নয়াদিল্লি: ট্রেন দুর্ঘটনা এখন কার্যতই নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়লেও, কেন্দ্রীয় বাজেটে রেলের জন্য তেমন কোনও বড় ঘোষণাই হল না। রেলের জন্য বাড়তি কোনও বরাদ্দও করল না কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। বরং এই নিয়ে পর পর দু’বছর রেলের বাজেট বরাদ্দ একই অঙ্কে আটকে রইল, ২.৫২ লক্ষ কোটি টাকায়। (Budget 2025)

Continues below advertisement

শনিবার সংসদে তৃতীয় মোদি সরকারের প্রথম বাজেট পেশ হয়। সেখানে রেলের জন্য মোট বরাদ্দ নিয়ে কিছু জানাননি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তবে বক্তৃতার পর সাংবাদিক বৈঠকে রেলের বাজেট বরাদ্দ প্রকাশ করা হয়, তাতে এর বিশদ উল্লেখ ছিল। আগের বছরের মতে, ২০২৫-’২৬ অর্থবর্ষেই রেলের জন্য একই পরিমাণ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বাজেটে। ট্রেনযাত্রায় নিরাপত্তার কথা যদিও উল্লেখ করা হয়েছে বাজেটে। কিন্তু দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ যে রেলের উপর নির্ভরশীল, তার বাজেট বরাদ্দ কেন বাড়ানো হল না, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। (Budget Allocation for Indian Railways)

২০২৫-’২৬ব অর্থবর্ষে রেলমন্ত্রকের অভ্যন্তরীণ ও অতিরিক্ত বাজেট সম্পদ (IEBR)-ও একই রয়েছে, ১৩০০০  কোটি টাকা। ২০২৪-’২৫ সালেও তা একই ছিল। ২০২৩-’২৪ সালে ছিল ৫২,৭৮৩ কোটি টাকা। Indian Railway Finance Corporation-সব বিভিন্ন অর্থনৈতিক সংগঠনের মাধ্যমে এই ফান্ডের ব্যবস্থা করা হয়। বলা হয়েছে, ২০২৫-’২৬ সালে বাজেট বরাদ্দর ২.৫২ লক্ষ কোটি থেকেই খরচখরচা চালানো হবে। 

Continues below advertisement

রেলের লাইন পাততে, ওয়াগন, সিগনাল ট্রেন তৈরিতে এবং বিদ্যুৎসংযোগ স্থাপনেই খরচ হবে ওই টাকা। কিন্তু রেল নিয়ে কোনও উল্লেখযোগ্য ঘোষণাই হল না এবারের বাজেটে। রেল নিয়ে কোনও আলোচনাই হল না সংসদে। আর তাতেই রেলের তিনটি স্টক-RVNL, IRCTC, IRCON-এ পতন দেখা গিয়েছে। 

চলতি সপ্তাহে সংসদে ২০২৪-’২৫ সালের যে অর্থনৈতিক সমীক্ষা পেশ করা হয়, তাতে দেখা যায় রেল নেটওয়র্কারে বিস্তার ১০ শতাংশ কমে এসেছে। ২০২৩-’২৪ সালের এপ্রিল-নভেম্বরের থেকে বেড়েছে ওয়াগন, লোকোমোটিভের সংখ্য়া। ২০২৩-’২৪ সালে ৪১টি বন্দেভারত ট্রেন বেরোয়, ২০২৪-’২৫ অর্থবর্ষের অক্টোবর মাস পর্যন্ত ১৭টি। সবমিলিয়ে এই মুহূর্তে দেশে ৬৮টি বন্দেভারত ট্রেন চলছে। ২০২৩-’২৪ সালে ৪৫৬টি বন্দেভারত ট্রেনের কামরা তৈরি হয়, ২০২৪-’২৫ সালে ২২৮টি।

২০১৭ সাল পর্যন্ত রেলের জন্য পৃথক বাজেট ছিল। মূল বাজেটের কয়েকদিন পর সংসদে সেটি পেশ করা হতো। ১৯২৪ সাল থেকে এই রীতি চলে আসছিল। কিন্তু ২০১৭-’১৮ অর্থবর্ষে সেই রীতিতে ছেদ পড়ে। নীতি আয়োগের তদানীন্তন সদস্য বিবেক দেবরায়ের সুপারিশেই পৃথক রেল বাজেট তুলে দিয়ে, মূল বাজেটর অন্তর্ভুক্ত করা হয় সেটিকে।