নয়াদিল্লি: বিশ্বের তাবড় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার চাকা ঘুরত তাদের টাকায়। স্টার্টআপ শুরু করতে ঋণের জন্য লাইন পড়ত রোজ। মুখ থুবড়ে পড়েছে সেই সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক। ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সঙ্কটের পর এই নিয়ে দ্বিতীয় বার এত বড় কোনও ব্য়াঙ্ক মুখ থুবড়ে পড়ল। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কার্যত সব শেষ। হুড়মুড়িয়ে সকলে বিনিয়োগ তুলে নেওয়াতেই এত বড় বিপর্যয় বলে মনে করা হচ্ছে (Silicon Valley Bank)। 


বুধবার থেকেই সিলিকন ভ্যালি কার্যত তলিয়ে যেতে বসেছিল


বুধবার থেকেই সিলিকন ভ্যালি কার্যত তলিয়ে যেতে বসেছিল। ব্যালান্স শিটের জন্য সেই সময়ই ২২৫ কোটি ডলার প্রয়োজন ছিল তাদের। কিন্তু তাতে বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলির মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয় বলে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। তড়িঘড়ি সব সংস্থাকে টাকা তুলে নিতে বলা হয়, এমন খবর মিলেছে (Bank Collapse)। 


জানা গিয়েছে, সিলিকন ভ্যালির স্টার্টআপ সংস্থাগুলি একে একে জমা টাকা তুলে নিতে শুরু করে। তাতে মরিয়া চেষ্টা চালাতে ১৮০ কোটি ডলার ক্ষতি করে সব বন্ড বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় সিলিকন ভ্যালি স্টার্টআপ। এর পরই বৃহস্পতিবার সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের শেয়ার ৬০ শতাংশ নিচে চলে যায়। রাত হতে হতে তা প্রায় ৭০ শতাংশে গিয়ে ঠেকে।


পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সাময়িক ভাবে সিলিকন ভ্যালি ব্য়াঙ্কের স্টক আটকে দেওয়া হয়। ফার্স্ট রিপাবলিক, প্যাকওয়েস্ট ব্যাঙ্কর্প, সিগনেচার ব্যাঙ্কের শেয়ারও আটকে রাখা হয়। কোনও ভাবেই শেষরক্ষা হয়নি শেষ মেশ। তাতে অ্যাটলান্টিক মহাসাগরের দুই পারেই রাতারাতি কয়েকশো কোটি ডলার কার্যত তলিয়ে যায়। 


আরও পড়ুন: Meta Layoffs: ফের কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা মেটা সংস্থার, এবার কোপ নন-ইঞ্জিনিয়ারদের উপর


বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি আটকাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিলিকন ভ্য়ালি ব্যাঙ্কের সম্পদ নিলামে তুলবে। মুখ থুবড়ে পড়ার সময় সিলিকন ভ্যালি ব্য়াঙ্কের মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ২০ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। বিনিয়োগ ছিল ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের। সঙ্কটের ২৪ ঘণ্টা আগেও সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের সিফ এগজিকিউটিভ অফিসার গ্রেগ পেকার গ্রাহকদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন। সকলকে শান্ত থাকতে বলেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।


মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার শেয়ার বাজার যখন রক্তাক্ত হচ্ছে, সেই সময় সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক থেকে ৪২০০ কোটি ডলার তুলে নেন গ্রাহকরা, ভারতীয় মুদ্রায় যা ৩ লক্ষ ৪৪ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা। এই ঘটনা স্টার্ট আপগুলির জন্য অস্তিত্ব সঙ্কটের বলে মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।


হাই-প্রোফাইল গ্রাহক-তালিকায় ছিল শপিফাই, জিপরিক্রুটারের মতো সংস্থা


সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের হাই-প্রোফাইল গ্রাহক-তালিকায় ছিল শপিফাই, জিপরিক্রুটারের মতো সংস্থা। এই বিপর্যয়ের প্রভাব স্টার্টআপ তো বটেই, ঋণতাদা সংস্থাগুলিকেও প্রভাবিত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।