সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি: যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বদলে যাচ্ছে মানুষের চিন্তাধারা। হ্যাচব্যাকের পরিবর্তে এখন ছোট বা মাইক্রো এসইউভির দিকে ঝুঁকছে দেশবাসী। দেশের রাস্তায় চলাচল বা পার্কিংয়ে সুবিধা হওয়ায় এখন ট্রেন্ডিংয়ে স্মল এসইউভি (Small SUV)।
সাব কমপ্যাক্ট এসইউভি ছেড়ে এখন এই ছোট গাড়ির দিকেই ছুটছে ক্রেতারা। তাই সাব ফোর মিটার এসইউভি হুন্ডাই ক্রেটা, কিয়া সোনেটের (Kia Sonet) জায়গা দখল করে নিয়েছে রেনোঁ কাইগারের (Renault Kiger) মতো ব্র্যান্ড। সম্প্রতি সেই তালিকায় নাম লিখিয়েছে টাটার মাইক্রো এসইউভি পাঞ্চ (Tata Punch)। দেখে নিন প্রতিযোগিতার দৌড়ে দুই গাড়ির মধ্যে এগিয়ে কে ?
দর্শনে এগিয়ে কে ?
রেনোঁ কাইগার(Renault Kiger) ও টাটা পাঞ্চ(Tata Punch) দুই গাড়িতেই রয়েছে সাম্প্রতিককালের এলইডি হেডল্যাম্প ও ডিআরএলস-এর বৈশিষ্ট্য। যার ফলে গাড়ি ছোট হলেও রাস্তায় অনেকটাই বড় এসইউভির মতো দেখায় এই চার চাকা। দুটো এসইউভিতেই দেওয়া হয়েছে, রুফ রেইলস ও ক্ল্যাডিং। দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে কাইগার পাঞ্চের থেকে সামান্য বড়। তবে তাতে বড় কিছু ফারাক চোখে পড়বে না। ১৬ ইঞ্চির অ্যালোয় হুইল ছাড়াও গাড়িগুলিতে দেওয়া হয়েছে ডুয়েল টোন কালার অপশন।
ভেতর থেকে কেমন দেখতে গাড়ি ?
গাড়ির ভিতর একাধিক রং দেওয়ায় অনেক বেশি নজর কাড়বে টাটার পাঞ্চ। যদিও পুরো ড্যাশবোর্ড জুড়ে রয়েছে সাদা প্যানেল। এয়ার ভেন্টসেও রং দিয়েছে টাটা। পাঞ্চের তুলনায় অনেক বেশি ছিমছাম ইন্টিরিয়র রেনোঁ কাইগারের। কালো ড্যাশবোর্ড হওয়ায় স্পোর্টি দেখতে হয়েছে গাড়ির কেবিন। ইন্স্ট্রুমেন্ট ক্লাস্টারের দিকে দিয়ে গাড়ির ড্যাশবোর্ডের মাঝে বড় স্ক্রিন দিয়েছে কাইগার। অন্য দিকে পাঞ্চে একটি অংশে রয়েছে এই ডিজিটাল ইনস্ট্রুমেন্ট ক্লাস্টার।
দুই গাড়িতেই ইন্টিরিয়রের গুণমান ভদ্রস্থ। কেবিনে বড় ভালো জায়গা রয়েছে। শুধু কেবিন নয়, বড় বুট স্পেস রয়েছে দুই এসইউভিতেই। তবে বুটস্পেসের তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে থাকবে রেনোঁ কাইগার। ফিচারের দিক থেকে পাঞ্চে রয়েছে ৭ ইঞ্চির টাচ স্ক্রিন। সেখানে ৮ ইঞ্চির স্ক্রিন দেওয়া হয়েছে কাইগারে। সাধারণ ফিচারের দিক থেকে স্মার্টফোন কানেক্টিভিটি, ক্লাইমেট কন্ট্রোল, রেয়ার ভিউ ক্যামেরা, ক্রুজ কন্ট্রোল রয়েছে দুটি গাড়িতেই। কাইগারে আলাদা করে রয়েছে অ্যাম্বিয়েন্ট লাইটিং, স্মার্টফোন ওয়্যারলেস চার্জিংয়ের সুবিধা।
কোন গাড়িতে কী ইঞ্জিন ?
টাটার পাঞ্চে দেওয়া হয়েছে ১.২ লিটারের পেট্রোল ইঞ্জিন। যা ৮৩ হর্স পাওয়ার ও ১১৩ নিউটন মিটার টর্ক প্রোডিউস করে। এই ইঞ্জিনেই ৫ স্পিড ম্যানুয়াল ও অটোমেটিক গিয়ারবক্স দিয়েছে কোম্পানি।কাইগারে ১.০ লিটারের পেট্রোল ইঞ্জিনে রয়েছে ৭২ হর্স পাওয়ার ও ৯৬ নিউটন মিটারের টর্ক। যাতে ৫ স্পিড ম্যানুয়াল ও অটোমেটিক গিয়ারবক্স দিয়েছে রোনোঁ। পাশাপাশি এরই একটা টার্বো পেট্রোল ইঞ্জিন ভার্সন রয়েছে কাইগারে। যেখানে ১০০ হর্স পাওয়ার ছাড়াও ১৬০ নিউটন মিটার টর্ক প্রোডিউস করে ইঞ্জিন। ৫ স্পিড ম্যানুয়াল ছাড়াও CVT অটোর সুবিধা রয়েছে এই ইঞ্জিনে। স্ট্যানডার্ড পেট্রোল ইঞ্জিনে ভদ্রস্থ পারফরম্যান্স দেয় পাঞ্চের ইঞ্জিন। তবে কাইগারে টার্বো মোটর দেওয়ায় অনেকটাই এগিয়ে থাকে এই মোটর। সিভিটি থাকায় আরও গাড়ি চালানো সহজ হয় চালকের। পাঞ্চে এই সুবিধা না থাকলেও এএমটি ট্র্যাকশন মোডের সুবিধা দেওয়া হয়েছে টাটার এই মাইক্রো এসইউভিতে। যা লো ট্র্যাকশনের সময় গাড়ির চালককে সাহায্য করে।
দুই গাড়ির দাম
পাঞ্চের দাম শুরু হচ্ছে ৫.৪ লক্ষ টাকা থেকে। যার সেরা মডেলের দাম ৯.৩লক্ষ টাকা। সেখানে কাইগারের গাড়ির দাম শুরু হচ্ছে ৫.৬ লক্ষ টাকা থেকে। যার টপ ভ্যারিয়েন্টের দাম ৯.৮ লক্ষ টাকা। তবে এসবই গাড়ির এক্স শোরুম প্রাইস। এই দামের মধ্যে পাঞ্চ খুব ভালো অপশন হতে পারে ক্রেতাদের জন্য। যেখানে ভালো স্পেসের সঙ্গে এই গাড়িতে রয়েছে 'অফ রোডিং'য়ের সুবিধা। সেইদিক দিয়ে কাইগার একটু বেশি দামি। তবে এতে অনেক বেশি ফিচার ও পারফরম্যান্স পাওয়ার অপশন রয়েছে।
আরও পড়ুন Honda Rebel 500: রয়্যাল এনফিল্ডের সঙ্গে হবে টক্কর, ভারতে নতুন ক্রুজার বাইক আনছে হোন্ডা