কলকাতা : হিন্দু ধর্মে বাদ্যযন্ত্রের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এটি দেবতাদের বাসস্থান বলে মনে করা হয়। এই বাদ্যযন্ত্রের সাথে অনেক ধর্মীয় বিশ্বাস জড়িত। পুজোর ঘরে শঙ্খ রাখা খুবই শুভ বলে মনে করা হয়। পুজোর সময় শঙ্খে ফুঁ দিলে পুরো বাড়ির পরিবেশ পবিত্র হয়ে ওঠে। বিষ্ণুপুরাণ অনুসারে, শঙ্খর খোলে দেবী লক্ষ্মী বাস করেন। শঙ্খর খোল অনেক প্রকারের হয়। হিন্দুধর্মে বিভিন্ন ধরনের শঙ্খের কথা বলা হয়েছে। এসবের মধ্যে দক্ষিণাবর্তী শঙ্খের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক- ঘরে এই শাঁখ রাখলে কী কী পাওয়া যায় এবং কেন ঘরে রাখা উচিত।


সকল শঙ্খের মধ্যে দক্ষিণাবর্তী শঙ্খের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। একদিকে যেখানে সমস্ত শঙ্খের পেট বাঁ দিকে খোলে, সেখানে এই শঙ্খ খোলের পেট ডান দিকে খোলে। এই শঙ্খটিকে ঐশ্বরিক মনে করা হয়। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে, দক্ষিণাবর্তী শঙ্খের পুজো করলে দেবী লক্ষ্মীর বিশেষ আশীর্বাদ পাওয়া যায়। ধর্মগ্রন্থ, বেদ ও পুরাণে দক্ষিণাবর্তী শঙ্খকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়েছে। কিংবদন্তি অনুসারে, সমুদ্র মন্থন থেকে এই শঙ্খের উৎপত্তি। এটি দেবী লক্ষ্মীর ভাই হিসাবেও বিবেচিত হয়। কথিত আছে যে বাড়িতে এই শঙ্খ রাখা হয়, দেবী লক্ষ্মীও সেখানে বাস করেন। বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে, নেতিবাচক শক্তিও দক্ষিণাবর্তী শঙ্খ থেকে দূরে থাকে।


এই পদ্ধতিতে দক্ষিণমুখী শঙ্খ রাখুন-


দক্ষিণাবর্তী শাঁখে জল ভরে সারা ঘরে ছিটিয়ে দিন। এটি নেতিবাচক শক্তি দূর করে। বাড়িতে নিয়মিত পুজোয় শঙ্খকে ধূপ-দীপ দেখান। এটি বাড়িতে ইতিবাচকতা নিয়ে আসে এবং দেবী লক্ষ্মীকে খুশি করেন। একটি লাল কাপড় বিছিয়ে তার ওপর দক্ষিণমুখী শঙ্খ রাখুন। এতে গঙ্গাজল ও কুশ রাখুন। তারপর বসে 'ওম শ্রী লক্ষ্মী সহোদরায় নমঃ' মন্ত্রটি জপ করুন। এই মন্ত্রের অন্তত পাঁচ রাউন্ড জপ করুন। এই কারণে বাড়িতে দেবী লক্ষ্মীর অধিবাস।


দক্ষিণাবর্তী শঙ্খের প্রকার-


দক্ষিণাবর্তী শঙ্খ দুই প্রকারের। এতে একটি পুরুষ শাঁখ দক্ষিণমুখী এবং অন্যটি নারী শঙ্খ দক্ষিণমুখী। এই ধরনের শঙ্খ যার স্তর পুরু ও ভারী তাকে বলা হয় পুরুষ দক্ষিণাবর্তী শঙ্খ। একেই শঙ্খের খোলস যা হালকা তাকে বলা হয় মহিলা দক্ষিণাবর্তী শঙ্খ। দক্ষিণাবর্তী শঙ্খ বাড়িতে রাখা শুভ বলে মনে করা হয়। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে, যে বাড়িতে দক্ষিণাবর্তী শঙ্খ আছে এবং নিয়মিত পুজো করা হয়, সেখানে শুধু মা লক্ষ্মী নয়, ভগবান বিষ্ণুরও আশীর্বাদ থাকে।