কার্তিক মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশী তিথিতে ভূত চতুর্দশী বা নরক চতুর্দশী পালিত হয়। পশ্চিমবঙ্গের অনেক জায়গায়, এই উৎসব দীপাবলির আগের দিন অর্থাৎ ছোট দীপাবলিতে পালিত হয়। অনেক জায়গায় এই উৎসবকে নরক নিবারণ চতুর্দশীও বলা হয়। কালীপুজোর একদিন আগেই পড়ে ভূত চতুর্দশী।  

Continues below advertisement

এই ভূত কথার হল অতীত।এদিন পরিবারের চোদ্দ পুরুষের উদ্দেশ্যে প্রদীপ জ্বালানো হয়। ভূত চতুর্দশী বাঙালিদের কাছে এক বিশেষ পার্বণ। মহালয়ায় যেমন পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে জল দান করা হয়, এইদিন চোদ্দ পুরুষের উদ্দেশ্যে প্রদীপ জ্বালানো হয়। ভূত অর্থাৎ অতীত, এবং চতুর্দশী অর্থাৎ কৃষ্ণপক্ষের চোদ্দ তম দিন। পিতৃ এবং মাতৃকুলের সাত পুরুষের উদ্দেশ্যে বাতি প্রদান। পুরাণ মতে, এইদিন মহাকালী ধীরে ধীরে জাগ্রত হতে শুরু করেন। অশুভ শক্তির বিনাশের পূর্বক্ষণ এই ভূত চতুর্দশী।                                  

ভূতচতুর্দশীর দিন চোদ্দ শাক খেয়ে সন্ধ্যায় চোদ্দ প্রদীপ জ্বালানোর রীতি। কার্তিক মাসে যে সময় কালীপুজো, দীপাবলি হয় সেটি হেমন্তকাল। এসময় ঋতু পরিবর্তনের হাত ধরে বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনও হয়। তাই ধর্মীয় বিশ্বাস, অনুশাসনের হাত ধরেই ঋতুজ রোগভোগ ঠেকানোর উপায় সেই কোন প্রাচীনকাল থেকে হয়ে আসছে।                              

Continues below advertisement

ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, এই দিনে ১৪ জন মৃত পূর্বপুরুষ তাদের আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে পৃথিবীতে ফিরে আসেন। তাই, এই দিনে বাড়িতে ১৪টি প্রদীপ জ্বালানোর একটি বিশেষ ঐতিহ্য রয়েছে। বলা হয়, এই প্রদীপগুলি পূর্বপুরুষদের ঘরে ফিরে যাওয়ার পথ দেখাতে সাহায্য করে। এই প্রদীপগুলি বাড়ির প্রতিটি কোণে স্থাপন করা হয়, যা পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং স্বাগতের প্রতীক হিসাবে বিবেচিত হয়।                

কোন সময় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করবেন আজ?

চতুর্দশী তিথি শুরু - ১৯ অক্টোবর, ২০২৫, দুপুর ১টা ৫১ মিনিট

চতুর্দশী তিথি শেষ - ২০ অক্টোবর, ২০২৫, দুপুর ৩টা ৪৪ মিনিট

ভূত চতুর্দশী তিথিটি যেহেতু ১৯ অক্টোবর দুপুর থেকে শুরু হয়ে ২০ অক্টোবর দুপুর পর্যন্ত থাকছে, তাই তিথির দিন ও পরের দিন রীতিনীতি পালনের কিছু বিশেষ সময় রয়েছে। ২০ অক্টোবর, সোমবার, সূর্যোদয় থেকে চতুর্দশী তিথি শেষ হওয়া পর্যন্ত এই দিনটি পালিত হবে।