TMC: জালে তৃণমূলের 'জীবন'
খারিজ হয়ে গেল জামিনের আর্জি। ৪ দিনের সিবিআই হেফাজতে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত জীবনকৃষ্ণ সাহা (Jibankrishna Saha)। শুক্রবার থেকে টানা ৬৫ ঘণ্টা জেরা, নিয়োগ দুর্নীতিতে জালে তৃণমূলের 'জীবন'। তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক গ্রেফতার। জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুকুরে মোবাইল ফোন ফেলে 'তথ্য লোপাটের চেষ্টা'। এঁদো পুকুরের জলে মোবাইল ফোন ফেলেও গ্রেফতারি এড়াতে পারলেন না জীবন। এদিন সকালে তাঁকে গ্রেফতার করে। পরে আদালতে তোলা হলে জামিনের আবেদন করেন তিনি। কিন্তু খারিজ হয়ে যায় সেই আবেদন। ৪ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।
সূত্রের খবর, তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি লাগোয়া জঙ্গল থেকে ৫টি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। ৩৮ ঘণ্টার তল্লাশির পরে পুকুর থেকে জীবনকৃষ্ণের একটি মোবাইলের হদিশ। ৬৭ ঘণ্টা তল্লাশির পরে পুকুর থেকে জীবনকৃষ্ণের দ্বিতীয় মোবাইলের হদিশ। কী তথ্য লোপাটে মোবাইল ফোন পুকুরে ফেলেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক? পুকুরের পাঁক থেকে উদ্ধার মোবাইল ফোনেই কি দুর্নীতির যাবতীয় তথ্য? বিধায়ক হয়েও ফোন ফেলে তথ্য লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ সিবিআইয়ের। চাকরি বিক্রির নাম করে কোটি কোটি টাকা তোলার অভিযোগ সিবিআইয়ের। জীবনের বাড়ির জঙ্গলে পাওয়া ব্যাগে অ্যাডমিট কার্ড, নিয়োগের নথি পাওয়ার দাবি। তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে ডিজিটাল এভিডেন্স নষ্ট করার অভিযোগ সিবিআইয়ের। 'চাকরি চুরির এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন তৃণমূল বিধায়ক। অযোগ্য প্রার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া কোটি কোটি টাকা কোথায়?' ৩ হাজার পাতার নথি বাজেয়াপ্ত করার দাবি সিবিআইয়ের। অযোগ্যদের ওএমআর শিটে কারচুপি করে চাকরি বিক্রির অভিযোগ।
তৃণমূল বিধায়কের আন্দির বাড়িতে সিবিআই অভিযান ঘিরে শুক্রবার থেকেই তৈরি হয়েছিল একের পর এক নাটকীয় পরিস্থিতি। অভিযান শুরু হয় শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টায়। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে বিধায়কের বাড়িতে পৌঁছয় সিবিআইয়ের একটি দল। শুরু হয় বিধায়ককে জিজ্ঞাসাবাদ। একইসঙ্গে রঘুনাথগঞ্জে বিধায়কের শ্বশুরবাড়িতেও অভিযান চালান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীনই শুক্রবার বিকেল সোয়া ৫টা নাগাদ তদন্তকারীদের হাত থেকে নিজের দুটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে বাড়ির পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে জীবনকৃষ্ণের বিরুদ্ধে। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ জোড়া মোবাইলের সন্ধান পেতে পুকুর থেকে জল তোলার কাজ শুরু হয়। শনিবার বিকেলে বিধায়কের বাড়ির কাছে ঝোপ থেকে উদ্ধার হয় ৫টি ব্যাগভর্তি নথি। যেগুলি নিয়োগ সংক্রান্ত নথি বলে সিবিআই দাবি করেছে। এরপর রবিবার সকালে সাড়ে ৩৮ ঘণ্টা পর, উদ্ধার হয় বিধায়কের একটি মোবাইল।