কলকাতা: টাকার দামে সর্বকালীন পতন ঘটেছে। লাগাতার ধস নেমেই চলেছে শেয়ার বাজারে। সেই আবহে ভারতের সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রা নিয়েও উদ্বেগ বাড়ল। কারণ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সাম্প্রতিকতম তথ্য বলছে, ভারতের রাজকোষে সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার পরিমাণ কমেছে অনেকটাই। আর সেই নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। (Indian Forex Reserve)

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য বলছে, ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারতের সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার পরিমাণ প্রায় ৫.৭ বিলিয়ন ডলার কমে গিয়েছে, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। র্তমানে ভারতের মোট সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার পরিমাণ প্রায় ৫৫ লক্ষ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে বিদেশি মুদ্রা সম্পদ কমেছে ৬.৪৪১ বিলিয়ন ডলার। ৬৪৪ কোটি ডলারের বিদেশি মুদ্রা সম্পদ রয়েছে, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫৬ লক্ষ কোটি। (Indian Economy)

সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার অর্থ কোনও দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্কের অধীনে থাকা সম্পদ, যার মাধ্যমে ব্যালান্স মেটানো থেকে মুদ্রার ওঠাপড়া নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারের আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা হয়। এর মধ্যে ব্যাঙ্কনোট, জমা থাকা অর্থ, সরকারি বন্ড, ট্রেজারি বিল, সোনা এবং SDR. বিদেশি মুদ্রা সম্পদের অর্থ, এমন সম্পদ যা বিদেশি মুদ্রায় মজুত সম্পদ। বিদেশি সম্পদ থেকে উদ্ভুত আয়ের হিসেব হয় বিদেশি মুদ্রাতেই।

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হিসেব অনুযায়ী, সোনার সঞ্চয় বেড়ে ৮২.৪ কোটি ডলার থেকে ৬৭০০ কোটি ডলার হয়েছে। SDR ৫.৮ কোটি ডলার থেকে কমে ১.৭ কোটি হয়েছে। আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারে ভারতের সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রা ও সম্পদের পরিমাণ ১.৮ কোটি ডলার থেকে কমে হয়েছে ৪০ লক্ষ ডলার।

সেই আবহেই শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে। টাকার দাম সর্বনিম্নে গিয়ে ঠেকেছে। এরই মধ্যে গত শুক্রবার বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতের বাজার থেকে প্রায় ২ হাজার ২৫৪ কোটি ৬৮ লক্ষ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। চলতি জানুয়ারি মাসে এখনও পর্যন্ত ভারতের বাজার থেকে ২২ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন SBI মিউচুয়াল ফান্ডের প্রাক্তন ইকুইটি হেড সন্দীপ সভরওয়াল। RBI-এর প্রাক্তন গভর্নর শক্তিকান্ত দাসকে কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, 'ভারতের সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার পরিমাণ গত ১০ মাসে সর্বনিম্নে গিয়ে ঠেকেছে। কমে গিয়েছে ৭০ বিলিয়ন ডলার। পূর্বতন RBI গভর্নর নির্বোধের মতো টাকার দাম স্থির রেখেছিলেন। বাকি সব মুদ্রার চেয়ে আমেরিকার ডলার যখন লাগাতার উঠছিল, সেই সময় স্পট অ্যান্ড ফরোয়ার্ড ডলার বিক্রি করে বিপুল সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রা নষ্ট করেছেন। বৃদ্ধিও বাড়িয়ে দেখিয়েছিলেন। স্বৈরাচারী নীতিতে কাজ করছিলেন, আজ যার মূল্য চোকাতে হচ্ছে দেশকে'।