যোগিনী একাদশী। এই ব্রত করে নাকি শাপমুক্তি হয়েছিল কুষ্ঠরোগীরও । এই ব্রত শুদ্ধ মনে করলে নাকি জীবনের সব পাপ ধুয়ে মুছে যায়, বিশ্বাস ভক্তগণের। তাই অন্য একাদশী পালন না করলেও, নারায়ণের আশীর্বাদ লাভ করতে এই ব্রত পালন করেন অনেকেই। যাঁরা দীর্ঘকালীন রোগে ভুগছেন, বা যাঁদের প্রিয়জন স্বাস্থ্য সঙ্কটে আছেন, তাঁদের এই একাদশী পালনের পরামর্শ দেওয়া হয়। এই একাদশী পালনে শরীরের যাবতীয় ব্যাধি নাশ হয় বলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস।
একাদশী তিথিকে সনাতন ধর্মে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। প্রতি মাসে দুবার একাদশীর উপবাস পালন করা হয়। একটি কৃষ্ণপক্ষে । অন্যটি শুক্লপক্ষে। মানুষের বিশ্বাস, একাদশী তিথিতে ভগবান বিষ্ণু এবং মা লক্ষ্মীর বিশেষ পুজো করলে সেই ব্যক্তি শুভ ফল লাভ করেন। সমস্ত ইচ্ছা পূরণ হয়। জুলাই মাসে যোগিনী একাদশী পালনে স্বাস্থ্য সঙ্কট দূর হয়।
কেন পালন
কথিত আছে, অলকাপুরী শহরে রাজা কুবেরের বাড়িতে হেম নামে এক মালি থাকতেন তিনি শিবপুজোর ফুল আনতে দেরি করে ফেলায় একবার শাপগ্রস্থ হয়েছিলেন। ভগবান কুবের তাকে কুষ্ঠরোগী হওয়ার অভিশাপ দেন। পরে মার্কণ্ডেয় ঋষির পরামর্শে তিনি যোগিনী একাদশীর উপবাস পালন করেন । এর প্রভাবে তাঁর কুষ্ঠরোগ দূর হয়। তিনি মোক্ষ লাভ করেন। সেই থেকেই যোগিনী একাদশী ব্রত পালনের প্রচলন।
কখন কী যোগ
যোগিনী একাদশী ২ জুলাই। এবার এই তিথিতে ৪ টি শুভ যোগের সমাপতন হচ্ছে। যোগিনী একাদশীতে ধৃতি যোগ গঠিত হচ্ছে। এই দিনে ধৃতি যোগ সকাল ১১:১৭ পর্যন্ত থাকছে। এর পরে শূল যোগ গঠিত হবে। ধৃতি যোগে ভগবান বিষ্ণুর উপাসনা অত্যন্ত ফলদায়ক বলে মনে করা হয়। যোগিনী একাদশী তিথিতে ত্রিপুষ্কর যোগও গঠিত হচ্ছে। এই যোগ সকাল ৮টা ৩৭ থেকে থেকে তৈরি হচ্ছে। থাকবে ৩ জুলাই ভোর ৪টে ৪০ পর্যন্ত। এছাড়া সর্বার্থ সিদ্ধি যোগও যোগিনী একাদশী তিথিতে গঠিত হচ্ছে। এই যোগ সকাল সাড়ে ৫ টা থেকে গঠিত হচ্ছে । এছাড়া এই দিনে থাকছে শিববাস যোগও। থাকছে সকাল ৮ টা ৪২ পর্যন্ত। এই সময় ভগবান শিবের অভিষেক করলে সাফল্য আসে। মনে করা হচ্ছে, এই ৪ শুভ যোগের সমাপতনে দুর্ভাগ্য কাটতে পারে সিংহ, মকর, মেষ, কুম্ভ, ধনু রাশির জাতকদের।