নয়াদিল্লি: ২০১৬-র ৮ নভেম্বর নোটবাতিলের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তারপর পাঁচ বছর কেটে গিয়েছে। এরইমধ্যে বাজারে নগদের যোগান বেড়েই চলেছে। তবে এরইমধ্যে ধীর গতিতে এলেও ডিজিটাল লেনদেনও বাড়ছে। এখন আগের তুলনায় আগের তুলনায় অনেক বেশি মানুষ ক্যাশলেস লেনদেনকে বেছে নিয়েছেন।তবে নগদের ব্যবহার কমেনি। এমনই খবর সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের।
নোট বাতিলের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল, নগদের ঢালাও ব্যবহার বন্ধ করে ডিজিটাল লেনদেনে গুরুত্ব আরোপ করা। কিন্তু নগদের ব্যবহার কমেনি। বিশেষ করে, গত অর্থ বছরে নগদের পরিমাণ বেড়েছে। করোনা বিপর্যয়ের কারণে স্বাভাবিক জনজীবন ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিভিন্নভাবে ব্যাহত হওয়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে নগদ রাখার প্রবণতা দেখা দিয়েছে।
সরকারি তথ্য, প্ল্যাস্টিক কার্ড, নেট ব্যাঙ্কিং, ইউনিফায়েড পেমেন্টস ইন্টারফেসের মতো বিভিন্ন মোডে ডিজিটাল লেনদেনে বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (এনপিসিআই)-এর ইউপিআই দেশে লেনদেনের একটা বড় মাধ্যম হয়ে উঠেছে। কিন্তু এরপরও নগদের ব্যবহারে ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত রয়েছে।
পাঁচ বছর আগে পুরানো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সংবাদসংস্থার খবর অনুসারে, ডিজিটাল লেনদেন জনপ্রিয় হওয়ায় নগদের ব্যবহারে কিছুটা হলেও লাগাম পরানো গিয়েছে। যদিও নগদের ব্যবহারে বাড়বাড়ন্ত অব্যাহতই রয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-র ৪ নভেম্বর নোটবাতিলের আগে নগদের পরিমাণ ছিল ১৭.৭৪ লক্ষ কোটি টাকা। ২০২১-র ২৯ নভেম্বরে এর পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ২৯.১৭ লক্ষ কোটি টাকা।
২০২০-এর ৩০ নভেম্বরের ২৬.৮৮ লক্ষ টাকা থেকে নগদের পরিমাণ ২০২১-এর ২৯ অক্টোবরে ২,২৮,৯৬৩ কোটি টাকা বেড়েছে। ২০২০-র ৩০ অক্টোবর বছরে নগদের বৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ৪,৫৭,০৫৯ কোটি টাকা। ২০১৯-র ১ নভেম্বর পর্যন্ত এক বছরে নগদের পরিমাণ বেড়েছিল ২,৮৪,৪৫১ কোটি টাকা। ব্যাঙ্ক নোটের মূল্য ও পরিমাণ ২০১৯-২০-র যথাক্রমে ১৪.৭ শতাংশ ও ৬.৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২০-২১ এ হয়েছে যথাক্রমে ১৬.৮ শতাংশ ও ৭.২ শতাংশ। ২০২০-২১ এ মানুষের হাতে নগদের পরিমাণ বেড়েছে কোভিড অতিমারী পরিস্থিতিতে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে।
২০১৪-র অক্টোবর থেকে ২০১৬-র অক্টোবর পর্যন্ত নগদের বার্ষিক গড়় বৃদ্ধির হার ছিল ১৪.৫১ শতাংশ।
সংসদের শেষ অধিবেশনে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, অর্থনীতিতে ব্যাঙ্কনোটের পরিমাণ সার্বিকভাবে নির্ভর করে জিডিপি বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, নগদহীন লেনদেনের বৃদ্ধির মতো বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। ২০২০-২১ এর কোভিড বিপর্যয়ের বছর ছাড়া দেশের অর্থনীতি ইতিবাচক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।