Russia-Ukraine War Effect: রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের ধাক্কায় ভারতে মুল্যবৃদ্ধির জেরে নাভিশ্বাস উঠতে পারে আমজনতার। সেইসঙ্গে এই দুই দেশের সঙ্গে বাণিজ্য়িক ক্ষেত্রেও নিশ্চিতভাবে প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এখন দেখে নেওয়া যাক, এই যুদ্ধের কারণে মুল্যবৃদ্ধি ছাড়া আর কী কী সমস্যা ভারতের সামনে আসতে পারে।


ভোট শেষ হলেই বাড়বে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম
আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম বেড়েই চলেছে। কিন্তু এরপরও দেশে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বাড়েনি। কারণ, দেশের পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। গত ৪ নভেম্বরের পর থেকে দেশের পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বাড়েনি। কিন্তু ভোট শেষ হলে পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি কার্যত নিশ্চিত। 


অশোধিত তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে ভারতে কী প্রভাব পড়বে
অশোধিত তেলের দাম ১০ শতাংশ বাড়লে পাইকারি মূদ্রাস্ফীতি প্রায় ০.৯ শতাংশ বাড়বে। অশোধিত তেলের দাম যদি প্রতি ব্যারেলে ১০০ ডলারের বেশি থাকে, তাহলে ভারতে পাইকারি মুদ্রাস্ফীতির হার প্রায় ২-৩ শতাংশ বেড়ে যাবে। অশোধিত তেলের দাম প্রতি এক ডলার বৃদ্ধিতে দেশে ১০ হাজার কোটি টাকার বোঝা চাপবে। 


সানফ্লাওয়ার তেলের দাম বাড়বে


ইউক্রেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় সানফ্লাওয়ার উৎপাদনকারী দেশ। এ জন্য যুদ্ধের প্রভাব পড়বে সূর্যমুখী তেলের দামেও। ২০২০-২১ এ ভারত ইউক্রেন থেকে ১৪ লক্ষ টন সানফ্লাওয়ার তেল আমদানি করেছিল। এখন যুদ্ধ শুরু হওয়ায় সানফ্লাওয়াল তেলের দামও ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে। 


গাজিয়াবাদের ব্যবসায় পড়বে প্রভাব


রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের প্রভাব গাজিয়াবাদের ব্যবসাতেও পড়বে। এখানে এমন ৮০ থেকে ১০০ কারখানা রয়েছে, যেগুলি এই দেশগুলিতে রফতানি বা সেখান থেকে আমদানির কাজ করে। এই দুটি দেশে গাজিয়াবাদ থেকে কৃষিজাত সামগ্রী ও কাপড় যায়। অন্যদিকে, রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে ব্যবসায়িক পেট্রোলিয়াম পদার্থ ও রাসায়ণিক আমদানি হয়। কিন্তু যুদ্ধের কারণে এই আমদানি-রফতানি বন্ধ হয়ে যাবে। গাজিয়াবাদ ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েনের এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০০ কোটি টাকার লোকসানের খবর জানা গেছে। 


ভারত ও রাশিয়ার আমদানি-রফতানি


ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বস্ত্র, ফার্মা উৎপাদন, বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি, লোহা, ইস্পাত, রাসায়নিক, কফি, চাল রফতানি করে। গত বছর ভারত রাশিয়াতে ১৯, ৩৩৮ কোটি টাকার রফতানি করেছে। আমদানি করেছে ১৫,৮৬৫ কোটি টাকার। 


অর্থনীতিবিদরা কী বলছেন


অর্থনীতিবিদ শরদ কোহলি বলেছেন, এমএসএমই সেক্টরে ভারতের ৯৫ শতাংশের .বেশি ব্যবসা হয়। এই ক্ষেত্র যদি যুদ্ধের কারণে ব্যাঘাতপ্রাপ্ত হয়, সেইসঙ্গে ইনপুট কস্ট, ফুয়েল ইনফ্লেশনের কারণে জ্বালানির দাম বাড়ে তাহলে জিডিপি বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়বে। আর্থিক বৃদ্ধি কম হলে রাজস্বও কম হবে। এরফলে চাকরি ছাটাই হবে। ফলে সরাসরি সংকটের প্রভাব পড়বে কর্মসংস্থানের ওপর। অর্থাৎ, ভারতের পক্ষেও এই যুদ্ধ একেবারেই ভালো নয়। তাই যত দ্রুত যুদ্ধ থামবে, ততই মঙ্গল।