কলকাতা: ফের নোট বাতিল! বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পয়লা অক্টোবর থেকে ২ হাজার নোট বাতিলের ঘোষণা করল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। ব্যাঙ্কগুলিকেও আর ২ হাজারের নোট না দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২ হাজারের নোট মিলবে না এটিএমেও। ২৩ মে থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বদলে নেওয়া যাবে ২ হাজার টাকার নোট। 


এ প্রসঙ্গে এদিন কংগ্রেসের প্রবীণনেতা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত কিছুটা প্রত্যাশিতই। ২০০০ হাজারের নোট তেমন জনপ্রিয় হয়নি কোনও সময়ই। ২০১৬ এর নভেম্বরেই আমরা এটি বলেছিলাম। ২০০০ হাজার টাকার নোট আনতে ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল করাটা বোকামির পরিচয়। কারণ ওই দুটি নোট ছিল দেশের জনপ্রিয় কারেন্সি। ৫০০ হাজারের নোট চালু করলেও ১০০০ টাকা আর বাজারে আনা হল না। এরপর সরকার বা আরবিআই যদি আগামি দিনে নতুন করে ১০০০ টাকার নোট নিয়েও আসে আমি অবাক হব না।


চালু করেও এবার বাতিলের পথে ২ হাজার টাকার নোট। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্তের খবর পেতে ওয়েবসাইটে ভিড় জমতে শুরু করে। সেই সময় আচমকাই ক্র্যাশ করে যায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ওয়েবসাইটটি।  এই খবরের সত্যতা ও বিস্তারিত জানতে rbi.org.in-এ প্রবেশের চেষ্টা করেন গ্রাহকরা। কিন্তু ট্রাফিকের জেরে ক্র্যাশ হয়ে যায় পেজটি। 


এই ঘোষণার পরই এএটিএম এবং পেট্রোল পাম্পেও ভিড় দেখা যায়। শুক্রবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়ে দেয়, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৈধ থাকবে ২ হাজার নোট।  পয়লা অক্টোবর থেকে এটির আর কোনও মূল্য থাকবে না। অর্থাৎ চালু হওয়ার ৭ বছরের মধ্যে বাতিল করতে হল ২ হাজার টাকার নোট।


এর আগে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জানিয়েছিলেন, 'RBI-এর বার্ষিক রিপোর্ট অনুসারে, ২০১৯-২০ সাল থেকে ২০০০ টাকার নোটের সরবরাহের জন্য কোনও চাহিদা নেই। এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরেও, সরকার সংসদে জানিয়েছিল যে ২০১৮-১৯ সাল থেকে ২০০০ টাকার নোট ছাপানোর জন্য কোনও নতুন আদেশ দেওয়া হয়নি, তাই ২০০০ টাকার নোট এর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।


রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই সিদ্ধান্তে কী প্রভাব পড়তে পারে বাজারে? 


এ প্রসঙ্গে এবিপি আনন্দকে বাজার বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্ত বলেন, 'অর্থনীতিতে বিশেষ প্রভাব পড়বে বলে আমার মনে হয় না। কারণ ইতিমধ্যেই ২০০০ এর নোট ছাপা আরবিআই বন্ধ করে দিয়েছিল। নোট ইন সার্কুলেশন ধীরে ধীরে অবলুপ্তির পথেই গিয়েছিল। ব্যাঙ্কের এটিএম কিংবা কাউন্টারেও পাওয়া যাচ্ছিল না। গ্রাহকদের চাহিদায় কেবল তা দেওয়া হত। সমস্যা একটাই অনেক মধ্যবিত্তর কাছে হয়ত এই টাকা রয়ে গেছে। তবে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। ডিমনিটাইজেশনের কালো সময় হয়ত ফিরবে না। ব্যাঙ্কের কর্মীদের সচেষ্ট হতে হবে। এখন অনেকটাই সময় আছে হাতে। 


তিনি এও বলেন, কী কারণে এই নোট বাতিল হল তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারণ, যখন এই নোট চালু করা হয়েছিল তখন বলা হয়েছিল এখানে চিপ জাতীয় কিছু থাকবে। আগামী দিনে জাল ২০০০ নোটের বাড়বাড়ন্ত রুখতে। সাধারণ মানুষ এই নোট নিতে আকৃষ্ট হতেন না। খুচরো ব্যবসায়ীদের জন্যও এই নোট সমস্যা তৈরি করেছিল।