কলকাতা : হনুমানজি ভগবান রামের সবথেকে ভক্ত। কিন্তু একসময় পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে রাম তাঁর প্রিয় ভক্ত হনুমানকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং তাঁর দিকে ব্রহ্মাস্ত্রও ছুড়ে দেন। কেন এমন ঘটে ? 


রাম নাকি রাম-নাম কার জোর বেশি ?


বলা হয়, একবার নাকি রামরাজ্যে ঋষি- মুনিদের সমাবেশ হয়। সেখানে বিতর্ক হয়, রাম নাকি রাম-নাম কার জোর বেশি ? এতে বড় বড় মুনিরা বলেন, রাম। কিন্তু নারদ বলেন, না, রাম-নাম !


এই সভায় ছিলেন ঋষি বিশ্বামিত্রও। ছিলেন ভক্ত হনুমানও। সভাশেষে হনুমান যখন সব ঋষিদের প্রণাম করতে যান তখন নারদ তাঁকে বিশ্বামিত্রকে প্রণাম করতে বারণ করেন। কারণ, তিনি ঋষি হওয়ার আগে রাজা ছিলেন।  সেজন্য তিনি ঋষি নন। অপমান দেখে বিশ্বামিত্র রেগে যান এবং হনুমানকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। রামচন্দ্রকে সে কথা জানান। গুরু বিশ্বামিত্রর কথা ফেলতে পারেননি রাম। তিনি হনুমানকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এ সময় নারদ হনুমানকে পরামর্শ দেন, রাম নাম জপ করতে। রাম যখন হনুমানকে তির ছুড়তে শুরু করেন, তখন তা তাঁকে স্পর্শ পর্যন্ত করল না।  কারণ তিনি রামের ভক্তিতে মগ্ন ছিলেন। তা দেখে শ্রীরাম ভাবলেন, যে ভক্ত তাঁর নাম জপ করছে তার কী করে ক্ষতি করবেন। এমনকী ব্রহ্মাস্ত্রও তাঁর ক্ষতি করতে পারল না। এতেই নারদের কথা সঠিক প্রমাণ হল। ব্যক্তি রামের থেকেও রাম নামের মাহাত্ম্য বেশি।


হনুমানের প্রাণরক্ষা 
রাম তারপর সব কথা বলেন গুরু বিশ্বামিত্রকে। কথিত আছে, তারপর নাকি বিশ্বামিত্র মৃত্যদণ্ড প্রত্যাহার করেন। রাম নাম জপের জোরে প্রাণ বেঁচে যায় হনুমানের। বিশ্বজুড়ে প্রতিষ্ঠা পায় রাম-নামের মাহাত্ম্য। 


কথিত আছে যে হনুমান ভগবান রামকে রক্ষা করার জন্য জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং হনুমান হলেন ভগবান রামের প্রিয় এবং পরম ভক্ত। হনুমান জয়ন্তী উৎসব  ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার পালিত হবে। প্রতি বছর চৈত্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে হনুমান জয়ন্তী পালিত হয়। 


বজরঙ্গবলীর পূজা কখন করবেন : 



  • চৈত্র পূর্ণিমা তিথি শুরু হচ্ছে ৫ মার্চ সকাল ৯টা ১৯ মিনিটে।

  • একই সময়ে, এটি শেষ হবে ৬ এপ্রিল সকাল ১০.৪ মিনিটে।

  • চৈত্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে হনুমান জির জন্ম হয়েছিল। এ বছর হনুমান জয়ন্তী পালিত হবে ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার।

  • বজরঙ্গবলীর পূজার শুভ সময় ৬ এপ্রিল সকাল ০৬.০৬ থেকে ০৭.৪০ পর্যন্ত। এদিনের শুভ মুহূর্ত দুপুর ১২.০২টা থেকে দুপুর পর্যন্ত।

  • এই দিনে ভক্তরা হনুমান জিকে সিঁদুর বা লাল কাপড় এবং ফুলের মালা অর্পণ করেন। হনুমানজিকে লাড্ডু, হালুয়া, কলার প্রসাদ দেওয়া হয়।

  • জন্মকুণ্ডলীতে শনির অশুভ প্রভাব থাকলেও এই দিনে রীতিমতো হনুমান জির পূজা করলে উপকার পাওয়া যায়।