Online Gaming App: যা চকচক করে তাই সোনা নয় ! এই প্রাচীন প্রবাদ বাক্য আজও যেন সত্য। কারণ অনেকসময়েই আমরা চকচক করতে দেখে গভীর ফাঁদে ফেঁসে যাই। দূর থেকে তাকেই প্রলোভনের উৎস বলে মনে হয়েছিল, আর তারপরে বোঝা যায় তা আসলে প্রতারণা। অনলাইন গেমিং অনেকটা এমনই হয়ে উঠেছে যেন দিন দিন। গেমিংয়ের (Online Gaming) নেশায় আসক্ত হয়ে ফাঁদে পড়েন এক মুম্বইয়ের ব্যবসায়ী। ধীরে ধীরে মোট ১২ কোটি টাকা খোয়ান তিনি। ২০২০ সালে কোভিড মহামারী চলার সময় বহু অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বিজ্ঞাপন দেখে একটি গেমিং অ্যাপ (Online Gaming Scam) সম্পর্কে জানতে পারেন তিনি আর সেই সময় হাতে অবসর সময় থাকার ফলে সেই অ্যাপে তিনি গেম খেলতে শুরু করেন। অ্যাপের নাম ‘পারিম্যাচ’। ধীরে ধীরে গেমিংয়ের নেশা ধরে যায় তাঁর।

৪ বছরে খোয়ান ১২ কোটি টাকা

কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবস্থাও বদলাতে শুরু করে। প্রথমদিকে গেম খেলে বেশ কিছু ম্যাচে জিতেছিলেন তিনি, কিন্তু পরে আর জেতেন না। পরপর হারতে শুরু করেন সেই ব্যবসায়ী। আর প্রতিটি হারের কারণে প্রচুর টাকা লোকসান হয় তাঁর। টাকা বাজি রেখেই গেমটি খেলতে হত। দেখা যায় ৪ বছরে ১২ কোটি টাকা খুইয়েছেন সেই ব্যবসায়ী। এমনিতেই আর্থিক টানাপোড়েন চলছিল সেই সময়, আর তারপরে তাঁর বাবা-মায়ের এক বছরের মধ্যেই পরপর হার্ট অ্যাটাক হওয়ায় অবস্থা সামলাতে না পেরে চরম ডিপ্রেশনে চলে যান সেই ব্যক্তি।

অ্যাপ অপারেটরা ভারতীয় নন

এক মনোবিদ জানিয়েছেন যে এই গেমের নেশা মানুষকে ধ্বংস করে দেয়, একবার এ থেকে বেরিয়ে এলেও পরক্ষণেই আবার তাঁকে আসক্ত করে ফেলতে পারে এই গেমিং। কয়েক বছর লেগে যায় সেই ব্যবসায়ীর এটা বুঝতে যে তিনিও ডিজিটাল অ্যারেস্টের মত অবস্থার শিকার। ২০২৪ সালে তিনি অবস্থা বুঝে সেই অ্যাপ অপারেটরের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন এবং দেখা যায় সেই অ্যাপ অপারেটরের কোনও ভারতীয় অস্তিত্ব বা পরিচয় প্রমাণই নেই। সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে এই অ্যাপ চালানো হচ্ছে।

সেই ব্যবসায়ী জানিয়েছেন যে প্রথমদিকে তিনি লক্ষ লক্ষ টাকা জিতেছিলেন গেম খেলে, কিন্তু যখন সেই টাকা তিনি তুলতে চেষ্টা করেন, অ্যাপ টাকা তোলার আবেদন খারিজ করে দেয়। তাঁকে বলা হয় কেওয়াইসির সমস্যার জন্য এমনটা হচ্ছে। আর এই টাকা নাকি কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁর অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। ইতিমধ্যে তাঁকে টাকা জমা করে আরও গেম খেলার জন্য প্ররোচনা দেওয়া হয়। তিনি ২৫ লক্ষ টাকা ডিপোজিট করেছিলেন আর সেই টাকার হদিশ জানার জন্য এই প্রতারণার পুরো ফাঁদ তাঁর সামনে উঠে আসে।