নয়াদিল্লি: ১-২ কোটি টাকা নয়। প্রায় নব্বই হাজার কোটি টাকা। ঠিক এতটাই ঋণের টাকা ফেরত পায়নি আমাদের দেশের ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি। তারা কারা? কারা বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েও ফেরত দেয়নি? সেই তালিকাই জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রক। 


মঙ্গলবার রাজ্যসভায় একটি প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৮৭ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা ঋণ ফেরত পায়নি ব্যাঙ্কগুলি। ৫০টি সংস্থার তালিকা দেওয়া হয়েছে যারা ইচ্ছাকৃত ভাবে ঋণখেলাপি হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রথম ১০টি সংস্থারই Schedule Commercial Bank (SCB)-এর কাছে ৪০,৮২৫ কোটি টাকা ঋণখেলাপ রয়েছে।


কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে RBI-এর প্রভিশনাল ডেটা অনুযায়ী, গত পাঁচটি অর্থবর্ষে SCBগুলি ১০,৫৭,৩২৬ কোটি টাকা written off করেছে অর্থাৎ খাতা থেকে মুছে ফেলেছে। কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, 'RBI বলেছে ২০২৩ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ওই ৫০টি সংস্থার কাছে ব্য়াঙ্কগুলির ৮৭ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে।'


কারা রয়েছে এই তালিকায়:
ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের তালিকায় সবার উপরে রয়েছে পলাতক মেহুল চোকসির সংস্থা গীতাঞ্জলি জেমস (Gitanjali Gems). ব্যাঙ্কগুলি ওই সংস্থার কাছ থেকে পায় ৮৭৩৮ কোটি টাকা। তারপরেই রয়েছে Era Infra Engineering Limited, এর দেনা ৫৭৫০ কোটি। তারপরে REI Agro Limited- দেনার পরিমাণ ৫১৪৮ কোটি টাকা, রয়েছে ABG Shipyard Limited- দেনার পরিমাণ ৪৭৭৪ কোটি টাকা, রয়েছে Concast Steel and Power Limited- এদের দেনার পরিমাণ ৩৯১১ কোটি টাকা। এছাড়াও ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের তালিকায় রয়েছে Rotomac Global Private Limited- দেনার পরিমাণ ২৮৯৪ কোটি টাকা, Winsome Diamonds and Jewellery- ব্যাঙ্কগুলি এই সংস্থার কাছ থেকে ২৮৪৬ কোটি টাকা পায়। এছাড়াও তালিকায় রয়েছে ফ্রস্ট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড (২৫১৮ কোটি টাকা), শ্রী লক্ষ্মী কটিসিন লিমিটেড (২১৮০ কোটি টাকা), এবং জুম লিমিটেড (২০৬৬ কোটি টাকা)।


কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী আরও জানান যে, ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই) ভারতীয় ব্যাঙ্কস অ্যাসোসিয়েশনকে (আইবিএ) পরামর্শ দিয়েছে যে ব্যাঙ্কগুলি ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধে নিষ্পত্তির লক্ষ্য়ে পদক্ষেপ করতে পারে। 


এই ধরনের ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ঠিক কী রকম ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তার গাইডলাইন রয়েছে RBI-এর। এই তালিকায় থাকা কোনও ঋণখেলাপিকে কোনওরকম সুযোগসুবিধা দেওয়া যাবে না। এই সংস্থা এবং সেগুলির উদ্যোগপতি বা প্রোমোটারদের কোনও নতুন উদ্যোগের জন্য ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়ার পরের ৫ বছর কোনওরকম আর্থিক সুবিধা দেওয়া যাবে না। 


আরও পড়ুন: ভারতীয় সেনায় পাকিস্তানি নাগরিক? CBI-কে কী নির্দেশ হাইকোর্টের