আজকের দিনে ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে সন্তানের শিক্ষা।  তাই আগেভাগেই ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যৎ গড়ার বিষয়ে নজর দিচ্ছেন অভিভাবকরা। সেই ক্ষেত্রে সন্তানের শিক্ষাই হয়ে উঠেছে তাদের মূল লক্ষ্য। সন্তানকে সেরা স্কুল ও সুযোগ দেওয়ার লক্ষ্য়েই পরিকল্পনা করেন বাবা-মা। শিক্ষাই যে তাদের ছেলে-মেয়েদের কাছে সেরা উপহার হয়ে উঠতে পারে, তা বিলক্ষণ বুঝে গিয়েছেন তাঁরা। শিক্ষাই যে সবকিছু, তা ভারতীয় হিসাবে আমাদের মধ্যে দৃঢ়ভাবে গেঁথে গিয়েছে। যে কারণে আমরা আমাদের সন্তানদের নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের জন্য সেরা স্কুলে দেওয়ার চেষ্টা করি।

তবে সন্তানের শিক্ষা অভিভাবকদের কাছে মূল অগ্রাধিকারের বিষয় হলেও তার ব্যয় এখানে মূল চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সন্তানকে সেরা শিক্ষা দিতে তহবিলের একটা বড় অংশ ব্যয় করতে হয় বাবা-মাকে। সেই লক্ষ্যপূরণে সুষ্ঠু আর্থিক পরিকল্পনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  আপনার যদি সন্তান থাকে, তাহলে যত তাড়াতাড়ি এই সন্তানের শিক্ষার জন্য আর্থিক পরিকল্পনা করবেন, তত মঙ্গল। আপনি যদি আপনার সন্তানকে সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বিদেশে পাঠাতে চান সেই ক্ষেত্রে আর্থিক পরিকল্পনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে ক্রমশই বেড়ে চলেছে শিক্ষার খরচ, তাই আগেভাগে এই পরিকল্পনা করা উচিত অবিভাবকদের।

এই উদাহরণের দিকে নজর দিন 

ধরা যাক, রবি কুমারের ৩ বছরের সন্তান রয়েছে। ১৫ বছরের মধ্যে স্নাতক হবে তাঁর সন্তান। রবি কুমার চান, তাঁর সন্তানকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পাঠাতে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে রবি কুমারের তাঁর সন্তানকে স্নাতক পাশ করাতে ৫ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে, সেই ক্ষেত্রে ১৫ বছরের পর ছেলে বা মেয়েকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পাঠাতে কত খরচ হতে পারে তাঁর।

ছেলের বয়স       ৩ বছর
আজকের দিনের হিসেবে শিক্ষার খরচ                              ৫ লক্ষ টাকা
গ্রাজুয়েশনের জন্য হাতে সময়        ১৫ বছর
মুদ্রাস্ফীতির হার    ৭.৫ শতাংশ (প্রতি বছর) 
গ্র্যাজুয়েশন কোর্সের সময় খরচ        ১৫ বছর
প্রতি মাসে রবি কুমারকে বিনিয়োগ করতে হবে  ৪,১৮০ টাকা

 

ওপরের তালিকাতেই আপনি বুঝতে পারছেন, মুদ্রাস্ফীতির কারণে ১৫ বছর পর সন্তানের শিক্ষার খরচ বেড়ে দাঁড়াবে ১৪.৭৯ লক্ষ টাকা। তাই সন্তানের শিক্ষার লক্ষ্যপূরণে প্রতি মাসে ৪,১৮০ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে রবি কুমারকে। ধরে নিতে হবে, বছরে ১২ শতাংশের রিটার্নের ভিত্তিতে আয় করেন রবি কুমার । কোনও কারণে সন্তানের শিক্ষার পরিকল্পনার আরও পাঁচ বছর দেরি করলে রবি কুমারকে প্রতি মাসে দ্বিগুণের বেশি ৯০৭৯ টাকা দিতে হবে।

একইভাবে, মনে রাখতে হবে, আপনার সন্তানের সর্বোত্তম শিক্ষা নিশ্চিত করতে আপনাকে আর্থিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে।আপনি যদি এখনই পরিকল্পনা করেন, তাহলে সম্ভবত আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ বা তার স্বপ্নের সঙ্গে আপস করতে হবে না। তাতে সন্তানের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বজায় থাকবে।

 

HDFC Life Sanchay Fixed Maturity Plan গ্যারান্টিযুক্ত সুবিধা সুরক্ষিত করতে পারে। এই জীবন বিমা পলিসি আপনার ও প্রিয়জনের আর্থিক নিরাপত্তা  সুরক্ষিত ও নিশ্চিত করে।

HDFC Sanchay Fixed Maturity Plan-এ আপনার কী বিনিয়োগ করা উচিত ?

১ নিশ্চিত রিটার্ন - প্ল্যানটি মেয়াদপূর্তিতে নিশ্চিত রিটার্ন দিয়ে থাকে।

২  প্রিমিয়াম পেমেন্ট কীভাবে - আরেকটি বৈশিষ্ট্য যা এই প্ল্যানটিকে একটি ভাল বিকল্প করে তোলে। যেখানে প্রিমিয়াম পেমেন্ট অপশনের ধরন বেছে নেওয়ার সুবিধা রয়েছে বিনিয়োগকারীর।

৩ মেয়াদ - এই প্ল্যানটি ৪০ বছর পর্যন্ত পলিসির মেয়াদ অফার করে।

৪ জয়েন্ট লাইফ কভার- এই পরিকল্পনাটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে 'জয়েন্ট লাইফ কভার'।

৫ কর- আয়কর আইন অনুযায়ী করের সুবিধা পাওয়া যাবে এই স্কিমে।

 

HDFC Life Sanchay Fixed Maturity Plan-এ বিনিয়োগ করলে কী সুবিধা পাওয়া যাবে ?

ম্যাচিউরিটি বেনিফিট

এই প্ল্যানটি পলিসির শেষে একসঙ্গে বড় তহবিলের নিশ্চয়তা দেয়। 

ম্যাচিউরিটি বেনিফিট-ম্যাচুরিটির উপর বিমা রাশির সমান হয়।

যেখানে, মেয়াদপূর্তিতে বিমাকৃত নিশ্চিত রাশি (বার্ষিক প্রিমিয়াম বা একক প্রিমিয়াম) ছাড়াও গ্যারান্টিযুক্ত ম্যাচিউরিটি মাল্টিপল (GMM)গুণের সমান হয়।

এই ক্ষেত্রে GMM বয়স ও  প্রিমিয়াম দেওয়ার মেয়াদের ওপর নির্ভর করে। 

একবার ম্যাচিউরিটি বেনিফিট দেওয়া হলে পলিসি শেষ হয়ে যায় । সেই ক্ষেত্রে আর কোনও সুবিধা দেওয়া হয় না(জিএমএম)। 

GMM পরিবর্তিত হয় বয়স ও প্রিমিয়াম প্রদানের মেয়াদ অনুসারে। কোম্পানির ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে দেওয়া রয়েছে। 

একবার ম্যাচিউরিটি বেনিফিট দেওয়া হলে পলিসি বন্ধ হয়ে যায়।  এরপরে আর কোনও সুবিধা দেওয়া হয় না।

একাধিক মৃত্যুকালীন সুবিধা

এই পণ্যের একক প্রিমিয়াম পলিসির অধীনে, পলিসিহোল্ডার Death Benefit Multiple (DBM)বেছে নিতে পারেন। সেই ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত দুটি উপায়ে যেকোনও একটিতে একাধিক (DBM)সুবিধা নেওয়া যেতে পারে:

 

Serial No.  DBM under Single Life DBM under Joint Life
1 1.25-1.5x depending on the age of life(s) assured
2 10x  10-15x depending on the age of lives assured

 

এই 'ডেথ বেনিফিট মাল্টিপল' সিঙ্গল প্রিমিয়াম বয়সের ওপর নির্ভর করে। যা আগেই ব্রোশিয়রে দেওয়া হয়েছে।

মনে রাখতে হবে, এই ডিবিএম একক প্রিমিয়ামের ক্ষেত্রে আগেই চুক্তি সেরে নিতে হবে। একবার চুক্তি হয়ে গেলে পরবর্তীকালে পলিসির মেয়াদের মধ্য়ে তা আর বদলে দেওয়া যাবে না।

ডিবিএম পরবর্তীকালে একক প্রিমিয়ামের গুণিতকে বিবেচিত হবে।

তবে নিয়মিত বা সীমিত পে ভ্য়ারিয়েন্টের  জন্য ডিবিএম ১০-এ রাখা হবে। পরে যা বার্ষিক প্রিমিয়ামের গুণিতক হিসাবে ধরা হবে।

মৃত্যুকালীন সুবিধা

সিঙ্গল লাইফ কভারেজ 

পলিসির মেয়াদ চলাকালীন কারও মৃত্যু হলে নিম্নলিখিত মৃত্যুকালীন সুবিধাগুলি দেওয়া হবে। সিঙ্গল লাইফ পলিসির ক্ষেত্রে মনোনীত ব্যক্তিকে বা নমিনিকে মৃত্যুকালীন সুবিধা দেওয়া হবে।

নিম্নলিখিত বিষয়গুলির মধ্যে সর্বোচ্চ হতে হবে:

মৃত্যুর উপর বিমাকৃত অর্থ

মৃত্যুর তারিখ পর্যন্ত দেওয়া মোট প্রিমিয়ামের ১০৫ শতাংশ দেওয়া হবে

পলিসি সারেন্ডারের মূল্য মৃত্যুর তারিখ অনুযায়ী প্রযোজ্য  হবে।

2) মৃত্যুকালীন সুবিধা দেওয়ার পরে পলিসিটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আর কোনও সুবিধা দেওয়া হয় না ৷

জয়েন্ট লাইফ কভারেজ

১) পলিসির মেয়াদ চলাকালীন এক বা একাধিক জনের মৃত্যুর ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত মৃত্যুকালীন সুবিধা দেবে কোম্পানি 

প্রথম জনের মৃত্যুর ক্ষেত্রে: যেকোনও ব্যক্তির মৃত্যুতে প্রদেয় মৃত্যুকালীন সুবিধা হবে এর বেশি

মৃত্যুর উপর বিমাকৃত অর্থ

মৃত্যুর তারিখ পর্যন্ত দেওয়া মোট প্রিমিয়ামের ১০৫ শতাংশ

প্রথম জনের মৃত্যুতে এই সুবিধা প্রদানের পরে পলিসিটি চলতে থাকে। সেই ক্ষেত্রে পরবর্তীকালে জীবিত ব্যক্তির জন্য চলে এই পলিসি। 

দ্বিতীয় জনের মৃত্যুর ক্ষেত্রে : দ্বিতীয় মৃত্যুতে প্রদেয় মৃত্যুকালীন সুবিধা হবে নিচের থেকে বেশি

মৃত্যুর উপর বিমাকৃত অর্থ

ডেথ বেনিফিট মাল্টিপল (পলিসিধারকের দ্বারা বেছে নেওয়া পলিসি)  একক প্রিমিয়াম (প্লাস)কোনও আন্ডাররাইটিং অতিরিক্ত প্রিমিয়াম)

মৃত্যুর তারিখ পর্যন্ত দেওয়া মোট প্রিমিয়ামের ১০৫ শতাংশ

পলিসি সারেন্ডারের মূল্য মৃত্যুর তারিখ অনুযায়ী প্রযোজ্য হবে।

একসঙ্গে দু'জনের মৃত্যু হলে

দু'জনের একসঙ্গে মৃত্যুর ক্ষেত্রে মৃত্যুকালীন সুবিধা প্রথম ও দ্বিতীয় মৃত্যুর জন্য দেওয়া হবে।

মনে রাখতে হবে, বয়সে বড় ব্যক্তির মৃত্যু হলে মৃত্যুকালীন সুবিধা 'প্রথম মৃত্যুর' নিয়ম অনুযায়ী দেবে কোম্পানি।

এই ক্ষেত্রে অল্পবয়সী ব্যক্তির মৃত্যু হলে মৃত্যুকালীন সুবিধা 'দ্বিতীয় মৃত্যু' সুবিধা অনুসারে দেওয়া হবে।

২) দ্বিতীয় ব্যক্তির মৃত্যু হলে একবার সুবিধা দেওয়ার পরে পলিসিটি বন্ধ হয়ে যায়। এর থেকে আরও কোনও সুবিধা পাওয়া যায় না। 

HDFC Life Sanchay Fixed Maturity Plan-এ কাদের বিনিয়োগ করা উচিত ?

যাঁরা ম্যাচিউরিটির সময় নিশ্চিত রিটার্ন পেতে চান তাদের জন্য এই পলিসি আদর্শ হতে পারে। এই পরিকল্পনা জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রয়োজন যেমন শিশুর শিক্ষা, বিবাহ, অবসর গ্রহণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে । এর মাধ্যমে আপনি আর্থিকভাবে প্রিয়জনকে সুরক্ষিত করতে পারবেন।

HDFC Life Sanchay Fixed Maturity Plan-এ কতবার প্রিমিয়াম জমা দিতে হয় ?

HDFC লাইফ সঞ্চয় ফিক্সড ম্যাচিউরিটি প্ল্যান স্কিমে আপনি একবারে, বছরে, ৬ মাস অন্তর, ত্রৈমাসিক ছাড়াও মাসের হিসেবে প্রিমিয়াম পেমেন্ট বেছে নিতে পারেন।

এই বিষয়গুলি মনে রাখা প্রয়োজন

আপনার সন্তানকে ভালোভাবে শিক্ষিত করা একজন অভিভাবক হিসেবে আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বগুলির মধ্যে একটি।

ভুলে যাবেন না, আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে  শিক্ষা অপরিহার্য।

আপনার সন্তানের শিক্ষার প্রতি আপনার দায়িত্ব পালনের জন্য একটি বুদ্ধিমান পদ্ধতি অনুসরণ করুন।

তাই দেরি না করে শীঘ্রই সঞ্চয় ও বিনিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করুন।

এই পলিসিতে বিনিয়োগ করলে সন্তানের শিক্ষার জন্য একটি বড় তহবিল গড়তে পারবেন।

আপনার সন্তানদের খরচ মেটাতে সর্বদা একটি পর্যাপ্ত বিমা কভার বজায় রাখুন (যেমন বিবাহ বা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ)। মনে রাখবেন, সবসময় আপনার বিনিয়োগ ও বিমা তহবিল আলাদা রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ।