কলকাতা: মূল্যবৃদ্ধি থেকে বেকারত্ব- ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদি সরকারের (Modi Govt) শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে (Union Budget 2023) মিলবে সুরাহা? চাকুরিজীবীদের স্বস্তি দিয়ে বাড়ানো হবে আয়কর ছাড়ের (Income Tax) ঊর্ধ্বসীমা? কৃষক সমস্যার সমাধান কতটা হবে? করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে অর্থনীতিকে (Economy) চাঙ্গা করতে দাওয়াই মিলবে এবারের বাজেটে? সেদিকেই নজর দেশবাসীর। বাজেটের হালুয়ার মিষ্টত্বের ছোঁয়া কি লাগবে মধ্যবিত্তর জীবনে? আম আদমির জন্য থাকবে সুখবর? আয়করে মিলবে আরও ছাড়? দ্বিতীয় মোদি সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশের আগে এই প্রশ্নগুলোই উঁকি দিয়ে যাচ্ছে সবার মনে। 


২০২৪-এ লোকসভা ভোট। আগামী বছর তার আগে ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশ হবে। অর্থাৎ লোকসভা ভোটের আগে এটাই মোদি সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। যা নিয়ে নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তর প্রত্যাশার পারদ ক্রমেই চড়ছে। করোনার ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কী দাওয়াই দেবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন? মূল্যবৃদ্ধিতে নাজেহাল সাধারণ মানুষের সুরাহার জন্য কী ফর্মুলা সামনে আনবেন তিনি?


বেশ কয়েক বছর ধরে চাকুরিজীবীদের কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর দাবি পূরণ হয়নি। এবার কি সেই দাবি পূরণ হবে? করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ভয়ঙ্কর হয়েছে বেকারত্ব! সেই জ্বালায় মলম দিতে পারবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী? গত কয়েক বছর দেশে আয়কর কাঠামোয় কোনও বদল আসেনি। তেমন কোনও পদক্ষেপ কি দেখা যাবে এবারের বাজেটে? গাড়ি, বাড়ির ঋণ কিংবা স্বল্প সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে আর্থিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর কি কোনও সম্ভাবনা আছে?


ওয়াকিবহাল মহলের মতে, উচ্চবিত্তের আয়ের উপরে অতিরিক্ত সেস বা সারচার্জ বসিয়ে মধ্যবিত্তকে কিছুটা সুবিধা দিতে পারেন নির্মলা। জীবনবিমা-সহ বিভিন্ন বিনিয়োগে (৮০সি) ছাড়ের মাত্রা বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা করা হতে পারে। এর ফলে আয়কর বাঁচানোর পাশাপাশি মধ্যবিত্তের সঞ্চয়ের সুযোগও বাড়তে পারে।


আরও পড়ুন, বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা দেখা দিলেও, সুবিধাজনক জায়গায় থাকবে ভারত, জানাল IMF


অন্যদিকে, কৃষি আইন রদ হওয়ার পরে, কৃষকদের মন জয়ে বাজেটে কি কোনও বিশেষ পদক্ষেপ নিতে দেখা যাবে মোদি সরকারকে? কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের আগে মঙ্গলবার অর্থনৈতিক সমীক্ষা রিপোর্ট সংসদে পেশ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তাতে একাধিক সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, আগামী অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির হার কিছুটা কমতে পারে। ৬ থেকে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধির হার বজায় থাকতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। যা চলতি আর্থিক বর্ষে ৭ শতাংশের ঘরে থাকবে বলে অনুমান করা হয়েছে।


রিপোর্টে উল্লেখ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে জিনিসপত্রের দাম লাফিয়ে বেড়েছে। তা আগের অবস্থায় এখনও ফেরেনি। কেন্দ্রের আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০২২ সালে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে গত ৩-৪ দশকে সর্বাধিক মূল্যবৃদ্ধি দেখা গেছে। সেখানে ভারত মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানতে সফল। বিরোধীদের সমালোচনার মুখেও অবশ্য বাজেট নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণের ব্যাপারে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী।


তিনি বলেন, 'আমাদের দেশের অর্থমন্ত্রীও মহিলা, তিনি কাল সংসদে আরেকটি বাজেট পেশ করবেন দেশের সামনে। আজকে বিশ্বের যা পরিস্থিতি, ভারতের বাজেটের দিকে শুধু দেশের নয়, গোটা বিশ্বের নজর থাকবে। বিশ্বের যা আর্থিক পরিস্থিতি, ভারতের বাজেট ভারতের মানুষের আশা-আকঙ্খাকে পূরণ করার চেষ্টা যেমন করবে, তেমনই বিশ্ব যে আশার কিরণ দেখছে, তা আরও প্রস্ফুটিত হবে। আমার পূর্ণ ভরসা আছে, নির্মলা সীতারামন এই আকাঙ্খা পূরণের চেষ্টা করবে।' 


শেষ অবধি সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা কতটা পূর্ণ হল, তা জানা যাবে সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বাজেট পেশের পরই।