নয়াদিল্লি: টাকার দামে সর্বকালীন পতন। ডলারের নিরিখে টাকার দাম হল ৮৬.২০ টাকা। শনিবার সকালে ডলার প্রতি টাকার দরে ৩৭ পয়সা পতন ঘটে। এই প্রথম এত তলানিতে গিয়ে ঠেকল ভারতীয় মুদ্রা। এই নিয়ে টানা ১০ সপ্তাহ ধরে টাকার পতন অব্যাহত রইল। এমন পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সঙ্কটের আশঙ্কা আরও জোরাল হচ্ছে। উদ্বেগ ধরা পড়ছে ব্যবসায়ী মহলেও। (Indian Rupee Falls)
১০ জানুয়ারি বাজার বন্ধ হওয়ার সময়ই টাকার দরে সর্বকালীন পতন দেখা যায়। আজ সকালে তা আরও নীচে নেমে যায়। পাশাপাশি, শেয়ার বাজারের পতনও অব্যাহত। এমন চললে শীঘ্রই ডলার প্রতি টাকার দাম ৯০ থেকে ৯৫-এ নেমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। পরিসংখ্যান তুলে ধরে এই সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে Gavekal Research. (Rupee vs Dollar)
বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই লাগাতার টাকার দামে পতন চোখে পড়ছে। পতনের নিরিখে তৈরি হয়েছে একের পর এক রেকর্ড। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নবনিযুক্ত গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তিনি ডলারের সামনে ভারতীয় মুদ্রাকে ঠিক জায়গায় ধরে রাখতে পারছেন না বলে উঠছে অভিযোগ।
আমেরিকার ডলার যেখানে লাগাতার শক্তিবৃদ্ধি করছে, সেখানে টাকার দামের এই পতনে অশনি সঙ্কেত দেখছেন অনেকেই। ভারতীয় বাজার থেকে বিদেশি বিনিয়োগ যেভাবে বেরিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়েও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত ৯ জানুয়ারির হিসেব অনুযায়ী, ভারতের বাজার থেকে ৭১৭০.৮০ কোটি বিদেশই বিনিয়োগ বেরিয়ে গিয়েছে।
CR Forex-এর এমডি অমিত পবারির মতে, ভারতের বাজার থেকে ৪২০ কোটি ডলার বেরিয়ে গিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামও বাড়ছে ক্রমশ। আবার আমেরিকার নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে অনিশ্চয়তার দরুণও বাজার টালমাটাল বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। জানুয়ারি মাসে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডোমেস্টিক লিকুইডিটি ডেফিসিট গড়ে ৮৭, ৯৮৫ কোটিতে এসে ঠেকেছে। তাই রিজার্ভ ব্যাঙ্কও কিছু করতে পারছে না বলে মনে করা হচ্ছে।
লাগাতার টাকার দামে এই পতন নিয়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে কটাক্ষ করেছে কংগ্রেস। মোদির নির্বাচনী স্লোগানকে বিদ্রুপ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা লেখে, 'অগলি বার ৮৬ পার'। টাকা ডুবে যাচ্ছে এমন ছবিও পোস্ট করে সোশ্যাল মিডিয়ায়।