'ভারত যুদ্ধ নয়, বিশ্বকে বুদ্ধ দিয়েছে, সন্ত্রাস রুখতে বিশ্বকে একজোট হতে হবে,' রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে বললেন প্রধানমন্ত্রী মোদি
বিদেশমন্ত্রক সূত্রের খবর, মোদির বক্তব্যের মূল নির্যাস হবে শান্তি, উন্নয়ন এবং দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাস-দমন। সেখানে ইমরানের বক্তব্য কাশ্মীর ইস্যু নিয়েই ঘোরাফেরা করবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, মোদির সেই বক্তব্যের নির্যাস--
মোদি বলেন: বিশ্বের সবচেয়ে বড় নির্বাচন হয়েছে ভারতে। দেশের মানুষ আমাকে নির্বাচিত করেছে। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রে নির্বাচন হয়েছে। আগের থেকেও বেশি আসন পেয়েছে বিজেপি। সাড়ে ১১ কোটি শৌচালয় তৈরি হয়েছে ভারতে। ৫০ কোটি মানুষকে বছরে ৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। বিশ্বের বৃহত্তম স্বাস্থ্য বীমা চালু হয়েছে। ভারতকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে অভিযান শুরু হয়েছে। আগামী ৫ বছরে জল সংরক্ষণে গুরুত্ব। ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতকে যক্ষ্মামুক্ত করা হবে। ১৫ কোটি ঘরে জল পৌঁছনো হবে। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস। বিশ্ব উষ্ণায়নে ভারত সামান্য দায়ী। রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তি মিশনে সবচেয়ে বেশি শহিদ ভারতের। ভারত যুদ্ধ নয়, বিশ্বকে বুদ্ধ দিয়েছে। সন্ত্রাসবাদ রুখতে ভারত বিশ্বকে সতর্ক করা হয়েছে। সন্ত্রাস রুখতে বিশ্বকে একজোট হতে হবে। একতা ও সম্প্রীতি বিশ্বকে একত্রিত করতে পারে।
প্রেক্ষাপট
নিউইয়র্ক: আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাষ্ট্রপুঞ্জের ৭৪তম সাধারণ সভায় বক্তব্য পেশ করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বিদেশমন্ত্রক সূত্রের খবর, মোদির বক্তব্যের মূল নির্যাস হবে শান্তি, উন্নয়ন এবং দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাস-দমন। সেখানে ইমরানের বক্তব্য কাশ্মীর ইস্যু নিয়েই ঘোরাফেরা করবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
সূত্রের খবর, (ভারতীয় সময় ) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে সভা শুরু হবে। বক্তাদের তালিকায় মোদির নাম চার নম্বরে আছে। তিনি সম্ভবত সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা (ভারতীয় সময়) -তে বক্তব্য পেশ করবেন। মোদির আগে মরিশাস, ইন্দোনেশিয়া ও লেসোথোর রাষ্ট্রনায়করা বক্তব্য রাখবেন। অন্যদিকে, তালিকায় ইমরানের নাম রয়েছে সাত নম্বরে। সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপুঞ্জের ভবনের সামনে ভারত-বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে চলেছে পাকিস্তান।
দুদিন আগেই, পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানিয়েছিলেন, কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের ‘শীতল’ প্রতিক্রিয়ায় তিনি আশাহত হয়েছেন। তিনি এ-ও স্বীকার করেন, কাশ্মীরকে আন্তর্জাতিক ইস্যু করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। কাশ্মীর নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের মন জিততে ব্যর্থ হয়েছেন ইমরান। আন্তর্জাতিক মহলের বিভিন্ন মঞ্চ থেকে তাঁকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। ইমরানের দাবি বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
ভারত প্রত্যেক মঞ্চে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীর হল দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হোক বা রাষ্ট্রপুঞ্জ-- কারও কোনও মধ্যস্থতার কোনও প্রয়োজন নেই। কারণ, কোনও তৃতীয় পক্ষের এখানে হস্তক্ষেপ করার এক্তিয়ার নেই। ইমরান জানান, আন্তর্জাতিক মহলের ওপর তিনি হতাশ। কারণ, তারা ভারতের ওপর কোনওপ্রকার চাপসৃষ্টি করেনি। যদিও তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, পাকিস্তান চাপসৃষ্টি করা চালিয়ে যাবে।
এদিকে, ইমরান খানের বিরুদ্ধে দেশে অসন্তোষের পারদ চড়তে শুরু করেছে। প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)-র দাবি, দেশের নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছেন ইমরান। কারণ, বিদেশে তাঁর করা মন্তব্যের ফলে দেশের ক্ষতি হয়েছে। ফলে, তাঁর আন্তর্জাতিক সফর বন্ধ করা উচিত।
প্রসঙ্গত, গত অগাস্ট মাসে ৩৭০ ধারা বিলোপের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা খর্ব করে কেন্দ্র। নয়াদিল্লির ‘ঐতিহাসিক’ সিদ্ধান্তের পর ভারতীয় হাই-কমিশনারকে বরখাস্ত করে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রায় বন্ধ করে দেয় ইসলামাবাদ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -