নয়াদিল্লি: অতিমারি (COVID Pandemic) সঙ্গে নিয়ে কেটে গিয়েছে দু’বছর। ভয়াবহতা কিছুটা কমলেও, এর হাত থেকে নিষ্কৃতীর লক্ষণ এখনও দেখা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগ তো দূর, সংসার চালাতেই হিমশিম কাচ্ছেন একাট বড় অংশের মানুষ। ঘরে ঘরে চাকরি গিয়েছে, চাকরি যা-ও বা টিকেছে, আয়ের অঙ্ক কমেছে। অথচ পেট্রল, ডিজেল, নিত্যপণ্যের দাম যেমন বেড়েছে, তেমনই বাড়তি ওষুধের খরচ যোগ হয়েছে। তাই করোনা না ছুঁলেও, প্রাণ কার্যতই ওষ্ঠাগত হওয়ার জোগাড়। এমন পরিস্থিতিতে ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ (Union Budget 2022) হতে চলেছে সংসদে। তাকে ঘিরে আশায় বুক বাঁধছেন সাধারণ মানুষ।
এ বারের বাজেট নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও ইঙ্গিত মেলেনি কেন্দ্রের তরফে। তবে কর্মসংস্থান, করছাড় স্বাস্থ্যখাতে খরচ কমানোর উপর জোর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান ফেরাতে তাঁরা যে বিষয়গুলির উর জোর দিচ্ছেন, তা হল
কর সরলীকরণ
সাধারণ মানুষকে মুক্তি দিতে গত বার করগ্রহণের প্রক্রিয়াকে আরও সরল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে বই সরল হয়নি। বর্তমানে ৫.২ শতাংশ, ১০.৪ শতাংশ, ১৫.৬ শতাংশ, ২০.৮০ শতাংশ, ২৬ শতাংশ, ৩১.২ শতাংশ, ৩৪.৩২ শতাংশ, ৩৫.৮৮ শতাংশ এবং ৪২.৭৪৪ শতাংশ হারে, আয়ের নিরিখে মোট ১০টি করকে ভাগ করেছে কেন্দ্র। অতিমারিতে বিধ্বস্ত মানুষকে রেহাই দিতে তাবডড শিল্পপতি এবং বিত্তশালীদের করের হার বাড়ানোর সুপারিশ করছেন অনেকে। ১০টি ধাপ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ, ১৫ শতাংশ, ২০ শতাংশ, ২৫ শতাংশ, ৩০ শতাংশ এবং ৩৫ শতাংশ হারে কর বেঁধে দেওয়াও উচিত বলে মত তাঁদের।
করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো
বার্ষিক করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে ২ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ৩ লক্ষ করার পরামর্শ দিচ্ছেন অনেকে। তাঁদের মতে, বিগত কয়েক বছর ধরে সংখ্যাটা একই রয়ে গিয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি এবং বর্তামনে জীবনধারণের খরচ ৫ শতাংশ বেড়ে যাওয়াকে মাথায় রেখে এর সীমা বাড়ানো উচিত।
আরও পড়ুন: FD Interest Rate: এফডি করার আগে জেনে নিন, এই ব্যাঙ্কগুলি দিচ্ছে সবথেকে বেশি সুদ
কোভিড বন্ডে কর শিথিল
রাজস্বে ঘাটতি পূরণের লক্ষ্য যেমন রয়েছে, তেমনই অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোও সমান জরুরি বলে মন্ করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই পরিকাঠামোয় সরকারকে হাত খুলে খরচ করতে হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। কোভিড বন্ডের মাধ্যমে ন্যূনতম সুদে তিন থেকে পাঁচ বছরের জন্য টাকা তোলার পরামর্শ দিচ্ছেন অনেকে। তাঁদের মতে, কোভিড বন্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কর ছাড়ের দিকটিও দেখতে হবে। তাতে অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানো যেমন সম্ভব হবে, তেমনই সুদে মেটাতে হাত ফাঁকা হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও কম।
বাড়ি থেকে কাজে ভাতা
করোনায় ‘ওয়র্ক ফ্রম হোম’ স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার হাইব্রিড মোডেও কাজ চলছে, অর্থাৎ কর্মীদের একাংশ অফিস থেকে এবং অন্য অংশ বাড়ি থেকে কাজ করে চলেছেন। সে ক্ষেত্রে বাড়িতেই অফিসের মতো উন্নত ইন্টারনেট পরিষেবা, ল্যাপটপ, প্রিন্টার, আরামদায়ক চেয়ার এবং ডেস্কের ব্য়বস্থা থাকা প্রয়োজন। আয়কর আইনে এই সমস্ত সুবিধার জন্য যে কর রয়েছে, তা লাঘব করার পক্ষে অনেকে। আবার করছাড় দেওয়ার পরিবর্তে নির্দিষ্ট অঙ্ক বরাদ্দ করে দেওয়া যায় বলেও মনে করছেন তাঁরা।
ক্রিপ্টোকারেন্সিতে স্বচ্ছতা
অর্থনীতি ডিজিটাল হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি, করোনা কালে ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রতিও আগ্রহ বেড়েছে মানুষের। ভারতের প্রায় ২ কোটি মানুষ ক্রিপ্টোয় প্রায় হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছেন। তাই ক্রিপ্টোর উপরও কর সংক্রান্ত বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলছেন অনেকে।