নয়াদিল্লি: রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনায় ভারতকে ‘শুল্ক-শাস্তি’ দিয়েছেন। কিন্তু চিনের ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করতে নারাজ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বরং শুল্ক নিয়ে চিনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে সময় আরও বাড়ালেন তিনি। শুল্ক নিয়ে আরও ৯০ দিনের জন্য ‘শুল্ক-শান্তি’তে সম্মত হয়েছে দুই দেশ। এই সময়ের মধ্যে চিনা পণ্যের উপর আমেরিকা যেমন শুল্ক চাপাবে না, তেমনই আমেরিকার পণ্যের উপর শুল্ক চাপাবে না চিনও। আমেরিকার পণ্যের উপর যে বাড়তি ২৪ শতাংশ শুল্ক চাপানোর ঘোষণা করেছিল, তা আপাতত স্থগিত রাখছে বেজিং। (Donald Trump)
নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আগামী ১০ নভেম্বর রাত ১২টা বেজে ১ মিনিট পর্যন্ত চিনের উপর চড়া শুল্ক চাপানো স্থগিত রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ওই সময় পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে সব ক্ষেত্রে শান্তি বজায় থাকবে। এর পর, চিনের বাণিজ্য মন্ত্রক জানায়, তারাও আগামী ৯০ দিন আমেরিকার উপর কোনও শুল্ক চাপাবে না। আমেরিকার বিভিন্ন সংস্থার উপর যে বাড়তি শুল্কের ঘোষণা হয়েছিল, তাও স্থগিত থাকবে। (US-China Trade)
ট্রাম্প জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে চিনের সঙ্গে আলোচনা চলছে আমেরিকার। দুই দেশের জাতীয় ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িয়ে এখানে। বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ইচিবাচক পদক্ষেপ করতে উদ্যত হয়েছে চিন। আমেরিকার উদ্বেগগুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে তারা। শুল্ক নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই আলোচনা চলছে। ফলে তিন সংখ্যার শুল্ক, পাল্টা শুল্কের হুঁশিয়ারি দেওয়া হলেও, তা কার্যকর হয়নি এখনও পর্যন্ত। বরং আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সূত্র না বের হওয়া পর্যন্ত ‘শুল্ক-শান্তি’ বজায় রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মঙ্গলবার পর্যন্ত এর আগে সেই সময়সীমা নির্ধারিত হয়েছিল, যা আরও বাড়ল।
আরও ৯০ দিন ‘শুল্ক-শান্তি’ বজায় রাখার অর্থ, চিনা পণ্যের উপর আপাতত ১৪৫ শতাংশ শুল্ক চাপাচ্ছে না আমেরিকা। অন্য দিকে, আমেরিকার পণ্যের উপরও ১২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানো থেকে বিরত থাকছে চিন। অর্থাৎ এই মুহূর্তে যে বোঝাপড়া রয়েছে, সেই অনুযায়ী, চিনা পণ্যের উপর ৩০ শতাংশ শুল্ক নিচ্ছে আমেরিকা। আমেরিকার পণ্যের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক নিচ্ছে চিন। শীঘ্রই দুই দেশ বাণিজ্যচুক্তিতে পৌঁছতে সফল হবে বলে আশাবাদী গোটা পৃথিবী।
চিনের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে গত সপ্তাহেই আশা প্রকাশ করেন ট্রাম্প। তিনি জানান, সমঝোতার খুব কাছাকাছি রয়েছে দুই দেশ। সব কিছু ঠিকঠাক মিটে গেলে বছরের শেষে চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি।
দ্বিতীয়বার আমেরিকার মসনদে ফেরার পরই শুল্ক নিয়ে অতি সক্রিয় হয়ে উঠেছেন ট্রাম্প। চিনের সঙ্গেও সেই নিয়ে সংঘাত বাধে তাঁর। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সুইৎজারল্যান্ডের জেনিভায় দুই দেশের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা শুরু হয়। এর আগে, মে মাসে ৯০ দিনের ‘শুল্ক-শান্তি’র ঘোষণা হয়। জুলাইয়ের শেষে ফের আলোচনা শুরু হলে, সেই সময়সীমা আরও বাড়ানোর সুপারিশ আসে। সেই মতোই ট্রাম্প সময়সীমা বাড়ানোর ঘোষণা করলেন। তবে চিন এবং ভারত, দুই দেশই রাশিয়ার থেকে তেল কেনে। কিন্তু ভারতকে নিয়ে ট্রাম্প কড়া অবস্থান নিলেও, চিনের ক্ষেত্রে ধীরে সুস্থে এগোচ্ছেন।