সন্দীপ সরকার, কলকাতা: তখন সদ্য দেশের মাটিতে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ জিতেছে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির (MS Dhoni) টিম ইন্ডিয়া। ফাইনালের অন্যতম নায়ক তিনি। তাঁর হাতেই দলের নড়বড়ে জাহাজের হাল তুলে দিলেন শাহরুখ খান-জুহি চাওলারা।


আর দায়িত্ব নেওয়ার এক বছরের মধ্যে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে (KKR) আইপিএল চ্যাম্পিয়ন করলেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। ২০১২ সালে প্রথম আইপিএল খেতাবের স্বাদ পেল কেকেআর। ২ বছর পর আবার নাইটরা আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হল গৌতির নেতৃত্বেই। ২০১৪ সালে। বেঙ্গালুরুতে রূপকথার ফাইনালে পাঞ্জাব কিংসকে হারিয়ে।


সেই শেষ। তারপর থেকে দেখতে দেখতে প্রায় ৯ বসন্ত পার। নাইট শিবিরে আর আইপিএল ট্রফি ঢোকেনি। গম্ভীরও এখন নতুন ভূমিকায়। লখনউ সুপার জায়ান্টসের মেন্টর তিনি। ইডেন গার্ডেন্সে আইপিএলের ম্যাচে অ্যাওয়ে টিমের ডাগ আউটে বসছেন গম্ভীর, কেকেআর সমর্থকদের কাছেও যেন অপ্রত্যাশিত দৃশ্য।


কিন্তু আইপিএল এমনই। আজ যে সতীর্থ, কাল সেই প্রতিপক্ষ। আজ যে ভরসা, কাল সেই উদ্বেগের কারণ।


গম্ভীরও এখন কেকেআরের নির্ভরতা নন, বরং সবচেয়ে বড় কাঁটা। ইডেনের উইকেট চেনেন হাতের তালুর মতো। তাঁর মগজাস্ত্র নাইটদের গেমপ্ল্যান ওলটপালট করে দিতে পারে।


এবিপি লাইভের প্রশ্নে লখনউ সুপার জায়ান্টসের বোলিং কোচ মর্নি মর্কেল শুক্রবার বলছিলেন, 'গৌতির অভিজ্ঞতা ড্রেসিংরুমে বিরাট প্রাপ্তি। বিশেষ করে এখানকার পরিবেশ-পরিস্থিতিতে। আমরা জানি এই পিচ থেকে কী প্রত্যাশিত। দারুণ উইকেট। আইপিএলের অন্যতম সেরা। তবু আমি মনে করি কারও অভিজ্ঞতা যদি ড্রেসিংরুমের উত্তেজনা কমিয়ে শান্ত, দৃঢ় মনোভাব আনতে পারে, বড় ম্যাচের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে পারে, তাহলে সেটা গৌতি। সব ধরনের পরিস্থিতি দেখেছে। কোনও ক্রিকেটার যদি ওর বুদ্ধি নিয়ে প্রথম ৬ ওভার কাজে লাগাতে চায়, তাহলে সোনা ফলাবে।' মর্নি নিজেও তিন মরসুম কেকেআরে কাটিয়েছেন। ইডেনের পরিবেশ-পরিস্থিতি নিয়ে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল। তবু গম্ভীরে অগাধ আস্থা লখনউ শিবিরের।


কেকেআরের মহাগুরু চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত যদিও প্রতিপক্ষ ডাগ আউটে গম্ভীরের উপস্থিতিকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ। বললেন, 'ওটা কোনও ব্যাপার নয়। মাঠের বাইরে থেকে মনে হয় না খুব একটা ফ্যাক্টর হবে। আর কে কোন ড্রেসিংরুমে থাকল, তা কোনও দলকে সুবিধা করে দিল কি না, এরকম চর্চা বরাবর হয়। ম্যাচে তার কোনও প্রভাব পড়তে দেখিনি।'


যাঁকে নিয়ে এত চর্চা, সের গম্ভীর কিন্তু নীরব। নিঃশব্দে ইডেনে প্রবেশ করলেন। বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ার আগে পর্যন্ত ক্রুণাল পাণ্ড্য, মার্কাস স্টোইনিসদের প্রস্তুতির তত্ত্বাবধান করলেন। বৃষ্টি নামতেই মাঠ ছাড়লেন।


কেকেআর শিবিরের কারও সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করতে দেখা গেল না। নীতীশ রানা হোক বা চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত, কারও সঙ্গে করমর্দন করতে দেখা গেল না।


মেন্টর গম্ভীর হয়তো সব প্রশ্নের জবাব মাঠেই দিতে চান।


আরও পড়ুন: প্রচণ্ড গরম থেকে শরীরকে বাঁচাতে পাতে রাখুন এই খাবারগুলি


আরও পড়ুন: কোহলিদের বিরাট জয়ে কোণঠাসা কেকেআর, প্লে অফে যেতে হলে চাই অলৌকিক ফল