Personal Finance: হোম লোন সম্পর্কে নানাবিধ নিয়ম-কানুন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্তৃক বারেবারে জানানো হয় নাগরিকদের সচেতনতার জন্য। কিন্তু তা সত্ত্বেও বেশ কিছু বিষয়ে সাধারণ মানুষের ভুল ধারণা এখনও রয়ে গিয়েছে। এই ভুল ধারণার (Home Loan) কারণে বড় বড় আর্থিক সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে এবং অপ্রয়োজনীয় খরচ বেড়ে (Personal Finance) যেতে পারে আপনার। সমাজমাধ্যমের যুগেও অনেকেই এই ৭ ভুল ধারণা রাখেন হোম লোন সম্পর্কে। আপনিও কি এমনই মনে করেন ? হোম লোন নেওয়ার আগে এই ভুল ধারণা দূর করে নিন।
১) নিখুঁত ক্রেডিট স্কোর ছাড়া লোন মেলে না
অনেকে এখনও মনে করেন যে ৭৫০ বা তার বেশি ক্রেডিট স্কোর না থাকলে ব্যাঙ্ক লোনের অনুমোদনই দেয় না। তবে এটা ঠিক যে ভাল ক্রেডিট স্কোর থাকলে ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, তবে অনেক ঋণদাতা ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৬৫০ ক্রেডিট স্কোরেও ঋণ দিয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে সুদের হার খানিক বেশি হবে।
২) নির্দিষ্ট সুদের হারে লোন নিলেই সুবিধে
অনেক নাগরিক মনে করেন যে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার সময় ফিক্সড ইন্টারেস্ট রেটে নিলেই সুবিধে হবে, পরে সুদের হার বাড়লেও তাঁর ইএমআই বাড়বে না। কিন্তু অন্যদিকে ফ্লোটিং ইন্টারেস্ট রেটে ঋণ নিয়ে থাকলে সুবিধে হবে আপনার সবথেকে বেশি। কারণ আগামী দিনে সুদের হার কমলে সেই সুবিধে আপনি পাবেন। তবে আগামী কয়েক বছরে বাজারের গতি প্রকৃতি অনুধাবন করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার।
৩) শুধু ব্যাঙ্ক থেকেই পাওয়া যায় হোম লোন
অনেকে মনে করেন হোম লোন নিতে হলে কেবলমাত্র ব্যাঙ্ক থেকেই পাওয়া যাবে বা ব্যাঙ্কেই কেবলমাত্র আবেদন করতে হবে। এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। নন-ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল সংস্থা এবং হাউজিং ফিনান্স সংস্থাগুলিও দ্রুত হোম লোনের আবেদন মঞ্জুর করে থাকে। এক্ষেত্রে ঋণের অনেক কাস্টমাইজড বিকল্পও পান গ্রাহকরা, থাকে ফ্লেক্সিবিলিটিও।
৪) পেনাল্টি ছাড়া আগাম ঋণ শোধ করা যায় না
ফ্লোটিং ইন্টারেস্ট রেটে ঋণের ক্ষেত্রে এই নিয়ম এখন আর প্রযোজ্য নয়। আরবিআইয়ের নির্দেশিকা অনুসারে, ব্যাঙ্কগুলি কোনও ব্যক্তির অ-ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নেওয়া ফ্লোটিং ইন্টারেস্ট রেটের হোম লোনে ফোরক্লোজার কিংবা প্রি-পেমেন্টের চার্জ বাতিল করেছে।
৫) দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ নেওয়া ভাল কারণ এতে ইএমআই কম থাকে
ঋণের ইএমআই হিসেব করার সময় ঋণের মেয়াদ যত বাড়ানো হয় ততই ইএমআই কমতে থাকে। এতে মাসিক খরচের দিক থেকে দেখলে অনেক সুবিধে হয় নাগরিকের। কিন্তু এই কম ইএমআই থাকার পরেও মেয়াদ বাড়ার কারণে আপনাকে অনেক বেশি টাকা সুদ হিসেবে দিতে হবে ব্যাঙ্ককে। ফলে যত দ্রুত আপনি আপনার ঋণ মেটাবেন তত আপনার কম সুদ দিতে হবে।
৬) বেতনভোগী ব্যক্তিরাই কেবল ঋণ পান
বেতনভোগী ব্যক্তিদের জন্য ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধে রয়েছে, এটা ঠিক। কিন্তু তাই জন্য পেশাদার বা সেলফ এমপ্লয়েড ব্যক্তিরা ঋণ পাবেন না, এমন নয়। ব্যাঙ্ক এবং এনবিএফসিগুলি সেলফ এমপ্লয়েড ব্যক্তিদের জন্য আলাদা ঋণের সুবিধে দিয়ে থাকে। কেবলমাত্র সেই ঋণ মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে নানাবিধ নথি যাচাই করার দরকার পড়ে।
৭) ঋণ মঞ্জুর হওয়ার পরে সুদের হার আর বদলায় না
এই ধারণাও সম্পূর্ণ ভুল। কেউ যদি ফিক্সড ইন্টারেট রেটে ঋণ নিয়ে থাকে, তবেই তার সুদের হারে কোনও বদল হবে না। কিন্তু কেউ যদি ফ্লোটিং ইন্টারেস্ট রেটে সুদ নিয়ে থাকে, তাহলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রেপো রেট বাড়ানো বা কমানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই সুদের হারও বাড়বে বা কমবে।