Cyber Fraud: শিক্ষিত সচেতন লোকদেরও ঠকাচ্ছে ডিজিটাল অ্যারেস্ট স্ক্যাম (Digital Arrest Scam)। সদ্য এমনই এক জালিয়াতির (Cyber Fraud) শিকার হয়েছেন দেশের নামী ইউটিউবার (YouTuber)। টানা ৪০ ঘণ্টা ক্যামেরার সামনে হাউজ অ্যারেস্ট (House Arrest) অবস্থায় ছিলেন তিনি। সোশ্য়াল মিডিয়ায় সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন অঙ্কুশ বহুগুণা (Ankush Bahuguna)।
এত জনপ্রিয় ইউটিউবার জানতেন না ডিজিটাল অ্যারেস্ট কী ?
নিজের মোবাইল ক্যামেরা অন রেখে টানা ৪০ ঘণ্টা জালিয়াতদের জেরার মুখে থাকতে হয়েছিল অঙ্কুশকে। প্রথমে কিছুই বুঝে উঠতে পারেনি তিনি। শেষে তাঁর বন্ধুরা তাঁকে এই প্রতারণার বিষয়ে সচতেন করলে 'মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে' তাঁর। প্রতারণার বিষয়ে জানলেও ডিজিটাল অ্যারেস্টের বিষয়ে শোনেননি তিনি। তাই সবাইকে অন্তত দিনের কিছুটা সময় খবর দেখতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
কী বলেছেন অঙ্কুশ
এই জনপ্রিয় ইউটিউবার জানিয়েছেন, “আমি গত তিন দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়াও সব জায়গায় নিখোঁজ ছিলাম। আমাকে ৪০ ঘন্টা ধরে কিছু প্রতারকরা বন্দি করে রেখেছিল। আমি টাকা হারিয়েছি, আমি আমার মানসিক স্বাস্থ্য হারিয়ে ফেলেছি। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না যে এই ধরনের ঘটনা আমার সঙ্গে ঘটেছে।”
কীভাবে এই প্রতারণা চক্রে পা দেন
অঙ্কুশ জানিয়েছেন, তিনি একটি অদ্ভুত নম্বর থেকে জিম থেকে ফেরার সময় কল পেয়েছিলেন। যা +1 দিয়ে শুরু হয়েছিল। তাঁর কাছে পার্সেল সংক্রান্ত একটি ফোন আসে। যেখানে তাঁকে বলা হয়, আপনার পার্সেল ডেলিভারি বাতিল করা হয়েছে, প্রেস 'জিরো' ফর সাপোর্ট। এই জিরোতে প্রেস করাই কাল হয়েছিল তাঁর। এরপরই একজন কাস্টমার কেয়ার থেকে তাকে বলে, 'স্যার আপনার প্যাকেজ অবৈধ জিনিস পাওয়া গেছে। চিনে আপনি ওই প্য়াকেজ পাঠাচ্ছিলেন। এখন কাস্টমস ওই পার্সেল বাজেয়াপ্ত করেছে।
অঙ্কুশের নাম আধার নম্বর পেল কী করে
এরপরই শুরু হয় আসল খেলা। অঙ্কুশ বলেন, "আমি ভয় পেয়েছিলাম', এই ভয়কেই কাজে লাগায় প্রতারকরা। অঙ্কুশ ভিডিওতে বলেছেন, তাকে তখন বলা হয়েছিল প্যাকেজে তার নাম, আধার নম্বর এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত বিবরণ লেখা রয়েছে। এটি একটি অত্যন্ত গুরুতর অপরাধ, যে কারণে এখন আপনি ডিজিটাল অ্য়ারেস্টের অধীনে থাকবেন। কারণ ইতিমধ্য়েই তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে৷
অঙ্কুশ ভয় পেতেই..
অঙ্কুশ আরও জানিয়েছেন, এক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়েছিল তাকে। যদিও ওপর প্রান্তের সহযোগী তাকে বোঝায়, তার কাছে থানায় যাওয়ার পর্যাপ্ত সময় নেই তাই তিনি সরাসরি থানায় যোগাযোগ করে অঙ্কুশের উপকার করবেন। সেই সময় অঙ্কুশ পুরো বিষয়টা বিশ্বাসও করেছিলেন। ভয়াবহ অভিজ্ঞতার ভিডিয়োতে অঙ্কুশ বলেন, "আমি জানি না কীভাবে কলটি তারপরে একটি হোয়াটসঅ্যাপ কলে ট্রান্সফার করা হয়। সেটা ছিল একজন পুলিশ অফিসারের সঙ্গে ভিডিও কল। ওই পুলিশ ওয়ার্ডেপুলিশ ইউনিফর্ম পরেছিলেন। অঙ্কুশ ভিডিওতে জানান, তাকে বলা হয়- তিনি অর্থ পাচার, মাদক পাচার এবং অনেক খুব গুরুতর অপরাধে সঙ্গে জড়িত।
বাইরের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হলেন কী করে
ভিডিওতে দেখানো হয়েছে, কীভাবে স্ক্যামাররা তার আতঙ্ক বাড়াতে ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করেছিল। যে কারণে তারা যা বলবে তা অঙ্কুশকে করতে বাধ্য করেছিল ঠগরা। এই স্ক্যামাররা তাদের গবেষণা করেই এই কাজে নামে। আপনাকে তারা এমন কিছু বলে , যা তারা জানে যে আপনাকে প্রভাবিত করবে। তাকে বলা হয়েছিল, তিনি একটি ন্যাশনাল কেসে প্রধান সন্দেহভাজন। তাই তাকে সেলফ কাস্টডিতে থাকতে হবে। তাকে বহির্বিশ্ব থেকে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বলা হয়েছিল।
ব্য়াঙ্ক থেকে টাকা তুলতে বলা হয়েছিল
সেলফ কাস্টডিতে মোবাই ক্যামেরা অন করে রাখার সময় তাঁকে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলতে পাঠানো হয়েছিল। কোনওক্রমে ব্যাঙ্কিংয়ের সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় জালিয়াতদের কাছে টাকা পৌঁছয় না। এই সময়ে বন্ধু, পরিচিত কারও ফোন তুলছিলেন না অঙ্কুশকে। এমনকী এই অপরাধ থেকে মুক্তি পাওয়া জন্য তার বাড়ির লোকজন, তারও ক্ষতি হওয়ার ভয় দেখিয়েছিল স্ক্যামাররা। তাকে বলা হয়েছিল বাড়ির নীচে তার সিকিউরিটি রয়েছে। যারা তার ওপর কড়া নজর রাখছে। এই শুনে ভয়ে কাঁদতে হয়েছিল জনপ্রিয় এই ইউটিউবারকে।
কীভাবে পরিত্রাণ পেলেন
বার বার বন্ধুদের কল হোয়াটসঅ্যাপ না ধরায় এক সময় তার ঘরে চলে আসে বন্ধু , পরিচিতরা। যাদেরকে বাড়ি থেকে পাঠিয়ে দিতে অর্ডার দেয় প্রতারকরা। বাধ্য হয়ে ভীত মুখেই তিনি বলেন, আমি ভাল আচিতোরা একন বাড়ি যা। দরজা থেকেই সবাইকে সরিয়ে দেওয়ায় সন্দেহ হয় পরিচিতদের। এরপরই আসে সেই হোয়্যাটসঅ্য়াপ। যেখানে এক বন্ধু বলে, অঙ্কুশ তুই কোনও ধরনের হাউজ অ্যারেস্টে রয়েছিস ? এটা একটা ফ্রড। এই শুনেই মাথা ঘুরে যায় বহুগুণার। পরবর্তীকালে সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কাহিনি তুলে ধরেন নিজের ইনস্টাগ্রামে।
Pan Card Scam: প্যান কার্ডে নতুন প্রতারণা ! এই ফাঁদে পা দিচ্ছেন ?