ার পর দ্বিতীয়বার ত্রিপুরায় ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি । তবে কমেছে বিজেপি-IPFT জোটের আসন সংখ্যা। ১৩ আসনে জেতা তিপ্রা মথা জানিয়েছে, বিজেপি যদি তাদের শর্ত মানে, তাহলে তারা সমর্থন দেবে।  এদিকে খাতাই খুলতে পারেনি তৃণমূল। ঝুলিতে নোটার থেকেও কম ভোট। ধাক্কা খেয়েছে বাম -কংগ্রেস জোটও। ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে ৬০টির মধ্যে ২৮টি আসনেই প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হতে দেখা গেল, একটি আসনও দখল করতে পারেনি জোড়াফুল শিবির। তাদের সমর্থনে ভোট পড়েছে মাত্র ০.৮৮ শতাংশ। তার চেয়ে বেশি ভোট পড়েছে নোটায়।