নয়াদিল্লি: পরবর্তী লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha Elections 2024) এগিয়ে আসছে। তার আগে সংসদে পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ। তাকে ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে (Union Budget 2023 )। অতিমারি উত্তর পর্বে মধ্যবিত্তদের রেহাই দিতে সরকারি কী পদক্ষেপ করে, তা দেখার জন্য মুখিয়ে সকলে। কিন্তু এতকিছুর মধ্যে শিক্ষা নিয়ে উদ্বেগের কারণ থেকেই যাচ্ছে। কারণ বিগত সাত বছরে শিক্ষাখাতে কেন্দ্রের বরাদ্দ কমেছে। ২০২২-’২৩ অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, গত সাত বছরে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ ১০.৪ শতাংশ থেকে কমে ৯.৫ শতাংশ হয়েছে (Education Expenditure)।


অতিমারি উত্তর পর্বে মধ্যবিত্তদের রেহাই দিতে সরকারি কী পদক্ষেপ করে, তা দেখার জন্য মুখিয়ে সকলে


অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, সামাজিক পরিষেবা খাতে গত কয়েক বছরে বরাদ্দ বাড়িয়েছে কেন্দ্র। ৯ লক্ষ ১৫ হাজার ৫০০ থেকে বরাদ্দ বেড়ে হয়েছে ২১ লক্ষ ৩২ হাজার ০৫৯ কোটি টাকা। কিন্তু শিক্ষাখাতে খরচ কমেছে। এর জন্য অতিমারি পরিস্থিতিতেও দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের মতে, করোনা কালে স্বাস্থ্যখাতে খরচ বাড়াতে গিয়ে, টান পড়েছে শিক্ষাখাতে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯-’২০ অর্থবর্ষ থেকে শিক্ষাখাতে খরচ ১০.৭ শতাংশ থেকে কমে করোনার প্রথম বছরে ৯.১ শতাংশে এসে ঠেকে। ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে তা একটু বেড়ে ৯.৫ শতাংশ হয়েছে। অর্থাৎ দেশের মোট অভ্যন্তরীণ বৃদ্ধির নিরিখে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বেড়েছে মাত্র ০.১ শতাংশ, গত সাত বছরে ২.৮ থেকে বেড়ে হয়েছে ২.৯ শতাংশ।


শিক্ষাখাতে সরকার হাত খুলে খরচ করছে না যেমন, তেমনই করোনা পরবর্তী কালে স্কুলছুটের সংখ্যা নিয়েও উদ্বেগ কাটেনি পুরোপুরি। ২০১৯-’২০ সালে প্রাথমিকে স্কুলছুটের সংখ্যা ছিল ১.৫ শতাংশ, ২০২০-’২১ সালে তা কমে ০.৮ শতাংশে গিয়ে ঠেকলেও, ২০২১-’২২ সালে ফের বেড়ে হয় ১.৫ শতাংশ। তবে ২০১৩-’১৪ সালে স্কুলছুটের হার ছিল ৪.৭ শতাংশ, সেই তুলনায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।


আরও পড়ুন: Union Budget 2023 Live: আজ সংসদে বাজেট পেশ, অর্থমন্ত্রকে পৌঁছলেন নির্মলা সীতারামন


অন্য দিকে, উচ্চ প্রাথমিকে ২০১৯-’২০ সালে স্কুলছুটের হার ছিল ২.৬ শতাংশ। তার পরের বছর আরও কমে ২.৩ শতাংশ হয়। কিন্তু ২০২১-’২২ সালে স্কুলছুটের হার আরও বেড়ে হয় ৩ শতাংশ। মাধ্যমিক স্তরে যদিও পরিসংখ্যান স্বস্তিজনক। ২০১৯-’২০ সালে যেখানে স্কুলছুটের হার ছিল ১৬.১ শতাংশ, ২০১৯-’২০ অর্থবর্ষে কমে ১৪ শতাংশ হয়। গত বছর আরও কমে ১২.৬ শতাংশে এসে ঠেকে।


তবে ২০১২-’১৪ থেকে ২০২১-’২২ অর্থযা বর্ষের মাঝামাঝি সময়ে দেশে মোট স্কুলের সংখ্যা ১৫.২ লক্ষ থেকে কমে ১৪.৯ লক্ষ হয়। এর মধ্যে প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা কমেছে প্রায় ১ লক্ষ। মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরের স্কুলের সংখ্যা ৬০ হাজার বেড়ে হয়েছে ২.৩ লক্ষ।


দেশের মোট অভ্যন্তরীণ বৃদ্ধির নিরিখে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বেড়েছে মাত্র ০.১ শতাংশ


উচ্চশইক্ষার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ২০১৪ সালে দেশে মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা ছিল ৩৮৭। ২০২২ সালে তা বেড়ে ৬৪৮ হয়েছে। এমবিবিএস-এ আসনসংখ্যাও ৫১ হাজার ৩৪৮ থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৬ হাজার ০৭৭। তবে সরকারি এবং বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের পৃথক পরিসংখ্যান মেলেনি। আবার ২০১৪ সালে দেশে । শনের আইআইটি-র সংখ্য়া যেখানে ১৬ ছিল, এখন তা বেড়ে ২৩ হয়েছে। ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের সংখ্যা বেড়ে ২০ থেকে ৩০ হয়ছে। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইনফর্মেশন টেকনোলজির সংখ্যা ২৫,   যা ২০১৯ সালে ছিল নয়টি। দেশে মোট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ৭২৩, এখন যা ১ হাজার ১১৩।