নয়াদিল্লি ও কলকাতা: কমছে কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদের হার। পেট্রোল-ডিজেল-রান্নার গ্যাসের দামও বাড়ানো হতে পারে বলে আশঙ্কা। এই অবস্থায়, PF’র সুদ কমার সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। EPF’র সুদ কমা নিয়ে ভিন্নমত বঙ্গ বিজেপিতে। 


৪ রাজ্যে বিজেপির লান্ড স্লাইড ভিকট্রি। সেই জয়ের দিনই ইঙ্গিতপূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে যুদ্ধের জেরে বিশ্ব বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গ।  ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধের উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন, ভারতের অর্থনীতি ও সরবরাহ-শৃঙ্খলে এর  প্রভাব পড়তে পারে। তিনি বলেছিলেন, এক্ষেত্রে যে চ্যালেঞ্জ এসেছে, তার মোকাবিলায় অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ও দরিদ্রদের সহায়তা করতে ভারত বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সতর্কতার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে।  যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, এর প্রভাব সমস্ত উন্নয়নশীল দেশগুলিতে দেখা যাচ্ছে। যুদ্ধরত দেশগুলির সঙ্গে অর্থনীতি ও আমদানি সব গভীর সংযোগ রয়েছে। অশোধিত তেলের দাম ও সানফ্লাওয়ারের দাম দ্রুত বাড়ছে। বাড়ছে কয়লা ও সারের দামও। 


 ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের আবহে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম আকাশ ছুঁলেও ভারতে একটানা ১২৬ দিন ধরে পেট্রোল-ডিজেলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এই অবস্থায়, বিভিন্ন মহলে আগে থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, আগে যখন তুলনামূলকভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কম ছিল, তখন ভারতে পেট্রোল-ডিজেল-রান্নার গ্যাসের দাম হু হু করে বাড়ানো হচ্ছিল। কিন্তু, ৫ রাজ্যে ভোট ঘোষণার ঠিক আগে হঠাৎ করে পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়া বন্ধ হয়ে যায়। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম আরও বাড়া সত্ত্বেও ভারতে বাড়ানো হয়নি।হঠাৎ করে এই প্রবণতা কেন?এটা কি সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা? না কি উত্তরপ্রদেশ-সহ ৫ রাজ্যের ভোটের জন্যই পেট্রোল-ডিজেল-রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়নি?ভোটারদের মধ্যে যাতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া না পড়ে তার জন্যই কি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে?


এখন ৫ রাজ্যের ভোটের ফল বেরিয়ে গেছে।খুব তাড়াতাড়ি কোনও রাজ্যে ভোটও নেই।তাই কি এবার পেট্রোল-ডিজেল-রান্নার গ্যাসের দাম এক লাফে অনেকটাই বাড়ানো হতে পারে?রান্নার তেলের দামেরও কি ফের আকাশ ছোঁয়ার ভ্রুকুটি?


এই আশঙ্কার মধ্যেই শনিবার সংবাদ সংস্থা PTI জানিয়েছে, কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদের হার রেকর্ড কমছে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটা উদ্বেগজনক ও বিপজ্জনক সিদ্ধান্ত। ৪ রাজ্যে বিজেপির তথাকথিত জয়ের উপহার দেওয়া হল দেশবাসীকে। সিদ্ধান্তের কঠোর নিন্দা করেছে সিপিএম। দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ক্রমশ দাঁত-নখ বের করা হচ্ছে। 


EPF’র সুদে রেকর্ড কোপের পর বিরোধীদের আক্রমণের মুখে অস্বস্তিতে বিজেপি। রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন,  শুধু সংগঠিত ক্ষত্র নয়, অসংগঠিক ক্ষেত্র ও প্রান্তিক মানুষরা আছেন...ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করা হয়েছে। অন্যদিকে, সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, এতে মধ্যবিত্ত মানুষের সমস্যা হবে, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করব আগামী দিনে এটা বাড়িয়ে আবার ৮.৫ করার জন্য।


সব মিলিয়ে, EPF’র সুদ কমানো নিয়ে রাজনৈতিক তরজার মধ্যেই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উৎকণ্ঠা আরও বাড়ছে সাধারণ মানুষের।