মুম্বই: চিনের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এবার ড্রাগনের বছর। যে ঐতিহাসিক প্রাণীর কথা দেশি-বিদেশি রূপকথার গল্পের বইতেই পড়েছি আমরা। বিশ্বের কাছে চিনের (China) অন্যতম পরিচয় যে প্রাণীর জন্য, সেই অদ্ভুত দর্শন জীবের নামে উৎসর্গকৃত বছরেই তাদের মুখে যেন চুনকালি লাগিয়ে দিল ভারত (India)! এমনিতেই করোনা পরবর্তী সময়ে চিনের বিশ্বাসযোগ্যতা বিশ্বজুড়েই হুহু করে কমেছে। ২০২০ সালের আগে তাদের বন্ধু থাকা দেশগুলি এখন আর ততটা বিশ্বাস করে না বলেই আন্তর্জাতিক মহলে খবর। মালদ্বীপের মতো দু-একটা দেশ বাদ দিলে শি চিনপিং-এর সরকারের উপর ভরসা খুব একটা নেই নাকি কারও। যার প্রভাব পদে পদে পরিলক্ষিত হচ্ছিল চিনের অর্থনীতিতেও। এতদিন কানাঘুষোয় ড্রাগনদের ভাঁড়ারের হাল খারাপ বলে শোনা গেলেও এবার তার জলজ্যান্ত প্রমাণ পাওয়া গেল। বেজিং (Beijing)-কে টপকে এশিয়ায় বিলিওনিয়ারদের রাজধানীর (Asia’s billionaire capital) শিরোপা ছিনিয়ে নিল মুম্বই (Mumbai)। সেই সঙ্গে ঢুকে পড়ল আর্থিকভাবে এগিয়ে থাকা বিশ্বের প্রথম তিনটি শহরের তালিকাতেও। কোটিপতিদের হাত ধরে হলেও ভারতের অর্থনীতি (Indian economy) যে বাড়ছে প্রমাণ দিল।
সম্প্রতি হুরান গ্লোবাল রিচ লিস্ট ২০২৪ (Hurun Global Rich List 2024) প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, রেকর্ড গতিতে উত্থান হয়েছে ভারতের কোটিপতিদের। গতবছরের তুলনায় এই বছর প্রায় ১০০ জন বিলিওনিয়ার বেরিয়েছে দেশ থেকে। আর বেজিং-কে টপকে এশিয়ায় বিলিওনিয়ারদের রাজধানীর তকমা ছিনিয়ে নিয়েছে ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বই। সেই সঙ্গে পৌঁছে গেছে বিশ্বে আর্থিকভাবে এগিয়ে থাকা শহরগুলির তিন নম্বর স্থানে। এই সাফল্যের সৌজন্যে চিন ও আমেরিকার পর ভারত বিলিওনিয়ারদের তৃতীয়তম স্থানে থাকা দেশে।
হুরানের প্রকাশিত হওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে চিনের রাজধানী বেজিংয়ে যখন ৯১ জন বিলিওনিয়ার রয়েছেন তখন ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বইয়ে বসবাস করছেন ৯২ জন। আসলে মুম্বই হল বিশ্বের সবথেকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাওয়া বিলিওনিয়ারদের শহর। এই বছরই সেখানে নতুন করে ২৬ জন বিলিওনিয়ারদের তালিকায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। যার সৌজন্যেই মুম্বই বিশ্বের তৃতীয় ও এশিয়ায় বিলিওনিয়ারদের শহরের রাজধানীতে পরিণত হয়েছে। তবে শুধু মুম্বই নয়, নয়াদিল্লিও ইতিহাসে প্রথমবারের মতন ঢুকে পড়েছে আর্থিকভাবে এগিয়ে থাকা বিশ্বের টপ ১০টি শহরের মধ্যে। আর প্লাম বিচ, ইস্তানবুল, মেক্সিকো সিটি এবং মেলবোর্ন স্থান পেয়েছে প্রথম ৩০টি শহরের মধ্যে। গত বছরের তুলনায় মুম্বইয়ের সম্পদ যেখানে ৪৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে সেখানে বেজিং-এর কমেছে ২৭ শতাংশ। এই বছর চিনে যেখানে ৫৫ জন নতুন বিলিওনিয়ার উঠে এসেছেন সেখানে ভারত সাক্ষী থেকেছে নতুন ৯৪ জন বিলিনিয়ারের উত্থানের।
ওই লিস্ট অনুযায়ী, রিলায়েন্সের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুকেশ আম্বানি তাঁর সম্পদে আরও ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যোগ করে এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির তকমা ধরে রেখেছেন। পাশাপাশি, একমাত্র ভারতীয় হিসেবে রয়েছেন বিশ্বের প্রথম ১০ জন ধনীর তালিকাতেও। অন্যদিকে, গৌতম আদানির সম্পদ এবার ৬২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর তিনি মোট ৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নিয়ে রয়েছেন বিশ্বের ১৫তম ধনীর স্থানে।