গত ২২ জানুয়ারি নিফটি সূচক বন্ধ হয় ১৪৩৭০ অঙ্কে। এক সপ্তাহ পর একই সূচকের মান দাঁড়ায় ১৩৬৩৪। যেখানে বাজেট পূর্ববর্তী সময়ে বিভিন্ন সরকারি ঘোষণা বা বরাতের কথা ভেবে রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে। তবে সব সময়ে যে এই চেনা ছকে বাজার চলে তাও নয়। একথা মনে করিয়ে দিয়ে শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞ সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘এবার কোভিড পরিস্থিতেও শেয়ার বাজারে বিদেশি বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছিল। যে কারণে বাজার আগেই রেকর্ড উচ্চতা ছুঁয়ে ফেলে। প্রত্যাশা পূরণ করে ডিসেম্বর কোয়ার্টারে বিভিন্ন সংস্থা ভাল ফলও করে। এবার বিদেশি লগ্নিকারীরা কিছু মুনাফা নিতেই বাজারে ক্রেতার অভাব দেখা দিয়েছে। যে কারণে সূচকের পতন। এখন বাজেট যদি লগ্নিকারীদের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয় তা হলে শয়ার বাজারের সূচকের আরও পতন দেখা যেতে পারে।’
বাজারের পতনের নেপথ্যে আরও একটি কারণ মনে করিয়ে দিয়েছেন বাজার বিশেষজ্ঞ অরিন্দম সাহা। তাঁর মতে, পিই রেশিওর অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণেই পতন। ‘বাজার অস্বাভাবিক উচ্চতায় উঠে যাওয়ার পর ঠিক বাজেটের আগে পতনের পর বাজারে সামঞ্জস্য ফিরেছে। এখন সূচক কিছুটা নেমে যাওয়ার পর বাজেট পরবর্তী সময়ে বাজার উর্ধমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’ জানালেন অরিন্দম সাহা। বাজেট পূর্ববর্তী বাজার নিম্নগামী হলেও ফের ঊর্ধমুখী হবে বলেই তিনি মনে করেন।
লগ্নিকারীরা কি এখন তা হলে বাজেটের দিকেই তাকিয়ে? আপাতত বাজার কোন পথে তা কি পুরোপুরি নির্ভর করছে বাজাটের ওপরে? বাজেটে প্রত্যাশা পূরণ না হলে আপাতত বাজারের পতন কি অবশ্যম্ভাবী? এই প্রশ্নে সিদ্ধার্থবাবু বললেন, ‘দুটো জিনিস হতে পারে। (বাজেট) পছন্দ না হলে বাজার আহত হবে। যদি অসুবিধের (কোভিড পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক মন্দা) কথা ভেবে ধার করে ইনফ্রাসট্রাকচার গ্রোথ সহ অন্য কিছু সরকার করতে পারে তা হলে লগ্নিকারীরা পছন্দ করবে। সুতরাং যারা মুনাফা তুলিছিল তারা ক্রেতা হয়ে দাঁড়াবে। কালকে যদি কোনও 'স্টিমুলাস' আসে তবে কয়েক দিনের মধ্যে বাজার আবার ওপরের দিকে চলতে আরম্ভ করবে।’
সুতরাং সাময়িকভাবে হলেও শেয়ার বাজার যে এখন পুরোপুরি বাজেটের দিকে তাকিয়ে তা বলায় যায়। প্রত্যাশা পূরণ না হলে বাজারের নিম্নগতি আরও ত্বরান্বিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বাজারের লগ্নিকারীদেরও এখন পাখির চোখ আগামিকালের বাজেট।