ঢাকা: জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে জেরবার পড়শি দেশগুলি। পরিস্থিতি অত্যন্ত সঙ্কটজনক বাংলাদেশেও (Bangladesh Fuel Price)। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর, বিগত পাঁচ দশকে, সেখানে জ্বালানির দাম সর্বোচ্চে গিয়ে ঠেকল (Fuel Price Hike)। খুচরো বাজারে জ্বালানি এর আগে এত মহার্ঘ হতে দেখেননি সে দেশের মানুষ। 


স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে জ্বালানির দাম সর্বোচ্চে


শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ সরকার জ্বালানির দাম একধাক্কায় ৫১.৭ শতাংশ বাড়িয়েছে। শনিবার থেকেই নয়া দাম কার্যকর হয়েছে। তাতে লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম একধাক্কায় ৪৪ টাকা (বাংলাদেশ মুদ্রায়) বেড়ে গিয়েছে।  এই মুহূর্তে বাংলাদেশে লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ১৩০ টাকা। লিটার প্রতি ডিজেলের দাম ৩৪ টাকা বেড়েছে। ফলে এই মুহূর্তে সেখানে এক লিটার ডিজেল কিনতে ১১৪ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। লিটার প্রতি কেরোসিনের দামও ১১৪ টাকা পড়ছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তে নাভিশ্বাস উঠছে আম বাংলাদেশি নাগরিকের। 


শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ সরকারের বিদ্য়ুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রকের তরফে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়, সেই অনুযায়ীলিটার প্রতি অকটেনের দাম বাড়ানো হয়েছে ৪৬ টাকা। ফলে এই মুহূর্তে সেখানে এক লিটার অকটেনের দাম পড়ছে ১৩৫ টাকা। শুক্রবার পর্যন্ত এক লিটার অকটেনের দাম ছিল ৮৯ টাকা। 


বাংলাদেশের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, এর আগে দেশের সরকার গত বছর নভেম্বর মাসে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করে। সেই সময় লিটারে কেরোসিন এবং ডিজেলের দাম বাড়ানো হয় ১৫ টাকা। তাতে এত দিন ৮০ টাকায় লিটারে কেরোসিন এবং ডিজেল কিনছিলেন সাধারণ মানুষ।



আরও পড়ুন: Vice President Election: উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নেই তৃণমূল, শিশির-দিব্যেন্দুকে চিঠি দিয়ে জানালেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়


এমনিতেই জুন মাসে দেশে মুদ্রাস্ফীতি ৭.৫৬ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে, গত ন’বছরে যা সর্বোচ্চ। বিশেষজ্ঞদের মতে, তেলের দাম বাড়ায় মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব আরও প্রকট হয়ে ধরা দেবে। যদিও বাংলাদেশ সরকারের যুক্তি,আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানির গাম বাড়ানো ছাড়া উপায় ছিল না। কারণ গত ছয় মাসে দেশের তেল সংস্থাগুলির কয়েক হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জ্বালানির মূল্য পুনর্বিবেচনা করা হবে বলেও আশ্বস্ত করা হয়েছে। 


বিক্ষোভে তেতে উটছে ঢাকা-সহ একাধিক জেলা


কিন্তু গতকাল রাতে সরকারি বিজ্ঞপ্তি সামনে আসার পরই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ মাথাচাড়া দিয়েছে। গতকাল গভীর রাত থেকেই রাস্তায় নামতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। গভীর রাতে মশাল হাতে মিছিল করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অধিকার পরিষদের সদস্যরা। সেখানে সরকার বিরোধী স্লোগান দেওয়া হয়। এ দিন ক্যাম্পাসেও বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল। এ ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। শুক্রবার রাত ১২টার আগেই সিলেটে সমস্ত পেট্রোল পাম্প বন্ধ করে দেওয়া হয়। মদিনা মার্কেট এলাকাতেও একই দৃশ্য দেখা গিয়েছে।  সোবহানীঘা, চট্টগ্রাম, গনি বেকারি, সাতক্ষীরা, রাজশাহী, গাজিপুরেও পেট্রোল পাম্পগুলি বন্ধ থাকতে দেখা গিয়েছে। জ্বালানি না পেয়ে রাস্তায় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান সাধারণ মানুষও।